Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

না দিতে পারায় ১০ লাখ ডোজ টিকা নষ্ট নাইজেরিয়ায়

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০৩ এএম

নাইজেরিয়ায় নভেম্বর মাসে ১০ লাখ ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা নষ্ট হয়েছে নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে না দিতে পারার কারণে। টিকা সরবরাহ ও প্রয়োগের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত দুইজনের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর দিয়েছে। আফ্রিকা মহাদেশের লোকসংখ্যা ১০০ কোটির বেশি। ওমিক্রনের মতো করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্টগুলোর ঝুঁকির মুখে এই মহাদেশটির সরকারগুলো আরও টিকা পাঠানোর জন্য বিভিন্নভাবে অনুরোধ জানাচ্ছে। ধনী দেশগুলোর তুলনায় টিকা দেওয়ার হারে মহাদেশটি অনেক পিছিয়ে আছে। ২০ কোটির বেশি মানুষের দেশ নাইজেরিয়া আফ্রিকার সবচেয়ে জনবহুল দেশ। কিন্তু দেশটির পূর্ণবয়স্ক জনসংখ্যার ৪ শতাংশেরও কম মানুষ এ পর্যন্ত পূর্ণ ডোজ টিকা পেয়েছেন বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডবিøউএইচও) জানিয়েছে। গত কিছুদিনে আফ্রিকার দেশগুলোতে টিকার সরবরাহ বাড়লেও নতুন সমস্যা দেখা দিয়েছে। আফ্রিকার অনেক দেশই দেখতে পাচ্ছে, যে পরিমাণ টিকা তারা পেয়েছে, তা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দেওয়ার মত সামর্থ্য তাদের নেই। আবার যেসব টিকা এসেছে, তার মধ্যে কিছুর মেয়াদও প্রায় ফুরিয়ে এসেছে। নাইজেরিয়ায় নভেম্বরে যে দশ লাখ ডোজ নষ্ট হয়েছে, সেগুলো অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি কোভিড টিকা। সেগুলো ইউরোপ থেকে পাঠানো হয়েছিল বলে জানিয়েছে রয়টার্স। ওই টিকাগুলো পাঠানো হয়েছিল কোভ্যাক্সের মাধ্যমে। টিকার ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিত করতে গ্যাভির নেতৃত্বাধীন জোট ও ডবিøউএইচওর এই প্ল্যাটফর্ম অনেকটাই নির্ভর করে অনুদানের ওপর। ওই সরবরাহের বিষয়ে জানেন, এমন একজনের বরাত দিয়ে রয়টার্স লিখেছে, নষ্ট হওয়া টিকার একটি অংশ নাইজেরিয়া যখন হাতে পেয়েছিল, তখন সেগুলোর মেয়াদ ছিল ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ। স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করেও সেগুলো সময়মতো ব্যবহার করতে পারেনি। মেয়াদ শেষ হওয়ায় ঠিক কত ডোজ টিকা নষ্ট হয়েছে, সরকারিভাবে এখন সেই হিসাব নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা। রয়টার্সকে তিনি বলেছেন, “যা কিছু করা সম্ভব নাইজেরিয়া তার সবই করেছে, কিন্তু মেয়াদ প্রায় ফুরিয়ে আসা টিকাগুলো নিয়ে তারা ঝামেলায় পড়েছে।” নাইজেরিয়ায় টিকা কর্মসূচি পরিচালনা করা ন্যাশনাল প্রাইমারি হেলথ কেয়ার ডেভেলপমেন্ট এজেন্সির এক মুখপাত্র বলেছেন, কত টিকা পাওয়া গেছে এবং ব্যবহার করা হয়েছে- সেই হিসাব আগামী কয়েকদিনের মধ্যে জানানো হবে। কিছু ডোজের মেয়াদ যে ফুরিয়ে গেছে, সে কথা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও বলেছে। তবে নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা জানাতে তারা রাজি হয়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, অক্টোবরে আরও ৮ লাখ ডোজের মেয়াদ ফুরানোর ঝুঁকি ছিল, কিন্তু সেগুলোর সব সময়মতো ব্যবহার করা গেছে। রয়টার্সের প্রশ্নের জবাবে দেওয়া এক বিবৃতিতে ডবিøউএইচও বলেছে, “যে কোনো টিকাদান কর্মসূচিতে ভ্যাকসিনের একটি অংশের অপচয়ের ঝুঁকি থাকে। আর কোভিড-১৯ এর প্রেক্ষিতটি একটি বৈশ্বিক ঘটনা।” ‘মেয়াদ প্রায় ফুরানো’ টিকা সরবরাহ করা যে একটি সমস্য হয়ে দাঁড়িয়েছে, ডবিøউএইচও সেটি স্বীকার করেছে। নাইজেরিয়ায় অল্প সময়ে যে পরিমাণ টিকা নষ্ট হওয়ার কথা বলা হচ্ছে, আফ্রিকার অনেক দেশ এত টিকা এখনও হাতেই পায়নি। তবে টিকা নষ্ট হওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। ইউরোপজুড়ে জার্মানি ও সুইজারল্যান্ডসহ বেশ কয়েকটি দেশ টিকা ডোজের সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে হিমশিম খাচ্ছে। জানুয়ারিতে ব্রিটেনের কর্মকর্তারা টিকার প্রায় ১০ শতাংশ অপচয় হবে বলে জানিয়েছিলেন। এপ্রিলে ফ্রান্সের স্বাস্থ্য মন্ত্রী স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানান, অ্যাস্ট্রাজেনেকার ২৫ শতাংশ, মর্ডানার ২০ শতাংশ ও ফাইজারের ৭ শতাংশ টিকা ওই সময়ে মধ্যে নষ্ট হয়েছে। রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ