গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশ সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করছে। স্বাধীনতার পর আমরা সংবিধান পেয়েছি। সংবিধানে সকলের জন্য সমতা ও মানবিক মর্যাদার কথা বলা হলেও সকল নাগরিকের মানবিক মর্যাদা, সমতা এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় আমরা এখনো পিছিয়ে আছি। তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষ এখনো নানা বৈষম্যের শিকার। বৈষম্যের মূল কারণ নারীর প্রতি সহিংসতা। এসডিজির যে দর্শন- কাউকে পিছনে ফেলে নয় এই অঙ্গীকার বাস্তবায়নে এবং সবার মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা হবে বলেও প্রত্যাশা করেন তিনি।
আজ (সোমবার) বিকাল সাড়ে ৩টায় ‘নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ কর সমঅধিকার নিশ্চিত কর’’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উদ্যোগে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘প্রস্তাবিত অভিন্ন পারিবারিক আইন বিষয়ে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাথে মতবিনিময় সভা’য় তিনি একথা বলেন।
সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনটির সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, প্রস্তাবিত অভিন পারিবারিক আইন প্রণয়ণে আমরা যে প্রক্রিয়ায় মধ্যে আছি তাকে আলোচনার মাধ্যমে এগিয়ে নিতে হবে। সকলের নাগরিকের অধিকার বাস্তবায়নে সকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে, আদিবাসী নিজস্ব প্রথার সাথে যাতে সাংঘর্ষিক না হয় সেটিও বিবেচনায় রেখে তাদের মূলধারার নারী আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত হতে হবে।
এছাড়া সভায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ প্রস্তাবিত অভিন্ন পারিবারিক আইনের প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন লিগ্যাল এ্যডভোকেসি ও লবি পরিচালক অ্যাড. মাকছুদা আক্তার। সভায় আরো আলোচনা করেনআদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের সদস্য সচিব চঞ্চনা চাকমা, সমন্বয়কারী ফাল্গুনী ত্রিপুরা, বাংলাদেশ যুব ফোরামের মনিরা ত্রিপুরা, কাপেং ফাউন্ডেশনের সুজয়া ঘাগ্রা ও মহিলা পরিষদের জুনিয়র আইনজীবি সিনো মারমা।
সভায় লিগ্যাল এ্যডভোকেসি ও লবি পরিচালক অ্যাড. মাকছুদা আক্তার বাংলাদেশের প্রচলিত পারিবারিক আইন সম্পর্কে আলোচনা করেন। পাশাপাশি তিনি বিবাহ, বিবাহ বিচ্ছেদ, সন্তানের অভিভাবকত্ব, দত্তক, উত্তরাধিকার ও ভরণপোষণ- ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেন এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের প্রস্তাবিত অভিন্ন পারিবারিক আইন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
সভায় বক্তারা সকলকে পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তিচুক্তির ইতিহাস সম্পর্কে জানার আহবান জানিয়ে বলেন আইনটির অধীনে চট্টগ্রামে এখনও শাসন চলছে। এর রেজ্যুলেশন বাস্তবায়ন নিয়ে এখন আইনী লড়াই চলছে। এই আইন বাতিল করা হলে আদিবাসীদের জীবনে আরো প্রান্তিকতা নেমে আসবে। বক্তারা আদিবাসীদের মানবাধিকার ও সমতা প্রতিষ্ঠা জন্য কয়েকটি সুপারিশ প্রদান করেন। তারা বলেন প্রথাগত আইনকে সুরক্ষিত করতে হবে, আদিবাসীদের ভ’মির প্রকৃত মালিকানা নিশ্চিত করতে হবে, আদিবাসী নারীদের ক্ষমতায়নের জন্য তাদের যোগ্যতার মূল্যায়ন করতে হবে। মারমাসহ সকল অধিবাসীদের দের সম্পত্তি বন্টনের ক্ষেত্রে রেজিষ্ট্রেশন প্রক্রিয়া আইনের মাধ্যমে বলবৎ করতে হলে। আদমশুমারিতে আদিবাসীদের প্রকৃত সংখ্যা নিশ্চিত করতে হবে। পরিসংখ্যানপরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় ফান্ড বরাদ্দ করতে হবে। ভ’মি ও অর্থনীতিতে সমঅধিকার নিশ্চিত করতে আদিবাসীদের উৎপাদিত কৃষিপণ্যে ন্যায্যদাম নিশ্চিত করতে হবে,আদিবাসীদের জন্য অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়ন করতে হবে, আদিবাসী ও বাঙালিদের মধ্যে চলা সংঘর্ষ নিরসন করতে হবে, সকলের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
মত বিনিময় সভায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ- সভাপতি রেখা চৌধুরী, অধ্যাপক হান্নানা বেগম, লক্ষী চক্রবর্তী, লিগ্যাল এইড সম্পাদক সাহানা কবীর, প্রকাশনা সম্পাদক সারাবান তহুরা, সংগঠন সম্পাদক উম্মে সালমা বেগম, প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও পাঠাগার সম্পাদক এবং গণমাধ্যম সম্পাদক(ভারপ্রাপ্ত) রীনা আহমেদ, আন্তর্জাতিক সম্পাদক রেখা সাহা, ঢাকা মহানগর কমিটির লিগ্যাল এইড সম্পাদক শামীমা আফরোজ আইরীন এবং সংগঠনের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনের এ্যডভোকেসি ও লবি পরিচালক জনা গোস্বামী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।