Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

মনোরঞ্জন হাজংয়ের জন্য ন্যায়বিচার দাবি

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ২০ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০১ এএম

২ ডিসেম্বর গভীর রাতে সিগনালে থেমে থাকা একটি মোটরসাইকেলকে প্রচন্ড বেগে ধাক্কা দেয় বেপরোয়া গতিতে আসা একটি বিএমডাব্লিউ গাড়ি। গাড়িতে বসেছিলেন এক বিছারপতির ছেলে। মোটরসাইকেলের ব্যাক্তিটি ছিলেন বিজিবির সাবেক এক কর্মকর্তা মনোরঞ্জন হাজং।

বীভৎস এই দুর্ঘটনায় দুই ধাপে অপারেশন করে হাজংয়ের একটি পায়ের হাঁটু পর্যন্ত কেটে ফেলা হয়। এখন সেটা উরু পর্যন্ত কেটে ফেলতে হবে, কিন্তু সেটা করা যায়নি কারণ তৃতীয় অপারেশনের আগের দিন তার হার্টঅ্যাটাক হয়। বলা যায় তার জীবন সংকটের মুখোমুখি।

এ ঘটনায় ওই বিছারপ্রতির ছেলেকে আসামী করে একটি মামলা করে হাজংয়ের মেয়ে ট্রাফিক সার্জেন্ট মহুয়া হাজং। শুরুর দিকে পুলিশ মামলা নিতে না চাইলেও শেষ পর্যন্ত আলোচনা-সমালোচনার মুখে পড়ে মামলা নিতে বাধ্য হয় পুলিশ। পরবর্তিতে অপরাধীকে গ্রেফতার করে আবার ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ এনে মনোরঞ্জনের জন্য ন্যায়বিচারের দাবীতে শাহবাগে নিপীড়নের বিরুদ্ধে সমাবেশ ব্যানারে এক মানববন্ধন করা হয়।

গতকাল রোববার শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে অনুষ্ঠিত হওয়া এ মানববন্ধনে উপস্থিত হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর রুবাইয়াত ফেরদৌস বলেন, একজন ভিখারির জন্য যে আইন বিচারপতির ছেলের জন্যও সে একই আইন। কিন্তু স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরেও দেশটা সবার হতে পারেনি। মেয়ে ট্রাফিক সার্জেন্ট আর বাবা বিজিবির সাবেক সদস্য। যারা সদা দেশের কল্যানে নিয়োজিত। মনোরঞ্জনকে আহত করা হয়েছে অথচ সেই অপরাধীদের মামলা নিতে পুলিশ ভয় পায়। তিনি বলেন, ভুক্তভোগীরা দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বলেই কি তাদের প্রতি এত অবহেলা? স্বাধীন বাংলদেশে আমাদের তো এরকম বৈষম্য থাকার কথা ছিলো না।

দেশের আইন সবার জন্য সমান। এরই ধারাবাহিকতায় অপরাধীদের অবিলম্বে বিচারের আওতায় এনে যথাযত শাস্তি প্রদান করা হোক। যেন সকলে দেখে যে, দেশের আইন বৈষম্যহীন বিচার প্রদান করে।

লেখক ও প্রকাশক রবিন হোসেন বলেন, মনোরঞ্জন হাজং-কে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিলো। পুলিশ কোনোরকম তদন্ত ছাড়া অপরাধীদেরকে ছেড়ে দেয়। মনোরঞ্জনের মেয়ে মহুয়া হাজং পুলিশের কাছে মামলা করতে গেলে পনেরো দিন পর সে মামলা নেওয়া হয়। তাও তাতে কারো নাম প্রকাশ করতে দেওয়া হয়নাই। অজ্ঞাতনামে নেয়া হয় মামলা। আবার মামলা নেয়ার দুইদিন আগে মনোরঞ্জন হাজংয়ের উপর দোষ চাপিয়ে জেনারেল ডায়েরি (জিডি) করেন অভিযুক্ত বিচারপতির ছেলে সাঈদ হাসান। সুতরাং এখানে বুঝায় যাচ্ছে জোর যার মল্লুক তার। দেশের প্রভাবশালীরাই বিচার পাবে অথচ নিপীড়িতরা হাসপাতালের বিছানায় পঙ্গু হয়ে থাকবে তা কখনও হতে পারে না। আমরা যতদিন পর্যন্ত মহুয়ার বাবার ন্যায়বিচার পাচ্ছি না ততদিন রাজপথ ছারব না।

মানবাধিকার কর্মী দীপায়ন খিসা বলেন, ক্ষমতার কাঠামোতে সমস্যা থাকার কারণে আজকে আমাদেরকে এত নির্যাতনের মধ্য দিয়ে জীবন পার করতে হচ্ছে। আমরা প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বিধায় আমাদেরকে বিচারের ক্ষেত্রে পিছিয়ে রাখা হয়।
এছাড়াও সমাবেশে আরও অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। তাদের বক্তব্যের মাধ্যমে মনোরঞ্জন হাজংয়ের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণের জোর দাবী জানানো হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মনোরঞ্জন হাজং
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ