Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ২৫ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

লিঙ্গভিত্তিক মজুরি বৈষম্য কমেছে যুক্তরাজ্যে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০৩ এএম

নারীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জনের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় যুক্তরাজ্যে লিঙ্গীয় পরিচয়ের কারণে বেতন বৈষম্য কমেছে। ২৫ বছর ধরেই নারী-পুরুষের মধ্যে মজুরি বৈষম্যের পরিমাণ কমছে। ব্রিটিশ দি ইনস্টিটিউট ফর ফিসক্যাল স্টাডিজের (আইএফএস) এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর বিবিসি। গবেষণায় দেখা যায়, মজুরি বেড়ে যাওয়াও মজুরি বৈষম্য কমে যাওয়ার কারণ। তবে স্নাতকদের ক্ষেত্রে প্রতি ঘণ্টার মজুরিতে তেমন কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। এর অর্থ হলো কেবল লিঙ্গভিত্তিক মজুরি বৈষম্যেই কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। যুক্তরাজ্য সরকার বলছে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেশে বেড়েছে কর্মজীবী নারীর সংখ্যা। ২০১০ সালের চেয়ে কর্মজীবী নারীর সংখ্যা বেড়েছে ১৯ লাখ। যার ফলে নারী-পুরুষের মধ্যকার যে মজুরি বৈষম্য ছিল তার অনেকটুকুই কমে এসেছে। লিঙ্গভিত্তিক যে মজুরি বৈষম্য তার মূলত তিনটি দিক রয়েছে। এগুলো হলো কর্মসংস্থান, কর্মঘণ্টা ও মজুরির হার। গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন, কর্মজীবী নারীরা প্রতি মাসে একজন কর্মজীবী পুরুষের চেয়ে ৫০ ঘণ্টা বেশি কাজ করেন। এ কাজের পুরোটাই অবৈতনিক। নারী-পুরুষের মধ্যকার এ মজুরি ও কর্মঘণ্টার বৈষম্য সবচেয়ে বেশি বাড়ে যখন তারা সন্তানের বাবা-মা হন। গবেষকরা বলছেন, নারী-পুরুষের মধ্যকার বেতন বৈষম্য কমে যাওয়ার একমাত্র কারণ হলো নারী শিক্ষার হার বেড়ে যাওয়া। অনেক ক্ষেত্রে ব্রিটেনের নারীরা শিক্ষায় পুরুষের চেয়েও এগিয়ে যাচ্ছেন। ২০১৯ সালেও দেশটির কর্মজীবী নারীরা তাদের পুরুষ সহকর্মীর তুলনায় ৪০ শতাংশ কম উপার্জন করতেন, যা আবার ৯০-এর দশকের চেয়ে কম। কিন্তু এখন নারীরা তাদের বয়সী পুরুষ কর্মজীবীদের তুলনায় শিক্ষিত বা লেখাপড়ায় এগিয়ে। গত ২৫ বছরে কর্মজীবী নারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি অর্জনের পরিমাণ বেড়েছে ৫ শতাংশ পয়েন্ট বেশি। আইএফএসের প্রতিবেদনে বলা হয়, লিঙ্গভিত্তিক মজুরি বৈষম্য এখন অনেকটাই সহনীয়। যার প্রধান কারণ হলো নারী শিক্ষার হার বৃদ্ধি। তবে গবেষকরা বলছেন, বছরের পর বছর ধরে নীতিনির্ধারকরা নারী ও পুরুষের মধ্যকার দায়িত্ব ও বেতনের ক্ষেত্রে একটি সাম্যাবস্থা তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছেন। তারা বর্তমান নীতিকে অপর্যাপ্ত বলে অভিহিত করেছেন। কারণ এটি লিঙ্গভিত্তিক প্রথাগত বৈষম্যগুলোকে বিলোপ করতে ব্যর্থ হয়েছে। কারণ এখনো নারীকে শিশুর দেখভালের দায়িত্ব দেয়া হয়, যার মাধ্যমে সমাজে এক ধরনের অসাম্যাবস্থা তৈরি হয়। লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের দি ইনক্লুশন ইনিশিয়েটিভের প্রতিষ্ঠাতা ড. গ্রেস লর্ডান জানান, গবেষণা থেকে পাওয়া এ তথ্য তাকে অবাক করেনি। কারণ এখনো একজন নারী তার সমান শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন পুরুষের চেয়ে কম বেতন পান। গবেষণা প্রতিবেদনের লেখক ও আইএফএসের গবেষণাবিষয়ক উপপরিচালক মনিকা কস্টা বলেন, যদিও এখন নারীরা তাদের পুরুষ সহকর্মীদের তুলনায় অনেক ক্ষেত্রেই বেশি শিক্ষিত, তার পরও পরিস্থিতিতে কোনো পরিবর্তন নেই। এখনো নারী-পুরুষের মধ্যে শতাব্দী প্রাচীন বেতন বৈষম্য বিদ্যমান। কেবল বেতন নিয়েই নয়, কর্মঘণ্টা নিয়েও বড় ধরনের বৈষম্য রয়েই গেছে। গবেষকরা বলছেন, সন্তান পালন বা গৃহস্থালি কাজের জন্য নারীরা কোনো অর্থ পান না। ফলে তাদের কর্মঘণ্টা বাড়লেও তার জন্য উপার্জন বাড়ে না। এক্ষেত্রে সরকারকে এগিয়ে আসতে ও নীতিগত পরিবর্তনে ভ‚মিকা রাখতে আহ্বান জানিয়েছেন গবেষকরা। যেমন শিশুপালনের জন্য বাবার জন্যও ছুটির আইন করা। যাতে করে সন্তান পালনের ভার একা নারীর ওপর না পড়ে এবং পরিবারেও লিঙ্গ সমতা তৈরি হয়। বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ