মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
কোভিড-১৯ মহামারীতে স্মরণকালের বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়ে বিশ্ব। প্রাদুর্ভাব কমাতে আরোপিত বিধিনিষেধে স্থবির হয়ে পড়ে অর্থনীতি। বিশ্বজুড়ে ঘরবন্দি হয়ে পড়ে মানুষ। উল্লেখযোগ্য হারে কমে যায় ভোক্তা ব্যয়। পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া হয় বিপুল পরিমাণ প্রণোদনা। ফলে মানুষের হাতে নগদ অর্থের সঞ্চয় বেড়েছে। নতুন একটি সমীক্ষা অনুসারে, এ সঞ্চয় ২০২২ সালে বৈশ্বিক জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে অতিরিক্ত ৩ শতাংশীয় পয়েন্ট অবদান রাখতে পারে। মাস্টারকার্ড ইকোনমিকস ইনস্টিটিউটের সমীক্ষা অনুসারে, যদি এ সঞ্চয়গুলো দ্রুত ব্যবহার করা হয় তবে আগামী বছর জিডিপিতে ৪ দশমিক ৫ শতাংশীয় পয়েন্টেরও বেশি যুক্ত হতে পারে। ২০২০ সালে সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রবণতা নিয়ে বিশ্লেষণ শুরু করেছিল আর্থিক পরিষেবা সংস্থাটি। চলতি বছর পারিবারিক সঞ্চয়ের হার মহামারীর আগের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ভোক্তারা তাদের সঞ্চয় থেকে কত দ্রæত বা ধীরে ব্যয় করবে তা বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। গেøাবাল ইকোনমিক আউটলুক ২০২২ শীর্ষক প্রতিবেদনে মাস্টারকার্ড ইকোনমিকস ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, সঞ্চয় ও ব্যয়, সরবরাহ চেইন, ডিজিটাল রূপান্তর, বিশ্বব্যাপী ভ্রমণ ও অর্থনৈতিক ঝুঁকির একটি ক্রমবর্ধমান তালিকা আগামী বছর বিশ্ব অর্থনীতিকে রূপ দিতে পারে। মাস্টারকার্ডের প্রধান অর্থনীতিবিদ ও মাস্টারকার্ড ইকোনমিকস ইনস্টিটিউটের প্রধান ব্রিকলিন ডোয়ায়ার বলেন, অনেক আকাক্সিক্ষত থাকলেও চলতি বছর আমরা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারিনি। তবে সম্মিলিতভাবে আমরা অসাধারণ উন্নতি করেছি। বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, টিকাদান কার্যক্রমের অগ্রগতি ও ডিজিটাল রূপান্তর বড় ও ছোট ব্যবসাগুলোকে আরো স্থিতিস্থাপক করে তুলেছে। এ পটভূমিতে আগামী বছর ভোক্তাদের চাহিদা ও ব্যয় করার প্রবণতা বাড়বে বলেই মনে করছি। এরই মধ্যে কভিডের বিপর্যয় কাটিয়ে উঠেছে বিশ্ব অর্থনীতি। কভিডের প্রভাব গত বছর অর্থনীতিকে ১৯৩০-এর দশকের পর সবচেয়ে ভয়াবহ মন্দার দিকে নিয়ে গিয়েছিল। তবে কভিডের নতুন ধরনের সংক্রমণ বৃদ্ধি এবং কিছু উন্নয়নশীল দেশের কভিড-১৯ প্রতিরোধী টিকাদান কার্যক্রমে পিছিয়ে থাকা আগামী বছর ভোক্তা ব্যয়ে ঝুঁকি তৈরি করেছে। মাস্টারকার্ডের মতে, মহামারীটি পণ্য খাতে ভোক্তা ব্যয়ের হার ৩৯ থেকে প্রায় ৪৭ শতাংশে নিয়ে গেছে। যেখানে কভিডজনিত কারণে সরবরাহ চেইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পরিষেবা খাতে ভোক্তা ব্যয় কমে গেছে। পণ্যের চাহিদা ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বিভিন্ন উদ্যোগের কারণে ২০২২ সালে দাম ও সরবরাহ চেইনের চাপ কমে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে খুচরা বিক্রির ২০ শতাংশ স্থায়ীভাবে ই-কমার্সে স্থানান্তরিত হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হবে সঞ্চয় ও আর্থিক সহায়তা কমে যাওয়ার পর অনলাইন ব্যয়ের প্রবণতা কেমন হবে। এরই মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতে খুচরা খাতে অনলাইন বিক্রির অংশীদারিত্ব কোভিডপূর্ব পর্যায়ে পৌঁছেছে। এদিকে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অবসর ভ্রমণ পুনরুদ্ধার হতে শুরু করেছে। তবে ২০২২ সালেও মাঝারি ও দীর্ঘ দূরত্বের ফ্লাইটের পুনরুদ্ধার কভিডপূর্ব পর্যায়ে পৌঁছবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে মাস্টারকার্ড। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমরা অভ্যন্তরীণ ও স্বল্প দূরত্বের আন্তর্জাতিক ভ্রমণে একটি দ্রুত প্রত্যাবর্তন দেখছি। এক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে দীর্ঘ দূরত্বের ফ্লাইটগুলো। বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনার সঙ্গে কিছু ঝুঁকির কথাও জানিয়েছে মাস্টারকার্ড। সংস্থাটি জানিয়েছে, মূল্যস্ফীতি, সরবরাহ চেইনে প্রতিবন্ধকতা ও সরকারি প্রণোদনা কমে যাওয়ার বিষয়গুলো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ঝুঁকি তৈরি করেছে। এপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।