পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হেমন্তের এক মাস পার হলেই শীতকে সামনে রেখে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলায় কম্বলের চাহিদা বেড়ে যায়। গার্মেন্টসের ঝুটসহ অন্যান্য কাপড় দিয়ে তৈরি কাজিপুরের কম্বল উত্তরাঞ্চলের ১৬টি জেলার চাহিদা মেটাচ্ছে। একই সাথে দেশের অন্যান্য বিভাগেও যাচ্ছে। দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিদেশেও রফতানি করা হচ্ছে।
উত্তরাঞ্চলে হেমন্তের শুরুতেই রাতে হালকা শীত অনুভূত হয়। শীতের আগমনের সাথে সাথে কাজিপুরে কম্বল পল্লী সরগরম। চালিতাডাঙ্গা ইউনিয়নের শিমুলদাইড় বাজারসহ আশপাশের প্রায় ১৩টি গ্রামের ১০ সহস্রাধিক কারিগর তাদের পরিবার নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। শীত মৌসুম এসব গ্রামের দরিদ্র পরিবারগুলোর বাড়তি আয়ের সুযোগ করে দেয়।
কারিগররা জানান, ১৩টি গ্রামের লোকজন মেশিন দিয়ে কম্বল তৈরি করেন। শীত মৌসুমে সবাই এমন ব্যস্ত থাকে যে তাদের কাজের সময় বেড়ে ঘুমের সময় কমে যায়। প্রতিদিন একজন শ্রমিক ২ থেকে ৩টা কম্বল তৈরি করেন। একেকটি কম্বল তৈরিতে পারিশ্রমিক ৭০ থেকে ৮০ টাকা পেয়ে থাকেন। বাড়ির অন্যান্য কাজের ফাঁকে শীতে পরিবারের ছেলে-মেয়েসহ সবাই কম্বল তৈরির কাজ করেন।
কম্বল তৈরির কারিগর শিমুলদাইড় গ্রামের বিউটি বেগম জানান, করোনাকালে কাজ না থাকায় সংসারে অভাব দেখা দিয়েছে। সেই ক্ষতি পূরণে কম্বল সেলাইয়ের কাজ শুরু করেছেন। এতে করে তিন সন্তান নিয়ে সংসার ভালোই চলছে। দীর্ঘদিন পর স্কুল খোলায় সন্তানরা লেখাপড়ায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। তারা পড়ালেখার ফাঁকে কম্বল তৈরির কাজে সহযোগিতা করছে।
বিউটি বেগমের স্বামী মোতাহার হোসেন শিমুলদাইড় বাজারে পাওয়ার মেশিনে কাজ করেন। দিনে পারিশ্রমিক পান ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। এভাবেই এসেছে তাদের পরিবারে সুদিন ফিরেছে। কম্বলের কাজ করে তাদের মতো ১৩টি গ্রামের ১০ সহস্রাধিক কারিগরের পরিবারে দূর হয়েছে অভাব নামক শব্দের।
জানা গেছে, এলাকায় ১০ সহস্রাধিক পা মেশিন ছাড়াও শিমুলদাইড় বাজারে রয়েছে দেড়শতাধিক যন্ত্র চালিত পাওয়ার মেশিন। পাওয়ার মেশিনের কর্মরত আবুল হোসেন জানান, পাওয়ার মেশিনে প্রতিদিন ৪ জন কারিগর কাজ করেন। আর একটি পাওয়ার মেশিনে ৯০০ থেকে এক হাজার পিস কম্বল তৈরি করা হয়। দেশের বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা এসে কম্বল কিনে নিয়ে যায়। বিশেষ করে রংপুর, দিনাজপুর, পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও থেকে মহাজনরা এসে বিক্রির জন্য কম্বল কিনে নিয়ে যান।
চালিতাডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান মুকুল জানান, শীত মৌসুমে শিমুলদাইড় বাজার কেন্দ্রিক শত কোটি টাকার কেনাবেচা হয়। কিন্তু ব্যাংক ব্যবস্থা না থাকায় টাকা লেনদেন নিয়ে ঝামেলা পোহাতে হয়। সবার দাবি, শিমুলদাইড় বাজারে যে কোন একটি ব্যাংকের শাখা।
এ ব্যাপারে কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হাসান সিদ্দিকী ইনকিলাবকে বলেন, গত শতাব্দীর আশির ৮০ দশকের শেষ দিকে শুরু এই শিল্প এখন এলাকার গন্ডি ছাড়িয়ে দেশের নানা প্রান্তের মানুষের চাহিদা পূরণ করে চলেছে। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের প্রতিটি জেলায় শীতে কাজিপুরের কম্বলের চাহিদা অনেক বেশি। তিনি আরও জানান, ব্যাংক ঋণ সুবিধা, উপযুক্ত স্থান, পরিবেশ ও বাজার ব্যবস্থা ছাড়া ব্যক্তি উদ্যোগেই এই শিল্পে অনেক বেকারের কর্মসংস্থান হয়েছে। সে ক্ষেত্রে সরকারিভাবে তাদের বাজার সৃষ্টি করে দিতে পারলে কম্বল শিল্পে কমপক্ষে লক্ষাধিক বেকারের কর্মসংস্থান সম্ভব হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।