Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিচারাধীন বিষয়ে মন্তব্য করতে চাই না : অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত পিপিপিতে হবে ‘ঢাকা ইস্ট-ওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০৫ এএম

‘বিচারাধীন বিষয় নিয়ে মন্তব্য করা সমিচীন নয়’ উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছন, প্যানডোরা পেপারসে যাদের নাম এসেছে, তাদের সম্পর্কে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) হাইকোর্ট ডিভিশনে তথ্য জমা দিয়েছে। তাই এ নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না।

গতকাল অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ভার্চুয়াল সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ কথা বলেন।
সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, যাদের নাম এসেছে, দুদক তাদের নামের তালিকা হাইকোর্টে জমা দিয়েছে। বিষয়টি এখন হাইকোর্টের এখতিয়ারে। মামলাটি চলমান। আমি মনে করি, এ বিষয়ে আমার মতামত দেয়া যুক্তিযুক্ত হবে না। যেহেতু বিষয়টি একটি মামলার আওতায় চলে গেছে এবং এটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে আমার মতামত না দেয়া উত্তম।

সংবাদ মাধ্যমে নতুন করে আরও কয়েকজনের নাম আসার বিষয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, এ বিষয়গুলো পত্রিকায় যেভাবে আসছে, সেগুলো আরও অনুসন্ধান করে দুদক যদি মনে করে হাইকোর্টে যাওয়া দরকার, বিচার শুরু করার জন্য সে কাজটি তারা করে যাচ্ছেন। আমি মতামত দিলে তাদের কাজে লাগবে না। তাই আমি মতামত দেবো না। আপনারা অপেক্ষা করুন। সব জানতে পারবেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা আপনাদের আপডেট দিতে পারব। তবে সেটা সংক্ষিপ্ত আকারে দেয়া যাবে। মামলার বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত ডিটেইলসে আপডেট দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। প্রথমে ৪৩ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তালিকা আসে। সে তালিকা হাইকোর্টে দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে যা আসবে, সেটাও দেয়া হবে পর্যায়ক্রমে। আমি বিশ্বাস করি, ন্যায় বিচার পাব। আদালত যা সিদ্ধান্ত দেবেন, আমরা তা মেনে নেব।
স্বাধীনতার ৫০ বছরে দেশের অর্থনীতি ও সামাজিক খাতের অর্জন প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রীর অভিব্যিক্তি জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরের অর্জন নিয়ে সারা বিশ্বের অর্থনীতিবিদসহ সবাই বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন। বাংলাদেশকে তারা বিভিন্নভাবে তুলে ধরেছেন। স্বাধীনতার পর প্রথম ৩৮ বছরে আমরা ১০০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছি। আজকে সেটা চারগুণ বেড়ে ৪১১ বিলিয়ন ডলার অ্যাভারেজ জিডিপির আয়তন।

আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, সামষ্টিক অর্থনীতির সর্বক্ষেত্রে ও সামাজিক ক্ষেত্রে অসাধারণ ভালো কাজ করেছি। অর্থনীতির সঙ্গে সামাজিক অর্থনীতির সবগুলো ইনডেক্স আছে, সেগুলোও অনেক ভালো আছে। সেন্টার ইকোনমিক বিজনেস রিসার্স যুক্তরাজ্য থেকে যেটা পাবলিশ করে, সর্বশেষ প্রতিবেদনে তারা বলেছেন, ২০৩৫ সাল নাগাদ বিশ্বের অর্থনীতির এলাকায় আমরা ২৫তম স্থানে উঠতে পারব। ২০৪১ সালের যে স্বপ্ন বিশ্বের শীর্ষ ২০ দেশের মধ্যে আমরা একটি হব।

অর্থমন্ত্রী বলেন, তথ্যের মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে, ২০৪১ সালে জাতির পিতার যে স্বপ্ন সোনার বাংলাদেশ গড়ার, তার একটি ধাপ অতিক্রম করব। আজকে জাতির পিতার স্বপ্ন, তার দেখানো পথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সব মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, আমাদের যা অর্জন, প্রধানমন্ত্রী যেভাবে বলেন- তাকে কোড করে আমি বলতে পারি, ‘এ অর্জন এ দেশের সব মানুষের।’ আমি বিশ্বাস করি- আগামীতেও এ অর্জন অব্যাহত থাকবে।’

এদিকে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় রাজধানী ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার যানজট নিরসনে ‘ঢাকা ইস্ট-ওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’ প্রকল্প পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) ভিত্তিতে বাস্তবায়নের নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সেতু বিভাগের অধীনে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে।
২০১৮ সালের ১২ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানী ঢাকার যানজট নিরসন ও নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতকল্পে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ পরিকল্পনা নেয়ার কথা জানান। সে সময় প্রধানমন্ত্রী সড়ক নিরাপদ করতে পাঁচটি প্রকল্পের কথা জানান। যার একটি ঢাকা ইস্ট-ওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে।

ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারের বালিয়াপুর থেকে নিমতলী-কেরানীগঞ্জ-ফতুল্লা-বন্দর হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দ পর্যন্ত হবে এ এক্সপ্রেসওয়ে। প্রায় ১৬ হাজার ৩৮৯ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ৩৯ দশমিক ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এ এক্সপ্রেসওয়ে। কবে নাগাদ ঢাকা ইস্ট-ওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শুরু হবে- সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এখন এটা টেন্ডারে দেয়া হবে। টেন্ডারে দেয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান আগ্রহ দেখিয়েছে। এজন্য তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হবে। কতগুলো কোম্পানি এবং কোন কোন দেশ থেকে প্রস্তাব এসেছে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, অনেকগুলো কোম্পানিই আছে। তবে কোন কোন দেশ থেকে প্রস্তাব এসেছে সে তালিকা আমরা পাইনি।

জানা গেছে, ঢাকা শহরের যানজট নিরসনে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ ২০১৭ সালে ‘ঢাকা ইস্ট-ওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’ নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা করে। প্রস্তাবিত এক্সপ্রেসওয়েটি ‘রিভাইজড স্ট্র্যাটেজিক ট্রান্সপোর্ট প্ল্যানে (আরএসটিপি)’ উল্লিখিত আউটার রিং রোডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এটি নির্মিত হলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যানবাহন পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা শহরে প্রবেশ না করে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এবং চট্টগ্রাম-সিলেটসহ পূর্বাঞ্চলে সরাসরি চলাচল করতে পারবে। ফলে ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার যানজট অনেকাংশে কমবে। আরও জানা গেছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ৩১৬ একর জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হবে। এই জমির দাম, স্থাপনা ও অন্যান্য ক্ষতিপূরণ সরকারি খাত থেকে জোগান দেয়া হবে। এছাড়া প্রকল্প এলাকায় বিদ্যমান পরিষেবাগুলো স্থানান্তরের ব্যয়ও সরকারি তহবিল থেকে করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অর্থমন্ত্রী

১১ জুন, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ