বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক বরিশাল অঞ্চলে চলতি অর্থ বছরে ১ হাজার ৩১৪ কোটি টাকার শষ্যঋন সহ বিভিন্ন ধরনের ঋন বিতরন কর্মসূচীর বিপরিতে প্রথম ৫ মাসেই প্রায় ৪৭০ কোটি টাকা বিতরন সম্পন্ন করেছে। যা মূল লক্ষমাত্রার ৩৬%। করোনা মহামারীর প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউ-এর মধ্যেও সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের গ্রামীন অর্থনীতি সহ কৃষি অর্থনীতিকে সচল রেখেছে রাষ্ট্রীয় এ আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি। এমনকি আগের অর্থ বছরের লোকাশান কাটিয়ে গত অর্থ বছরে বরিশাল অঞ্চলে কৃষি ব্যাংক ১০.১৪ কোটি টাকা নীট মুনফা অর্জনে সক্ষম হয়েছে বলে জানা গেছে। পাশাপাশি এ অঞ্চলের ১২৯টি শাখার মধ্যে এখন লাভজনক শাখার সংখ্যা ৭২’এ উন্নীত হয়েছে। যা আগের বছর ছিল ৫৭। রাষ্ট্রীয় বিশেষায়িত এ বানিজ্যিক ব্যাংকটি ‘মুজিব শতবর্ষ’ উপলক্ষে নিজস্ব তহবিল ছাড়াও করোনা মহামারীতে সরকারী প্রনোদনা প্যাকেজের আওতায় সবগুলো ঋন বিতরন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে।
দক্ষিণাঞ্চলের ৪২টি উপজেলার ১২৯টি শাখার মাধ্যমে প্রায় ৪ লাখ ৬৯ হাজার কৃষক সহ সাধারন ঋন গ্রহিতাকে সরকার নির্ধারিত সুদে ঋন প্রদানের লক্ষ্যে কাজ করছে কৃষি ব্যাংক। দক্ষিণাঞ্চলে রাষ্ট্রীয় এ ব্যাংকটির ১০৯টি পল্লী শাখা ও ২০টি আরবান শাখার মধ্যে ইতোমধ্যে প্রায় ৭৫টি অনলাইনে সংযুক্ত হয়েছে। চলতি অর্থ বছরে প্রথম ৫ মাসেই ব্যাংকটি বরিশাল অঞ্চলে ৪ লাখ ৫৭ হাজার মানুষকে ঋন প্রদান করছে।
ব্যাপক জনবল সংকটের মধ্যেও কৃষি ব্যাংক বরিশাল অঞ্চলে চলতি অর্থ বছরে ১ হাজার ৩১৪ কোটি টাকা নতুন ঋন বিতরনের পাশাপাশি ৮৩৬ কোটি টাকা বকেয়া ঋন আদায়ের লক্ষ্যে কাজ করছে। যার মধ্যে অর্থ বছরের প্রথম ৫ মাসেই ৩৭৬ কোটি টাকারও বেশী আদায় হয়েছে। যা মূল লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৪৫%।
কৃষিখাতে গত অর্থ বছরে দেশে ৪% সুদে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রনোদনা প্যকেজের আওতায় ব্যাংকটি বরিশাল অঞ্চলে ১৪৯ কোটি টাকা ঋন বিতরন লক্ষ্য অর্জনের পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও মাঝারী শিল্পখাতে দেশে ২০ হাজার কোটি টাকার প্রনোদনা প্যাকেজে বরিশাল অঞ্চলে ১১ কোটি টাকার মধ্যে ১০.৮৭ কোটি টাকা ঋন বিতরনে সক্ষম হয়। পাশাপাশি চলতি অর্থ বছরে দেশে অনুরূপ ৩ হাজার কোটি টাকার প্রনোদনা প্যাকেজের আওতায় বরিশাল অঞ্চলে ১১৫ কোটি টাকার মধ্যে প্রথম ৫ মাসে প্রায় ২০ কোটি টাকা বিতরন সম্ভব হয়েছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারী শিল্পখাতে চলতি অর্থ বছরেও এ অঞ্চলে ৬ কোটি টাকার ঋন বিতরন লক্ষ্যমাত্রার বিপরিতে ৫ মাসেই ৫.১২ কোটি টাকা বিতরন সম্পন্ন করেছে ব্যাংকটি। এছাড়া ‘মুজিব শতবর্ষ’ উপলক্ষে কৃষি ব্যাংক তার নিজস্ব তহবিল থেকে ৭% সুদে দেশব্যাপী যে ৩শ কোটি টাকার বিভিন্ন ধরনের ঋন বিতরনের কর্মসূচী গ্রহন করেছিল গত অর্থ বছরে, তার পুরোটাই বিতরন সম্ভব হয়। এছাড়া চলতি অর্থ বছরে ব্যাংকটি দক্ষিণাঞ্চলে মসলা জাতীয় ফসল উৎপাদনে ৩ কোটি ২৬ লাখ টাকা ঋন বিতরন কর্মসূচীর মধ্যে প্রথম ৫ মাসেই ৫৯% বিতরন করেছে। গত বছর একই সময়ে এখাতে ২৫ লাখ টাকা ঋন বিতরন করা হয়।
চলতি অর্থ বছরে বরিশাল অঞ্চলে ব্যাংকটির ২ হাজার ৩১৫ কোটি টাকার আমানত স্থিতি লক্ষ্যমাত্রার বিপরিতে বর্তমানে স্থিতি প্রায় ২ হাজার ৩০ কোটি টাকা। যা গত বছর একই সময়ের চেয়ে প্রায় ২৯৬ কোটি টাকা বেশী। চলতি অর্থ বছরে বরিশাল অঞ্চলে ৬২ হাজার ২শটি নতুন চলতি ও সঞ্চয়ী হিসাব খোলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরিতে প্রথম ৫ মাসে প্রায় ৭ হাজার নতুন হিসেব খোলা হয়েছে।
তবে ব্যাংকটির বরিশাল অঞ্চলের ১২৯টি শাখায় বর্তমানে অনাদায়ী ঋনের পরিমান ২ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার মত। যা আদায়ে সার্বক্ষনিকভাবে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়ে ব্যাংকটির বরিশাল বিভাগীয় জিএম সালাহ উদ্দীন রজিব জানান, কৃষি ঋন সহ সব ধরনের শষ্যঋন প্রদান ও আদায় একটি চলমান প্রক্রিয়া। কৃষি অর্থনীতিকে সচল রাখতে আমরা সরাসরি কৃষককে ঋন দিচ্ছি। যার কিছু বকেয়া পারলেও আদায়ও হচ্ছে, আবার ঋনও প্রদান করা হচ্ছে। এটা চলমান প্রক্রিয়া বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুসরন করেই আমরা কৃষকদের ঋন দিয়ে থাকি।
অনাদায়ী ঋনের বড় অংশই এখনো দ্বীপজেলা ভোলাতে। মেঘনা ও তেতুলিয়া বেষ্টিত এ জেলায় নদীর ভাঙনে হাজার হাজার কৃষক সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ বাস্তুুচ্যুত হয়ে পড়ায় তাদের অনেকেরই খুজে পাওযঅ দুস্কর। যাদের অস্তিত্ব বর্তমান রয়েছে, তারাও কৃষিজমি সহ ঘরবাড়ি নদী গর্ভে হারিয়ে ইতোমধ্যে উদ্বাস্তুতে পরিনত হয়েছেন। ফলে বাস্তুচ্যুত নিত্য অভাবী ঐসব মানুষের কাছ থেকে বকেয়া ঋন আদায় দুরুহ হয়ে পড়েছে। তবে দেশের অন্যতম বৃহত এ আর্থিক প্রতিষ্ঠানটিতে দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলার ৪২টি উপজেলার ১২৯টি শাখা সহ বিভাগীয় ও আঞ্চলিক অফিসগুলোর জন্য ১ হাজার ৬৬১ জনের মঞ্জুরিকৃত জনবলের মধ্যে বর্তমান কর্মরত আছেন মাত্র ৮৮০ জনের মত। যা ব্যাংকটির কার্যক্রমকে কিছুটা ব্যাহত করলেও সমস্যার বিষয়টি সদর দপ্তর অবগত আছে বলে জানান জেনারেল ম্যানেজার সালাহ উদ্দীন রজিব। পরিস্থিতি উত্তরনে পদক্ষেপও গ্রহন করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।