Inqilab Logo

সোমবার ১১ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ কার্তিক ১৪৩১, ০৯ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চালু হলেও সরঞ্জামাদি ও জনবলের অভাবে মিলছে না কাক্সিক্ষত সেবা

দর্শনা ফায়ার সার্ভিস

প্রকাশের সময় : ২৫ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নুরুল আলম বাকু, দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) থেকে

চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা ও দর্শনাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের বহু আকাক্সিক্ষত দর্শনা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনটি অবশেষে চালু হলেও পিকআপভ্যানসহ প্রয়োজনীয় উদ্ধার সরঞ্জামাদি ও লোকবলের অভাবে সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে এ প্রতিষ্ঠানটি। এলাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ সাধারণ মানুষের কাক্সিক্ষত সেবা দিতে স্টেশনটিকে তৃতীয় শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করার দাবি। জানা যায়, ২০১০ সালে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দামুড়হুদা-দর্শনা সড়কের লোকনাথপুর তালতলা নামক স্থানে রাস্তার পাশে এক বিঘা জমির উপর সোয়া এক কোটি টাকা ব্যয়ে দর্শনা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। নানা চরাই-উৎরাই পার করে বছর তিনেক আগে স্টেশনটির ভৌত অবকাঠামোর নির্মাণ কাজ শেষ হয়। এরপর প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি ও লোকবলের অভাবে স্টেশনটি চালু হতে পার হয়ে যায় আরও এক বছর। অবশেষে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে ‘গতি সেবা ত্যাগ’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে স্টেশনটির কার্যক্রম শুরু হয়। এর পর থেকেই প্রতিষ্ঠানটি সুনামের সাথে এলাকার মানুষের সেবা দিয়ে আসছে। বর্তমানে স্টেশনটির লোকবলের মোট ১৬টি পদের বিপরীতে রয়েছে ১৩ জন। এর মধ্যে স্টেশন অফিসারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদটি রয়েছে শূন্য। স্টেশন অফিসার না থাকায় প্রশাসনিক নানা কাজে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। বর্তমানে এখানে একটি মাত্র পানিবাহী গাড়ি থাকালেও নেই পিকআপভ্যান বা দ্বিতীয় কলসহ জরুরি উদ্ধারের প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি। পিকআপভ্যানের অভাবে সড়ক দুর্ঘটনায় আহতের দ্রুত উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে। স্টেশনটিতে পল্লী বিদ্যুতের লাইন ছাড়া কোন বিকল্প বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নেই। ফলে বিকল্প বিদ্যুৎ ব্যবস্থা না থাকায় অন্ধকার রাতে লোড শেডিংয়ের সময় পুরো স্টেশনটি অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে সেইসাথে পাম্পে পানিতোলাসহ পড়তে হয় নানা ভোগান্তিতে। স্টেশন সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের ১৮ ডিসেম্বর স্টেশনটি চালুর পর থেকে চলতি বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এলাকায় সংঘটিত ৪২টি অগ্নিকা-ের ঘটনায় ৬৫ লাখ ৪০ হাজার টাকার সম্পদ উদ্ধার করা হয়েছে এবং অগ্নিকা-ে ক্ষতি হয়েছে ১৩ লাখ ৯ হাজার টাকার সম্পদ। এসময়ের মধ্যে সংঘটিত ১৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় উদ্ধার কাজে অংশ নিয়ে দুর্ঘটনাস্থল থেকে আহত অবস্থায় ৩৬ জন ও নিহত ৫ জনকে উদ্ধার করা হয়। এসব দুর্ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয় ৭৬ লক্ষ টাকার সম্পদ এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ১৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকার সম্পদ। দর্শনা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন ইনচার্জ লিডার মীর মোশাররফ হোসেন বলেন, আমাদের ফায়ার সার্ভিস স্টেশনটি চুয়াডাঙ্গা-কালিগঞ্জ হাইওয়ের পাশে অবস্থিত। প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে ঢাকাগামী পরিবহন, যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাকসহ বিভিন্ন ধরনের ছোটবড় কয়েক হাজার যানবাহন যাতায়াত করে। তাই যে কোন সময় বড় ধরনের কোন সড়ক দুর্ঘটনা ঘটলে উদ্ধার কাজ পরিচালনার জন্য যথেষ্ট সরঞ্জাম নেই। বর্তমানে এখানে যে সরঞ্জাম রয়েছে তাতে একই সময়ে একাধিক স্থানে দুর্ঘটনা ঘটলে আমাদের কিছু করার থাকে না। এখানে একটি জেনারেটরের বিশেষ প্রয়োজন কারণ। এই স্টেশনটি একটি তৃতীয় শ্রেণির স্টেশন। বর্তমানে এখানে অনেক কিছুর অভাব রয়েছে। তার পরও এখানে সীমিত সংখ্যক যা কিছু সরঞ্জাম রয়েছে তা দিয়েই আমরা দক্ষ লোকজনকে সাথে নিয়ে এলাকার মানুষের সেবা দেয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চালু হলেও সরঞ্জামাদি ও জনবলের অভাবে মিলছে না কাক্সিক্ষত সেবা
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ