ইবি ভিসির অফিসে তালা, অডিও ক্লিপ বাজিয়ে আন্দোলন
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালামের অডিও ফাঁসের ঘটনায় তৃতীয় দিনেও ভিসি
স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের মানুষের ইসলামী চিন্তা-চেতনাকে বিকশিত করার জন্য একটি বিশ্বমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরির স্বপ্ন ছিল তৎকালীন রাষ্ট্র পরিচালকদের। তাদেরই আন্দোলনের ফসল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা। ১৯৭৯ সালের ২২ নভেম্বর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং ১৯৮১ সালের ৩১ জানুয়ারী যাত্রা শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়টির। দুটি অনুষদের অধীনে চারটি বিভাগ নিয়ে শিক্ষাকার্যক্রম শুরু হলেও বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টির ব্যাপ্তি ঘটেছে। বর্তমানে ৫টি অনুষদের অধীনে ২৫টি বিভাগ নিয়ে কার্যক্রম চলছে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের এই সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠে। ইসলামী ও প্রচলিত আইনের সমন্বয়ে বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০০৩-০৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে আইন ও শরিয়াহ অনুষদের অধীনে আল-ফিক্হ বিভাগ নামে নতুন একটি বিভাগ খোলে। দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. মো. আবুল কালাম পাটওয়ারীকে সভাপতি করে ২০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে বিভাগটির যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে বিভাগটিতে ৮ জন শিক্ষক এবং ৭টি ব্যাচ আছে। শিক্ষক সংকটের কারণে বিভাগটিতে প্রথমদিকে কিছুটা সেশনজট থাকলেও সদ্যবিদায়ী সভাপতি ড. নাজিমুদ্দিনের প্রচেষ্টা ও অন্য সকল শিক্ষকদের আন্তরিকতায় বিভাগটি সেশনজটের কলঙ্ক অধ্যায় থেকে মুক্ত হয়। এবিষয়ে ড. নাজিমুদ্দিন বলেন, ‘সেশনজট শুধুমাত্র একজন শিক্ষার্থীর জন্য অভিশাপ নয় একজন শিক্ষকের জন্যেও গ্লানির বোঝা। বিভাগের সকল শিক্ষক একত্র এবং তাদের মধ্যে টিম ওয়ার্কের প্রবণতা থাকলে সেশনজটের প্রশ্নই আসে না। তিনি আরো বলেন, ছাত্র-শিক্ষকের পারস্পরিক সম্পর্ক নিবিড় থাকলে সেশনজটসহ অন্যান্য যেকোনো ধরনের সমস্যা নিরসন করা সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি।’ বর্তমান সভাপতি ড. একেএম নূরুল ইসলামও চেষ্টা করে যাচ্ছেন কীভাবে বিভাগটিকে সেশনজটমুক্ত রাখা যায়। তিনি বলেন, ‘শিক্ষকের অভাবে শুরুর দিকে বিভাগে সেশনজট ছিল। বিভাগের সকল শিক্ষকের আন্তরিক প্রচেষ্টায় সেশনজট থেকে আমরা অনেকাংশে বেরিয়ে আসতে পেরেছি।’ আল-ফিক্হ এমন একটি ব্যতিক্রমধর্মী বিভাগ যেখানে একসাথে ইসলামী আইন ও প্রচলিত আইন (জেনারেল ‘ল’) পড়ানো হয়। দুটি আইনের সমন্বয়ে বিভাগটির সিলেবাস প্রস্তুত করা হয়েছে। ইসলামী আইনের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (মালয়েশিয়া), আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয় (মিসর) ও মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় (সৌদিআরব)-এর সিলেবাসভুক্ত বই এবং প্রচলিত আইনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অন্যসকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাসভুক্ত বই শিক্ষার্থীদের পাঠ্যসূচিতে রাখা হয়েছে। যার ফলে এই বিভাগের শিক্ষার্থীরা একাধারে দুটি আইনের পা-িত্য অর্জন করতে সক্ষম হচ্ছে। আল-ফিক্হ বিভাগে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের সবথেকে আনন্দের বিষয় তারা এলএলবি (অনার্স) এবং এলএলএম (মার্স্টাস)-এর মর্যাদা লাভ করছে। বর্তমানে তারা জুডিশিয়ারি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে সহকারী জজ, অ্যাডভোকেসিসহ বিভিন্ন আইন পেশায় কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে। বিভাগের সভাপতি ড. একেএম নূরুল ইসলাম বলেন, ‘আল-ফিক্হ বিভাগের গ্র্যাজুয়েটরা এলএলবি (অনার্স) ডিগ্রি নিয়ে প্রচলিত আইন ও শরিয়াহ্ আইনে বিশেষজ্ঞ তৈরি হয়। এর ফলে, সমাজে প্রচলিত কুসংস্কার দূর করে নৈতিকতার মানদ- ঠিক রেখে সাধারণ জনগণকে আইনি সহায়তা দিতে সক্ষম হবে। এ বিভাগের কোর্স কারিকুলাম বিশ্বমানের ‘ল’ গ্র্যাজুয়েট তৈরির জন্য উপযুক্ত বলে আমি বিশ্বাস করি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. রাশিদ আসকারী বলেন, ‘আল-ফিক্হ বিভাগসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় প্রতিটি বিভাগের সিলেবাস আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন। এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ে যাওয়া শিক্ষার্থীরা বর্তমানের বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিক্ষকতাসহ নানা পেশায় নিয়োজিত আছে।
ষ আব্দুল্লাহ আল ফারুক
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।