মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
নেপোলিয়ন বোনাপার্ট মিশরে থাকাকালীন তার কাছে পেশ করা একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল যে, ওয়াহাবি তরিকার জনক মুহাম্মদ ইবনে আব্দ আল-ওয়াহাব একজন ধর্মান্তরিত ফরাসি জেসুই ছিলেন। ফরাসি জেসুই হ’ল খ্রিস্টান যাজক এবং ব্রাদারদের সমন্বয়ে গঠিত একটি চরমপন্থী রোমান ক্যাথলিক আদর্শ, যা অর্ধ সহস্রাব্দ আগে সৈনিক থেকে ধর্মান্ধতে পরিণত ইগনাশিয়াস অফ লয়োলার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তবে, ওয়াহাব ফরাসী না হলেও, তিনি জেসুই আদর্শের ছায়া অনুসরণ করে একই ধরণের উগ্রবাদী হয়ে উঠেছিলেন।
মুহাম্মদ ইবনে আব্দ আল-ওয়াহাবের পর সউদ পরিবার ওয়াহাবিবাদের নেতৃত্ব গ্রহণ করে। তারা মধ্য আরবে তাদের নিজস্ব সউদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে। যেহেতু সুন্নি এবং শিয়ারা ওয়াহাবি মতবাদে অনুসারে ওয়াহাবিদের দৃষ্টিতে কাফের বলে বিবেচিত হত, তাই তারা মুহাম্মদ বিন সউদ আল মুকরিনের পুত্র আব্দুল আজিজ বিন মুহাম্মদ আল সউদের শাসনামলে তাদের উপর আক্রমণ এবং গণহত্যা শুরু করে। সেই সময়ে, অটোম্যান সাম্রাজ্য তার নিজস্ব অভ্যন্তরীণ সমস্যা এবং রাশিয়া ও ইউরোপের হুমকি মোকাবেলায় ব্যস্ত ছিল। একারণে ক্রমেই আরব ভ‚মিতে অটোম্যানদের আধিপত্য দুর্বল হতে থাকে। আব্দুল আজিজ বিন মুহাম্মদ আল সউদের পুত্র সউদ বিন আব্দুল আজিজ আল সউদ এই সুযোগে তখন মক্কা ও মদিনা দখল করেন। এরপর ওয়াহাবি আদর্শের নেতৃত্বদানকারী সউদ পরিবার এবং তাদের অনুসারীরা সেখানকার বুজুর্গদের কবর ও অন্যান্য গূরুত্বপূর্ণ স্মৃতি ফলকগুলি ধ্বংস করে দেন এবং মুসলিমদেরকে পবিত্র স্থানগুলিতে হিযরত করতে বাধা দেন।
অবশেষে, সুলতান দ্বিতীয় মাহমুদের আদেশে মিশরের আলবেনিয়ান-অটোমান গভর্নর মুহাম্মদ আলী পাশা তার পুত্র ইব্রাহিমকে ওয়াহাবিদের মোকাবিলা করতে পাঠান। ইব্রাহিম পাশা মক্কা ও মদিনা পুনরুদ্ধার করেন এবং ওয়াহাবিরা নজদে (রিয়াদ) পিছু হটে। যাইহোক, ইব্রাহিম পাশা এই সমস্যাটি নির্মূল করতে এবং এর উপর সিলমোহর লাগানোর জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন। তিনি নজদের দিকে অগ্রসর হন এবং সউদী আরবের তৎকালীন রাজধানী দিরিয়াহ দখল করে নেন। তিনি সউদ পরিবারের কয়েকজনকে হত্যা করেন এবং সউদ বিন আব্দুল আজিজ আল সউদের বড় ছেলে আব্দুল্লাহ বিন সউদ আল সউদকে ইস্তাম্বুলে প্রেরণ করেন এবং তার মৃত্যুদন্ড কার্যকর করেন। ব্রিটিশ সাম্রাজ্য প্রথম থেকেই ওয়াহাবি মতাদর্শী সউদীদের এই উগ্রপন্থী আন্দোলনকে নিবিড়ভাবে অনুসরণ করে এসেছে। ইসলামের প্রোটেস্ট্যান্ট বা ওয়াহাবিরা সুন্নি অটোম্যানদের আধিপত্যের বিরুদ্ধে ব্রিটিশদের সম্ভাব্য মিত্র ছিল। কষ্টসাধ্য ভ্রমণের পর ব্রিটিশ রয়্যাল জিওগ্রাফিক্যাল সোসাইটির জেসুই গিফোর্ড পালগ্রেভ, উইলফ্রিড এস. ব্লান্ট এবং ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মকর্তা লুইস পেলির মতো গুপ্তচররা সউদীদের সাথে যোগাযোগ করতে এবং অবশেষে একটি জোট গঠনের চুক্তি স্বাক্ষর করতে সক্ষম হন।
ব্রিটেন সেসময় ভারতের মাধ্যমে ওয়াহাবিদের কাছে অস্ত্র এবং সউদ পরিবারের কাছে উইলিয়াম শেক্সপিয়ার নামের এক গুপ্তচর পাঠিয়েছিল। পশ্চিমাদের কাছে ইবনে সউদ নামে পরিচিত আব্দুল আজিজ বিন আব্দুল রহমান আল সউদের সামরিক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ শুরু করেন শেক্সপিয়ার। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ১৯১৫ সালে একটি সঙ্ঘাতে এক প্রতিদ্ব›দ্বী গোত্রের হাতে নিহত হন। ১৯০৯ সালে সুলতান দ্বিতীয় আব্দুল হামিদের পতনের সাথে সাথে অটোমান সাম্রাজ্যের প্রকৃত অবসান ঘটে এবং এর ক্ষমতা একটি তরুণ তুর্কি কমিটির হাতে চলে যায়, যাকে কমিটি অফ ইউনিয়ন অ্যান্ড প্রগ্রেস বলা হয়। তাদের ক্ষমতায় আরোহনের ক্ষেত্রে ব্যাপক সমর্থন দিয়েছিল ব্রিটেন। কিন্তু যখন এই ইউনিয়নবাদীদের ওপর থেকে ব্রিটিশ সমর্থন সরিয়ে নেয়া হয়, তখন তারা জার্মানির পক্ষ হয়ে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে যোগদান করে। (চলবে)। সূত্র : ডেইলি সাবাহ্, উইকিপেডিয়া।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।