Inqilab Logo

বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৬ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

চট্টগ্রাম বন্দরে কাগজে লুকিয়ে আনা হলো সিগারেটের জাল স্ট্যাম্প

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৪ ডিসেম্বর, ২০২১, ৯:৪৩ পিএম

এবার অভিনব কায়দায় কাগজের ভিতর লুকিয়ে আনা হলো সিগারেটের জাল স্ট্যাম্প। জাল সিগারেট স্ট্যাম্প এর কন্টেইনার জব্দ করেছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার রাতে এ তথ্য জানান কাস্টমস কর্মকর্তারা। চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লাস্থ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বাপ্পু এন্টারপ্রাইজ চীন থেকে আর্ট পেপার ঘোষণায় এক কন্টেইনার পণ্য আমদানি করে। পণ্যচালানটি খালাসের লক্ষ্যে সিএন্ডএফ এজেন্ট মধুমতি এসোসিয়েটস লিমিটেড চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে বিল অব এন্ট্রি নং-সি-১৯৯১৯২৪; তারিখ: ০৯/১২/২০২১ দাখিল করে।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের পোর্ট কন্ট্রোল ইউনিট (PCU) ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার আওতায় রপ্তানিকারক, রপ্তানিকারকের ওয়েবসাইট, তৈরি দেশ, আমদানিকারকের ব্যবসায়ের ধরন ও ঠিকানা, পণ্যের বর্ণনা প্রভৃতি বিশ্লেষণ করে পণ্যচালানটিতে মিথ্যা ঘোষণায় সিগারেটের প্যাকেটে ব্যবহারযোগ্য জাল স্ট্যাম্প থাকার বিষয়ে প্রাথমিক ধারণা লাভ করে। পরবর্তীতে এ দপ্তরের এআইআর টিম কর্তৃক আলোচ্য পণ্যচালানের বিল অব এন্ট্রিটি ব্লক করা হয়। ব্লককৃত পণ্যচালানটির মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট কন্টেইনার নামিয়ে বন্দরের অভ্যন্তরে নিয়ম অনুযায়ী পণ্য পরীক্ষা শুরু করে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের চৌকস এআইআর টিম। কন্টেইনারের ২০টি প্যালেটের মধ্যে দৈবচয়নের ভিত্তিতে ৫টি প্যালেট দেখানোর পর সিএন্ডএফ এজেন্ট গড়িমসি শুরু করে এবং এক পর্যায়ে কায়িক পরীক্ষা সমাপ্ত করার জন্য অনুরোধ করে। উল্লেখ্য, উক্ত পাঁচটি প্যালেটে শুধুই আর্ট পেপার পাওয়া যায়। কিন্তু এআইআর টিম শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করার জন্য বদ্ধ পরিকর। পরবর্তীতে এআইআর টিমের সদস্যরা আরো একটি প্যালেট খোলে এবং সিগারেটের জাল স্ট্যাম্প খুঁজে পায়। অতঃপর এআইআর টিম কর্তৃক ২০টি প্যালেট ১০০% (শতভাগ) কায়িক পরীক্ষা সম্পন্ন শেষে সর্বমোট ২৪৬ প্যাকেট (প্রতি প্যাকেটে ২৬০ বান্ডিল এবং প্রতি বান্ডিলে ৫০০ পিস হিসেবে) সর্বমোট ৩,১৯,৮০,০০০ (তিন কোটি উনিশ লক্ষ আশি হাজার) পিস নিম্নস্তরের ১০ শলাকাবিশিষ্ট সিগারেটের প্যাকেটে ব্যবহারের উপযোগী হালকা খয়েরী রংয়ের জাল স্ট্যাম্প পাওয়া যায়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এস.আর.ও নং- ১৪৭-আইন/২০২০/১০৮-মূসক; তারিখ: ১১/০৬/২০২০ খ্রি. অনুযায়ী নিম্নস্তরের সিগারেট স্ট্যাম্প এর রং হালকা খয়েরি যার সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৩৯ টাকা থেকে ৬২ টাকা এবং যার বিপরীতে এসডি এর হার ৫৭% এবং মূসকের হার ১৫%।
এই পণ্যচালানটি খালাস হয়ে গেলে এই পরিমাণ জাল স্ট্যাম্প তিন কোটি উনিশ লক্ষ আশি হাজার নিম্নস্তরের সিগারেটের প্যাকেটে ব্যবহার করা যেত যার মাধ্যমে সরকার প্রায় ৯০ কোটি হতে ১৪৩ কোটি টাকা রাজস্ব হারাতো।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এস.আর.ও নং: ১৮১-আইন/২০১৯/৩৮-মূসক তারিখ: ১৩ জুন, ২০১৯ খ্রিস্টাব্দ এর বিধি ১১ এর উপবিধি (৫) অনুযায়ী স্ট্যাম্প বা ব্যান্ডরোল দি সিকিউরিটি প্রিন্টিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ হতে সংগ্রহ করতে হয় এবং বিধি (৬) অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কর্তৃক দি সিকিউরিটি প্রিন্টিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ এবং সিগারেট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত কমিটি প্রতি ৩ মাস অন্তর প্রতিষ্ঠানভিত্তিক সিগারেট স্ট্যাম্প ও ব্যান্ডরোল সরবরাহ ও ব্যবহার আড়াআড়ি যাচাইপূর্বক প্রতিবেদন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মূসক বাস্তবায়ন শাখায় প্রেরণ করতে হয়। ফলে এই জাতীয় পণ্য দি সিকিউরিটি প্রিন্টিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ ব্যতীত অন্য কোন প্রতিষ্ঠান হতে ক্রয় অথবা বিদেশ থেকে আমদানি করার কোন সুযোগ নেই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চট্রগ্রাম


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ