পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এইচএসসি পরীক্ষা সামনে রেখে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত করেছেন রাজধানীর রামপুরা ব্রিজে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তবে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন তারা। গতকাল দুপুর ২টার দিকে অবরোধ কর্মসূচি শেষ করে আজ বৃহস্পতিবার শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে রাজধানীর রামপুরা থেকে শিক্ষার্থীরা ১১টি নতুন দাবি জানিয়েছেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, আজ বৃহস্পতিবার এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। পরীক্ষার কারণে আজ আর সড়ক অবরোধ করা হবে না। তবে বেলা ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের সামনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে তারা। মানববন্ধন হবে নিরাপদ সড়কের দাবি এবং শিক্ষার্থী মাইনুদ্দিনের মৃত্যুর প্রতিবাদে। পরবর্তী কর্মসূচি আজ বৃহস্পতিবার জানানো হবে।
তারা আরও বলেন, পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতে যেন কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য আমরা সড়ক অবরোধ করব না। পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগেই আমাদের কর্মসূচি শেষ করা হবে।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- সড়কে নির্মম কাঠামোগত হত্যার শিকার নাঈম ও মাঈনউদ্দিনের হত্যার বিচার করতে হবে। তাদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। গুলিস্তান ও রামপুরা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় পথচারী পারাপারের জন্য ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করতে হবে। সারা দেশে সব গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফপাস সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করে নিশ্চিত করতে হবে। হাফপাসের জন্য কোনো সময় বা দিন নির্ধারণ করে দেওয়া যাবে না। বর্ধিত বাস ভাড়া প্রত্যাহার করতে হবে। সব রুটে বিআরটিসির বাসের সংখ্যা বাড়াতে হবে। গণপরিবহনে ছাত্র-ছাত্রী এবং নারীদের অবাধ যাত্রা ও ভালো ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। ফিটনেস ও লাইসেন্সবিহীন গাড়ি এবং লাইসেন্সবিহীন চালককে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। গাড়ি ও ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে বিআরটিএর দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। সব রাস্তায় ট্রাফিক লাইট, জেব্রা ক্রসিং নিশ্চিত করাসহ জনবহুল রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যা বাড়াতে হবে। ট্রাফিক পুলিশের ঘুষ দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। বাসগুলোর মধ্যে বেপরোয়া প্রতিযোগিতা বন্ধে এক রুটে এক বাস এবং দৈনিক আয় সব পরিবহন মালিকের মধ্যে তাদের অংশ অনুয়ায়ী সমানভাবে বণ্টন করার নিয়ম চালু করতে হবে। শ্রমিকদের নিয়োগপত্র-পরিচয়পত্র নিশ্চিত করতে হবে। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করতে হবে। চুক্তি ভিত্তিতে বাস চালানো বন্ধ করে টিকেট ও কাউন্টারের ভিত্তিতে গোটা পরিবহন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। শ্রমিকদের জন্য বিশ্রামাগার ও টয়লেটের ব্যবস্থা করতে হবে। গাড়ি চালকের কর্মঘণ্টা একনাগাড়ে ৬ ঘণ্টার বেশি হওয়া যাবে না। প্রতিটি বাসে ২ জন চালক ও ২ জন সহকারী রাখতে হবে। পর্যাপ্ত বাস টার্মিনাল নির্মাণ করতে হবে। পরিবহন শ্রমিকদের যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
যাত্রী, পরিবহন শ্রমিক ও সরকারের প্রতিনিধিদের মতামত নিয়ে সড়ক পরিবহন আইন সংস্কার করতে হবে এবং এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। ট্রাক, ময়লার গাড়িসহ অন্যান্য ভারী যানবাহন চলাচলের জন্য রাত ১২টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দিতে হবে। মাদকাসক্তি নিরসনে সমাজজুড়ে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। চালক-সহকারীদের জন্য নিয়মিত ডোপ টেস্ট ও কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শহীদ কলেজের ছাত্র সিফাত সালাম বলেন, আমরা নিরাপদ সড়ক চাই। আর কেউ যাতে গাড়িচাপায় প্রাণ না হারায়, কোনো শিক্ষার্থী যাতে সড়কে পিষ্ট না হয় সেজন্য আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো। তবে এইচএসসি পরীক্ষার জন্য আজ মানববন্ধন কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি বলেন, পরীক্ষার্থীদের যাতে যাতায়াতে কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য আমরা সড়ক অবরোধ করবো না। পরীক্ষা শেষ হবার আগেই আমাদের কর্মসূচি শেষ করা হবে।
এদিকে, একই দাবিতে গতকাল রাজধানীর শান্তিনগর মোড়ে অবস্থান নেয় উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের শিক্ষার্থীরা। পুলিশ জানায়, দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ৪০-৫০ জন শিক্ষার্থী শান্তিনগর মোড়ে অবস্থান নেয়। এ সময় তারা বিভিন্ন দাবি তুলে ধরে। রমনা থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের শিক্ষার্থীরা শান্তিনগর মোড়ে অবস্থান নেয়। এ কারণে সেখানে যান চলাচল কিছুটা ব্যাহত হয়। কিছুক্ষণ পরে তারা আবার ফিরে যায়।
এছাড়াও গতকাল দুপুরে মতিঝিল শাপলা চত্বরে অবস্থান নিয়ে সড়ক বন্ধ করে দিয়ে আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা। এতে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় ছাত্ররা জানান, দাবি একটাই, নিরাপদ সড়ক চাই। তারা ‘জেগেছে জেগেছে ছাত্র সমাজ জেগেছে’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আমার ভাইয়ের কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে’- এমন বিভিন্ন সেøাগান দিচ্ছেন। রাস্তা বন্ধ করে শিক্ষার্থীরা গাড়ি ও মোটরসাইকেলের চালকের লাইসেন্স পরীক্ষা করে দেখেন। কারো লাইসেন্স না থাকলে গাড়ি আটক করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে দেয়। এদিকে শিক্ষার্থীরা রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় মতিঝিলের চার দিকের সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।