বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
তথ্য প্রতিমন্ত্রী মো. মুরাদ হাসান ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে পড়ার সময় ছাত্রদল করতেন এমন দাবি করে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার এই বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন দলটির নেতাকর্মীরাও। ফেসবুকে এনিয়ে অনেকেই নানা মন্তব্য করেছেন।
স্বৈরাচার পতন ও গণতন্ত্র মুক্তি দিবস উপলক্ষে আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে ওই বক্তব্য দিয়ে সমালোচনার জন্ম দেন বিএনপির মহাসচিব।
সম্প্রতি খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মুরাদ হাসানের বক্তব্য–সংবলিত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। আজ মুরাদের সেসব বক্তব্যের সমালোচনা করতে গিয়েই তার অতীত রাজনীতি নিয়ে এ তথ্য দেন বিএনপির মহাসচিব। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দুর্ভাগ্যের কথা, সে নাকি ছাত্রদল করত। সে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক ছিল। পরবর্তীকালে সে ছাত্রলীগে যোগদান করেছে। ধিক্কার দিই আমি তাকে।’
অনুষ্ঠানেই তার এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান যুবদলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার আহ্বায়ক গোলাম মাওলা। তিনি মির্জা ফখরুলকে তার বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান। ডা. মুরাদ কখনো ছাত্রদল করেননি বলে চিৎকার করেন তিনি। এ সময় হলরুমে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। পরে অন্য নেতা–কর্মীরা পরিস্থিতি শান্ত করেন।
মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের সমালোচনা করে ফেসবুকে জৈষ্ঠ্য সাংবাদিক, কলামিস্ট ও গবেষক মেহেদী হাসান পলাশ লিখেছেন, ‘‘এইবার বুঝেন, এই বিএনপি নেতাদের কে চালায়? ফখরুল সাহেবের মত মহাসচিব থাকতে এই বিএনপিকে ডোবানোর জন্য অন্য কারো প্রয়োজন আছে?’’
ইউনুস মাহমুদ নিবির লিখেছেন, ‘‘জনাব মির্জা ফখরুল সাহেব নিজেই যদি এমন পরিস্থিতিতে শিষ্টাচার বহির্ভূত রাজনীতিবিদ মুরাদ হাসানকে নিজেদের প্রাক্তন দলনেতা হিসাবে পরিচয় করিয়ে দেন তাহলে এক্ষেত্রে ফখরুল সাহেবের রাজনৈতিক দূরদর্শিতা নিয়েই বিশেষজ্ঞদের সন্দেহ হবে।’’
হোসাইন মোহাম্মদ আনোয়ার লিখেছেন, ‘‘পুলিশ কিছু জুয়াড়ি ধরতে গেলে দৌড়ে এক জুয়াড়ি পুলিশের কাভার্ড ভ্যানে উঠে বসে পড়ে।
পুলিশ জিজ্ঞাসা করে কেন তুমি নিজে নিজে বসে পড়লে, সে বলে.. গতবার বসার জায়গা পায়নি তাই আগেই বসে পড়লাম। মির্জা সাহেবেরও একই অবস্থা আওয়ামী লীগ বলার আগেই উনি বলে দিচ্ছে।’’
মির্জা ফখরুলের বক্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করে সৈয়দ ইমরান হোসাইন লিখেছেন, ‘‘তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ ময়মনসিংহ মেডিকেলে পড়া অবস্থায় ছাত্রদল করতেন এবং সেই সময়ে ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক ছিলেন । পরে তিনি আওয়ামীলীগে যোগ দিয়েছেন!সারা দেশে যখন মুরাদকে নিয়ে তুমুল বিতর্ক চলছে তখন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাহেবের এই দাবী কি বিএনপিকে ডুবাল নাকি আওয়ামীলীগ ডুবল! এই আজিব তথ্যের জন্য মির্জা সাহেব অথবা তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ কি নন্দিত হবেন নাকি নিন্দিত!’’
কামাল পাসার মন্তব্য, ‘‘ফখরুল মিয়া, অবশেষে জাতি ভাইর আসল পরিচয় ফাঁস করে দিলেন?। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। মুরাদ নামক উদ্ভটকে নিয়ে আমরা এমনিতেই বিব্রত। এত বাচালতার পরেও কেন তাকে বহিষ্কার করেনা,তাই নিয়ে বিরক্ত ও চিন্তিত। তার দায়িত্বজ্ঞানহীন কথাবার্তায় বিরক্ত হয়ে আজ সকালে ও তাকে তুলোধুনো করে ফেইসবুকে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। এইমাত্র আপনার মাধ্যমে তার আসল পরিচয় পেয়ে নিশ্চিত হলাম।জাতের মাংস জাতে খায় তাতে অন্যের কি?।ফখরুল সাহেবের এই কথা যদি আওয়ামী লীগের কেউ বলতেন, এতক্ষণে সবাই হাঁ হাঁ রে রে করে মিথ্যা প্রমানের জন্য উঠে পড়ে লাগতেন।কিন্তু ফখরুল মিয়া তো দায়িত্ব শীল সত্যবাদী যুধিষ্ঠির, উনিতো কস্মিনকালেও মিথ্যা বলেনা। তাহলে প্রমাণিত সত্য যে মুরাদ একজন হাইব্রিড। এজন্যই তার অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ।’’
তবে আনওয়ার মহিন লিখেছেন, ‘‘মির্জা ফখরুল সম্ভবত সরকারকে একটা টোপ দিয়েছেন। সরকার এটা গিলবে আর আটকা পড়বে।
মুরাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ এবং সরকার কোনো একশনে যায় কিনা সেটাই এর উদ্দেশ্য। অযথা ভুল বুঝবেন না।’’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।