পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) হলের প্রভোস্টের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন দুই শিক্ষক। ভিসির কাছে তারা তাদের পদত্যাগ পত্র জমাও দিয়েছেন। পদত্যাগী দুই প্রভোস্ট হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট প্রফেসর কল্যাণ কুমার হালদার ও ফজলুল হক হলের প্রভোস্ট প্রফেসর মো. হাবিবুর রহমান। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, কয়েকদিন আগে প্রফেসর ড. সেলিম হোসেনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর ছাত্রলীগের আতঙ্কে তারা পদত্যাগ করছেন। তারা তাদের পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এদিকে, তাদের দু’জনের পদত্যাগের পর, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষকই হল প্রভোস্টের দায়িত্ব নিতে চাইছেন না। উপরোন্ত অন্যান্য হলের প্রভোস্টরাও পদত্যাগের কথা ভাবছেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট প্রফেসর কল্যাণ কুমার হালদার ও ফজলুল হক হলের প্রভোস্ট প্রফেসর মো. হাবিবুর রহমান প্রভোস্টের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ জমা দেয়ার জানিয়েছেন ড. সেলিমের মৃত্যুর পর থেকে তারা মানসিক বিপর্যস্তের পাশাপাশি জীবন শঙ্কাও করছেন। হলের পরিবেশও সুষ্ঠু নয়। তাছাড়া পরিবারের সদস্যরাও ঘটনার পর থেকে উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠিত। অপর চার হলের প্রভোস্ট ও সাত হলের সহকারী প্রভোস্টরা ৫ দফা দাবি পূরণ না হলে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিয়েছেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট প্রফেসর কল্যাণ কুমার হালদার জানান, ড. সেলিম আমার বন্ধু ছিল। তার চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছি না। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তার মৃত্যুর পরের দিনই আমি প্রভোস্ট পদ থেকে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। এরপর আরো একজন প্রভোস্ট পদত্যাগ করেছেন।
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, কুয়েটের সাতটি হল পরিচালনা নিয়ে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল চরমে। হলের ডাইনিং ম্যানেজার নিয়োগ, খেলাধুলা, ফ্লোর মনিটরিং ও ইন্টারনেটসহ আরও কিছু বিষয় থেকে আর্থিক সুবিধা পাওয়ার পাশাপাশি হলের সিট বরাদ্দ নিয়ে সংগঠনটির মধ্যে রীতি মতো প্রতিযোগিতা চলে। এ নিয়ে প্রভোস্টদের মানুষিক চাপে রাখা হয়, যার শিকার ড. সেলিম হোসেন।
প্রভোস্টরা জানান, তাদের পদত্যাগ-সহকর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্যুরই প্রতিবাদ। তারা শিক্ষক সমিতির দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে ৫ দফা দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে সাত দিনের আল্টিমেটাম দেন। কুয়েটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ, প্রভোস্টদের স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালনের সুযোগসহ বিভিন্ন দাবি তোলেন তারা।
কুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিষদের পরিচালক অধ্যাপক ইসমাঈল সাইফুল্যাহ জানান, গত বুধবার প্রভোস্টদের নিয়ে সভা হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন দাবি উত্থাপন করা হয়েছে। যা রেজুলেশন আকারে তৈরির প্রস্তুতি চলছে। সভায় দু-একজন প্রভোস্ট পদত্যাগের বিষয় তুললে তাদের জানানো হয়-কেউ পদত্যাগ করতে চাইলে ব্যক্তিগতভাবে জমা দিতে। শিক্ষক ড. সেলিম হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত চলছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এদিকে ড. সেলিম হোসেনের লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে লাশ তোলার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে। খানজাহান আলী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার বিশ্বাস বলেন, শিক্ষক ড. সেলিমের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে কবর থেকে তোলার জন্য আবেদন করা হয়েছে। এছাড়া কুয়েটের পক্ষ থেকে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটির প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছি আমরা।
খুলনা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান তালুকদার জানান, কুয়েট শিক্ষকের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে উত্তোলনের আবেদন করেছিল খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ। লাশটি যেহেতু কুষ্টিয়াতে দাফন হয়েছে, সে কারণে আবেদনটি কুষ্টিয়া জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠানো হয়েছে। এর আগে গত ১ ডিসেম্বর ময়নাতদন্ত ছাড়াই ড. সেলিমের লাশ কুষ্টিয়া জেলার বাঁশখালি গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।