Inqilab Logo

শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

প্রতারণার মামলায় জামিন নিতে চতুর্থ শ্রেণী ছাত্র চয়ন আদালতে

পটুয়াখালী জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৫ ডিসেম্বর, ২০২১, ৪:০৪ পিএম

পটুয়াখালীতে প্রতারণা এবং বিশ্বাস ভঙ্গের একটি মামলার আসামী ৮ বছর বয়সী চয়নকেও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে আসামী করা হয়েছে। আর এতে চয়নের বয়স দেখানো হয়েছে ২২ বছর। এদিকে, বুধবার চয়ন পটুয়াখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটট আদালতে জামিনের আবেদন করলে সংশ্লিষ্ট আদালত আবেদনটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে পাঠায়। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের বিচারক তাৎক্ষনিক ভাবে শিশু চয়ন এবং তার ১৭ বছর বয়সী বোন তৃপ্তিকে জামিন প্রদান করেন। এ ঘটনায় আদালত পাড়ায় চাঞ্চল্যর সৃষ্টি হয়।

জেলার কলাপাড়া উপজেলার তুলাতলি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেনীর ছাত্র আব্দুল্লাহ আল ইসলাম চয়ন। সহপাঠীরা যখন বিদ্যালয়ের ক্লাস করছে, সে সময়ে চয়ন মা ও মামার হাত ধরে পটুয়াখালী আদালতের বারান্দায় ঘুরছেন।

চয়নের আইনজীবী এড. মোঃ সোলায়মান সিকদার জানান, কলাপাড়া উপজেলার তুলাতলি এলাকার বাসিন্দা মাসুম তালুকদার। ২০১৭ সালের ১৯ অক্টোবর মাসুম তালুকদার মারা যাওয়ার পর জনৈক মাসুম বিল্লাহ নামে এক ব্যক্তি ৮৪ লাখ টাকা দাবী করে মাসুম তালুকদারের ওয়ারিশদের নামে এ বছরের ১২ আগস্ট পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে দন্ডবিধি ৪০৬ এবং ৪২০ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় শিশু চয়নের বয়স উল্লেখ করা হয়েছে ২২ বছর। প্রকৃত পক্ষে জন্ম নিবন্ধন অনুয়ায়ী চয়নের জন্ম তারিখ ২ জানুয়ারী ২০১৩। এ ছাড়া চয়নের বোন তুলাতলি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেনীর ছাত্রী সাদিয়া ইমরোজ তৃপ্তির বয়স ১৭ বছর হলেও তার বয়স ১৯ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া চয়নের মা,দাদী সহ ওই মামলায় মোট ৮ জনকে আসামী করা হয়।
এ ঘটনায় আদালত আসামীদের বিরুদ্ধে সমন জারি করলে আসামীরা হাজির হন। বুধবার আসামী শিশু চয়ন এবং তার পরিবারের সদস্যরা আদালতে উপস্থিত হলে আদালতে বিব্রত পরিস্থিতি তৈরী হয়।

পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক আশিকুর রহমানের কাছে জামিনের আবেদন করলে বিচারক মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালে প্রেরণ করেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের বিচারক মোঃ মইনুল হক তাৎক্ষনিক ভাবে আসামী শিশু চয়ন এবং তৃপ্তিকে জামিন প্রদান করে এবং বাদীর পক্ষের আইনজীবীকে তলব করেন।

এ বিষয়ে বাদী পক্ষের আইনজীবী মোঃ মোহসীন উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করলেও তিনি কোন কথা বলতে রাজি হননি। এ বিষয়ে তিনি আদালতে কথা বলবেন বলে জানান।
পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এড. আবুল কালাম আজাদ এর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি দুঃখ জনক। মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে বিচার প্রার্থী এবং আইনজীবীদের আরও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।’

শিশু চয়ন সহ ৮ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় দাবী করা হয় চয়নের পিতা মরহুম মাসুম তালুকদার কলাপাড়া উপজেলার লেমুপাড়া মৌজায় ১২ একর জমি বিক্রি করার জন্য ৮৪ লক্ষ টাকা নিলেও মৃত মাসুম তালুকদার জমির দলিল প্রদান করেনি। এর প্রেক্ষিতে মাসুম তালুকদারের ওয়ারিশদের বিরুদ্ধে প্রতারনা এবং বিশ্বাস ভঙ্গের মামলাটি দায়ের করা হয়। বাদী মাসুম বিল্লাহ পটুয়াখালী সদর উপজেলার ৮নং ওয়ার্ড এর টাইন কালিকাপুর এলাকার (মিরাজ ভবন) বাসিন্দা, তার পিতার নাম আঃ রব হাওলাদার।

এদিকে শিশু চয়নের মা সাবরিনা বিশ্বাস মনু বলেন, ‘পরিকল্পিত ভাবে তাদের হয়রানী এবং জমি জমা দখলের লক্ষ্যেই এই ধরণের মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জামিন

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ