পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে : প্রেসিডেন্ট
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে দেশের মানুষকে শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের আদর্শে উন্নত, সমৃদ্ধ ও অসা¤প্রদায়িক চেতনার সোনার বাংলা গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়। গতকাল জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজা থেকে তিনি এ শপথ পড়ান। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে ‘মহাবিজয়ের মহানায়ক’ শিরোনামে গতকাল ও আজ জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আয়োজনের প্রথম দিন ১৬ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী সবাইকে শপথ বাক্য পাঠ করান। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।
সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের শপথ : ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে এক রক্তক্ষয়ী মুক্তি-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। বিশ্বের বুকে বাঙালি জাতি প্রতিষ্ঠা করেছে তার স্বতন্ত্র জাতিসত্তা। আজ বিজয় দিবসে দৃপ্তকণ্ঠে শপথ করছি যে, শহীদের রক্ত বৃথা যেতে দেবো না, দেশকে ভালোবাসব, দেশের মানুষের সার্বিক কল্যাণে সর্বশক্তি নিয়োগ করব। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের আদর্শে উন্নত, সমৃদ্ধ ও অসা¤প্রদায়িক চেতনার সোনার বাংলা গড়ে তুলব। মহান সৃষ্টিকর্তা আমাদের সহায় হোন।’ এ সময় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার বিশেষ অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ, বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা উপস্থিত ছিলেন। ভারতের প্রেসিডেন্ট রাম নাথ কোবিন্দ শপথের পর সন্ধ্যায় অনুষ্ঠানে পৌঁছান।
যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে : প্রেসিডেন্ট
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীতে ‘মহাবিজয়ের মহানায়ক’ প্রতিপাদ্যে অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ বলেন, স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে হলে স্বাধীনতার সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সবাইকে সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় প্রতিটি কাজে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। সবক্ষেত্রে নীতি-নৈতিকতা ও আদর্শ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, স্বাধীনতা আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জন। কিন্তু এই স্বাধীনতা হঠাৎ করেই আসেনি। এর পেছনে রয়েছে শোষণ, নির্যাতন ও বঞ্চনার দীর্ঘ হতিহাস। হাজার বছরেরও বেশি সময় শোষণ-বঞ্চনা, নির্যাতন-নিপীড়নের দুঃসহ পথ অতিক্রম করলেও বাংলা ভাষাভাষী এ জনপদের মানুষের কোনো স্বাধীন সার্বভৌম জাতিরাষ্ট্র ছিল না।
তিনি আরো বলেন, দীর্ঘ নয় মাসের লড়াই শেষে ১৯৭১ সালের এই দিনে বাঙালি জাতি ছিনিয়ে আনে মহাবিজয়। আর এ বিজয়ের পেছনে যে ব্যক্তিটি সার্বক্ষণিক নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনা দিয়েছেন তিনি আমাদের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
বিজয়ের ৫০ : কুচকাওয়াজে প্রেসিডেন্ট, শেখ হাসিনার সঙ্গী কোবিন্দ : বাঙালির বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তিতে জাতীয় প্যারেড ময়দানে কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ করেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ। বাঙালির এ উদযাপনে সঙ্গী হয়েছেন বন্ধু দেশ ভারতের প্রেসিডেন্ট রাম নাথ কোবিন্দ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্যারেড ময়দানে। শেরেবাংলা নগরে জাতীয় প্যারেড ময়দানে বর্ণাঢ্য এই কুচকাওয়াজে মুক্তিযোদ্ধা কন্টিনজেন্ট, সশস্ত্র বাহিনী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন শাখা ও সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অগ্রগতির তথ্য জানানো হয় অতিথিদের। এবারই প্রথম বন্ধু দেশ ভারত, ভুটান, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও মেক্সিকোর সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশের বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজে।
সকাল সাড়ে ১০টায় প্রেসিডেন্ট প্যারেড স্কয়ারে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং তিন বাহিনীর প্রধানরা তাকে স্বাগত জানান। প্রেসিডেন্ট পৌঁছানোর কিছু পর প্যারেড স্কয়ারে আসেন ভারতের প্রেসিডেন্ট কোবিন্দ। প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে স্বাগত জানান।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সেনাবাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশনের আয়োজনে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী, বিএনসিসি, বিজিবি, পুলিশ, র্যাব, আনসার ও ভিডিপি, কোস্টগার্ড এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা সুসজ্জিতভাবে এই কুচকাওয়াজে অংশ নেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা, স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সচিব, সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তা, বিদেশি রাষ্ট্রদূত ও বিভিন্ন মিশনের প্রধান এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ভারতের প্রেসিডেন্টর স্ত্রী সবিতা কোবিন্দ, প্রেসিডেন্টর স্ত্রী রাশিদা খানমও কুচকাওয়াজ উপভোগ করেন।
বর্ণাঢ্য এই আয়োজনে অভিবাদন মঞ্চের সামনেই রাখা ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশাল একটি প্রতিকৃতি। দুই পাশে ছিল প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির দুই পাশে জাতীয় চার নেতা এবং মুক্তিযুদ্ধের সাত বীরশ্রেষ্ঠর ছবিও ছিল। এক পাশে কালো জমিনে সোনালি হরফে ১৯৭১ এবং অন্য পাশে ২০২১ লিখে বোঝানো হয়েছে ৫০ বছরের ব্যাপ্তি। কুচকাওয়াজের শুরুতে বঙ্গবন্ধুর একটি বিশাল প্রতিকৃতি প্রদর্শন করা হয়। পরে সাত বীরশ্রেষ্ঠর আবক্ষ মূর্তি স্যালুটিং ডায়াসের সামনে দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। নীল রঙের স্যুট ও সাদা শার্ট পরে প্রেসিডেন্ট খোলা জিপে চড়ে কুচাকাওয়াজ পরিদর্শন করেন এবং পরে অভিবাদন মঞ্চে দাঁড়িয়ে সালাম গ্রহণ করেন।
নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মোহাম্মদ শাহীনুল হক ছিলেন এবারের কুচকাওয়াজের অধিনায়ক। সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কয়েক হাজার মানুষ দুই ঘণ্টাব্যাপী মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ উপভোগ করেন। বাংলাদেশ টেলিভিশন প্যারেড ময়দান থেকে এ অনুষ্ঠান সরাসরি স¤প্রচার করে।
কুচকাওয়াজে আর্মি, নেভাল এভিয়েশন ও র্যাব ফ্লাই পাস্ট করে প্রেসিডেন্টকে সালাম জানায়। বাংলাদেশ সেনা বাহিনী, নৌ ও বিমান বাহিনীতে নতুন সংযোজিত বিভিন্ন যুদ্ধাস্ত্র ও সরঞ্জাম প্রদর্শিত হয়। বিমান বাহিনীর কে-৮ ডবিøইউ, ও মিগ-২৯বি যুদ্ধবিমানের অ্যারোবেটিক ডিসপ্লে দর্শকদের মুগ্ধ করে। প্রদর্শিত হয় যুদ্ধকালীন বিভিন্ন মেনুভার। বিমান বাহিনীর অংশগ্রহণে প্রেসিডেন্টকে ‘ফ্লাইং স্যালুট’ দেয় যুদ্ধবিমান মিগ-২৯। যুদ্ধবিমানগুলো বর্ণিল ধোঁয়া উড়িয়ে প্রেসিডেন্টকে অভিবাদন জানায়। সব শেষে লেফটেন্যান্ট কর্নেল বেনজীর আহমেদের নেতৃত্বে কয়েকশ’ সদস্যের সম্মিলিত বাদক দল প্রেসিডেন্টকে অভিবাদন জানায়। এবারের কুচকাওয়াজে জাতিসংঘ দলের একটি কন্টিনজেন্ট অংশ নেয়।
জাতির পিতার প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিজয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী এবং ৫১তম বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সম্মুখস্থ জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে এই শ্রদ্ধা জানান। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। পরে তার দলের সিনিয়র নেতাদের নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলীয় প্রধান হিসেবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আরেকটি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে ও প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান ও এ এইচ এম খায়রুজ্জমান লিটন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, ড. হাছান মাহমুদ ও আ ফ ম বাহা উদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম ও আফজাল হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। এর পর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগসহ আওয়ামী লীগের অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
ডাকটিকিট ও পর্যটন লোগো অবমুক্ত : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বিজয় দিবস ও দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণ দিবস উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেছেন। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ পর্যটনের ব্র্যান্ড নেম ‘মুজিবের বাংলাদেশ’ লোগো এবং বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং এক বিবৃতিতে জানায়, প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব মো. খলিলুর রহমান, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, বাংলাদেশ পোস্ট অফিসের মহাপরিচালক মো. সিরাজ উদ্দিন ও বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাবেদ আহমেদ অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।
যুদ্ধাহত ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ফল, মিষ্টি উপহার : বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যদের ফলমূল ও মিষ্টান্ন পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাজধানীর মোহাম্মদপুরে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পুনর্বাসন কেন্দ্রে তাদের কাছে এসব শুভেচ্ছা উপহার পৌঁছে দেন প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-২ গাজী হাফিজুর রহমান লিকু ও উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার। রাষ্ট্রীয় দিবস ও উৎসবের দিনে তাদের স্মরণ করায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনাও করেন তারা।
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে কোরআনখানি ও দোয়া মাহফিল : মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে গতকাল বাদ যোহর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পবিত্র কোরআনখানি, দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী এনামুল হাসান এনডিসি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে সবার আগে দেশের সাধারণ মানুষকে ভালোবাসতে হবে। দেশকে আর দেশের মানুষকে ভালোবাসলেই বিজয়ের মূল লক্ষ্য অর্জিত হবে। অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নরসের গভর্নর ড. মাওলানা মুহাম্মদ কাফিলুদ্দীন সরকার সালেহী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ড. মো. মুশফিকুর রহমান। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমান।
খেলাফত মজলিস : খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেছেন, জনগণের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার নিশ্চিতের মাধ্যমে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে সুসংহত করতে হবে। বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে গতকাল খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বিজয়নগরস্থ মজলিস মিলনায়তনে সংগঠনের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহসভাপতি জিল্লুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক তাওহীদুল ইসলাম তুহিনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মো. আবদুল জলিল, ইসলামী ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ মনির হোসাইন, মাওলানা আব্দুল হক আমিনী, অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম। আলোচনা শেষে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় উলামাবিষয়ক সম্পাদক মুফতি ওযায়ের আমিন।
জমিয়াতুল মোদার্রেছীন বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা : বিজয় দিবস পালন উপলক্ষে গতকাল দক্ষিণবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি বিদ্যাপীঠ ভাঙ্গাস্থ ইকামাতেদ্বীন মডেল কামিল মাদাসা মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। পবিত্র কোরআন তেলওয়াতের মাধ্যমে দিনব্যাপী মহান বিজয়ের সকল কার্যক্রম শুরু হয়। উক্ত আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জমিয়াতুল মোদার্রেছীন বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা দক্ষিণ অঞ্চলের সভাপতি ও মাদরাসার প্রিন্সিপাল মো. আবু ইউছুফ মৃধা। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাদরাসার গভর্নিং বডির সভাপতি মো. আসাদুজ্জামান। এতে আরো বক্তব্য রাখেন কাউলীবেড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রেজাউল হাসনাত দুদু মিয়া, আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আহসান উল্লাহ উজ্জ্বল কাজী, অধ্যাপক মো. কামাল হোসেন ও মো. ফারুক হোসেন। মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধের ওপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, কুচকাওয়াজ প্রদর্শনী, ডিসপ্লে প্রদর্শনী, রচনা লিখন ও কবিতা আবৃতি, বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে বিকেলে দেশব্যাপী একযোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শপথ বাক্য পাঠ অনুষ্ঠানে মাদরাসার সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মচারী শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে কাজ করে যাচ্ছে। তারা মাদরাসা বিভাগে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের অবদানের জন্য বর্তমান সরকারের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ : ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেছেন, স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫০ বছর পরও স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণ হয়নি। শোষণ, বঞ্চনা ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ হলেও এখন সর্বক্ষেত্রে চরম বৈষম্য চলছে, যা পাক হানাদার বাহিনীকেও হার মানিয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে পুরানা পল্টনস্থ আইএবি মিলনায়তনে ইসলামী যুব আন্দোলন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এতে আরো বক্তব্য রাখেন, প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ুম, ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল আতিকুর রহমান মুজাহিদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মুহাম্মাদ শফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মাদ আল-আমিন সোহাগ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুফতি শওকত ওসমান।
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন : বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তারা দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, স্বাধীনতা আল্লাহর এক মহান নিয়ামত। একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে বসবাস করতে পেরে আমরা আনন্দিত ও গর্বিত। গতকাল বিকেলে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর মাদরাসায় এক আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। আলোচনা শেষে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের রূহের মাগফিরাত ও দেশবাসীর সার্বিক কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী। বক্তব্য রাখেন দলের মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজি, সহকারী মহাসচিব মাওলানা সানাউল্লাহ হাফেজ্জী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা সুলতান মহিউদ্দিন, মাওলানা সাইফুল ইসলাম সুনামগঞ্জী, মাওলানা সাজেদুর রহমান ফয়েজী।
মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে বিজয় দিবস পালিত : যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপন করেছে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন। গতকাল কোরআন তেলাওয়াত ও জাতীয় সঙ্গীতের সুরে সুরে পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পতাকা উত্তোলন, বীর শহীদদের রূহের মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মালয়েশিয়া থেকে প্রবাসী সাংবাদিক এম এ আবির এ তথ্য জানিয়েছেন। হাইকমিশনার মো. গোলাম সারওয়ারের সভাপতিত্বে ও দূতালয় প্রধান রুহুল আমিনের সঞ্চালনায় সভায় প্রেসিডেন্টের বাণী পাঠ করেন কাউন্সিলর শ্রম মো. জহিরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন কাউন্সিলর শ্রম-২-এর মো. হেদায়েতুল ইসলাম মন্ডল। এছাড়া আলোচনা সভায় মুক্তিযুদ্ধের প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্ত উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শপথ বাক্য পাঠ অনুষ্ঠানে নগরীর এম এম আজিজ স্টেডিয়ামে সমবেত হন হাজারো মানুষ। এতে বীর মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, পেশাজীবী, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সদস্য, নারী, কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র-ছাত্রীসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষ নির্ধারিত আসনে নির্ধারিত টি-শার্ট, ক্যাপ, জাতীয় পতাকা ও মাস্ক পরিধান করে শপথ নেন। এসময় বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
সিলেট ব্যুরো জানায়, বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সারাদেশের মানুষকে শপথ পাঠ করিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের জেলা ও উপজেলা স্টেডিয়াম ও বিজয় দিবসের নির্ধারিত ভেন্যু থেকে সাধারণ মানুষ জাতীয় পতাকা হাতে প্রধানমন্ত্রীর সাথে শপথ বাক্য পাঠ করেন। এর অংশ হিসেবে নির্ধারিত সময়ের আগেই সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হন। সবার লক্ষ একটাই ছিল বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তিতে প্রধানমন্ত্রীর শপথ পাঠে শরিক হয়ে ইতিহাসের অংশ হওয়া। সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে অংশ নেয়া হাজারো মানুষের কণ্ঠে জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু শ্লোগান ও বুকে অগাধ দেশপ্রেম। যেনো এক অন্যরকম আবেগ আপ্লুত মুহূর্ত। প্রধানমন্ত্রীর শপথ অনুষ্ঠান শুরু হয় বিকেল সাড়ে চারটায়। প্রথমেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শপথ পাঠের জন্য বক্তব্য শুরু করেন। সাথে সাথে পুরো স্টেডিয়াম নিরবতায় ছেয়ে যায়। সবার দৃষ্টি ডিজিটাল স্কিনে। সিলেটের স্কুল কলেজসহ সরকারি আধাসরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, সাধারণ মানুষ সবাই নিরবে শোনেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য। বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে দেশের মানুষকে শপথবাক্য পাঠ করান প্রধানমন্ত্রী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।