বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
নভেম্বর মাসে দক্ষিণাঞ্চলে করোনা সংক্রমন প্রায় শূণ্যের কোঠায় নামলেও মাসের শেষ দিনে ১১ জন আক্রান্তের মধ্যে বরিশাল মহানগরীতেই ৮ জনের দেহে করোনা সংক্রমনের খবর দিল স্বাস্থ্য বিভাগ। নভেম্বরের ৩০ দিনে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের ৬ জেলায় গত ১৮ মাসের সর্বনি¤œ ৬৬ জনে দেহে করেনা পজিটিভ শনাক্ত হলেও মাসের শেষ দিনেই সংখ্যাটা ছিল ১১। এমনকি মাসের প্রথম ১৫ দিনে মাত্র ২৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত হলেও শেষের ১৫ দিনে সংখ্যাটা দাড়ায় ৩৬ জনে। তবে এরমধ্যে ৩০ নভেম্বরের ১১ জন বাদ দিলে তা ছিল ২৫ জন।
গত প্রায় দেড় মাসে এ অঞ্চলে কোন মৃত্যু সংবাদ নেই। ইতোমধ্যে বরিশাল অঞ্চলে ৪৫ হাজার ৩৩১ জন মানুষ করেনা সংক্রমনের শিকার হলেও সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪৩ হাজার ৯৭৯ জন। সুস্থ্যতার হার প্রায় ৯৭.০২ ভাগ। কিন্তু করেনা সংক্রমন হ্রাসের সাথে এ অঞ্চল থেকে নুন্যতম স্বাস্থ্য বিধি অনুসরনও বিদায় হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও এখন ৫% মানুষও ফেসমাস্ক ব্যবহার করছেন না। স্বাস্থ্য বিধি অনুসরনে প্রশাসনের তরফ থেকেও কোন তাগিদ নেই। এমনকি কারো নাকেÑমুখে মাস্ক দেখলে এখন অনেকেই অবাক বিষ্ময়ে তাকিয়ে থাকেন!
এদিকে ইতোমধ্যে প্রায় ২২ লাখ মানুষের দেহে দুই ডোজের করোনা প্রতিষেধক ভ্যাকসিন প্রয়োগ সম্পন্ন হয়েছে বলে স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে। আর শুধু প্রথম ডোজ গ্রহন করেছেন ৩৬ লাখেরও বেশী মানুষ। ১২ বছরের নিচের জনসংখ্যা বাদ দিলে ভ্যাকসিন গ্রহনকারীর সংখ্যা ৩০%-এর ওপরে। তবে গত মাস দুয়েক ধরেই নমুনা পরিক্ষাও যথেষ্ঠ হ্রাস পেয়েছে। নভেম্বর মাসে এ অঞ্চলে নমুনা পরিক্ষার সংখ্যা ছিল মাত্র ৩ হাজারেরও কম। শনাক্তের হার এখন ১%-এর কিছু বেশী হলেও গড় শনাক্তের হার এখনো ২০.০২%। তবে গত জুলাইÑআগষ্ট মাসে শনাক্তের হার বরিশালে ৭৪% পর্যন্ত উঠে গিয়েছিল। গত মাসে অন্তত ১০ দিন এ অঞ্চলে করেনা শনাক্ত ছিল শূণ্যের কোঠায়।
অথচ জুলাইর শেষভাগে এ অঞ্চলে গড় সংক্রমন হার ছিল ২২.৬৫%। স্বাস্থ্য বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত জুলাই মাসের প্রথম ১৫ দিনে দক্ষিণাঞ্চলে ৬ হাজার ৭১০ জন করোনা রোগী শনাক্তের বিপরিতে মৃত্যু হয় ৫৭ জনের। আগষ্ট মাসের একই সময়ে শনাক্তের সংখ্যা ৭ হাজার ৩২৬ জনে উন্নীত হবার পাশাপাশি মৃত্যুর সংখ্যা দ্বিগুনেরও বেশী বৃদ্ধি পেয়ে ১২১ জনে পৌছে।
তবে আগষ্টের শেষভাগ থেকে করোনা সংক্রমন হার কিছুটা হ্রাস পেতে শুরু করে সেপ্টেম্বরের প্রথম ১৫ দিনে আক্রান্তের সংখ্যাটা প্রায় এক-দশমাংশে হ্রাস পায়। এসময়ে নতুন ৭৯১ জন আক্রান্তের বিপরিতে মৃত্যু হয় ১৮ জনের। অক্টোবরের প্রথমপক্ষে আক্রান্তের সংখ্যা আরো হ্রাস পায়। এসময়ে ১৪৪ জন আক্রন্তের মধ্যে মৃত্যু হয় মাত্র দুজনের। এমনকি ১৫ অক্টোবরের পরে গত দেড়মাসে এ অঞ্চলে করোনায় কোন মৃত্যু সংবাদ নেই স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে।
আর বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের মতে, গত ১৯ মাসে এ অঞ্চলে প্রায় ২ লাখ ২৫ হাজার ৬১০ জনের নমুনা পারিক্ষায় ৪৫ হাজার ৩৩১ জনের দেহে করেনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। সর্বশেষ হিসেবে এপর্যন্ত করোনা শনাক্তের গড় হার ২০.০৯% হলেও গতমাসে তা ১%-এর কিছু বেশী ছিল। অথচ গত জুলাই মাসে শনাক্তের হার ৭৪% পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়ছিল।
এ অঞ্চলের মধ্যে এখনো মহানগরী সহ বরিশাল জেলাই আক্রান্ত ও মৃত্যুর তালিকায় শীর্ষে। এ অঞ্চলের মাত্র ৬% জনসংখ্যার বরিশাল মহানগরীতে আক্রান্তের সংখ্যা ১১ হাজারেরও বেশী। ৩০ নভেম্বর এ অঞ্চলে আক্রান্ত ১১ জনের ৮জনই এ নগরীতে। নগরীতে ইতোমধ্যে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১০২ জনের। আর মহানগরী সহ বরিশাল জেলায় ৮০ হাজার ৬২২ জনের নমুনা পরিক্ষায় ১৮ হাজার ৩২৯ জনের দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। যারমধ্যে মারা গেছেন ২৩০ জন।
পটুয়াখালীতেও সর্বমোট ৪১ হাজার ২৪০ জনের নমুনা পরিক্ষায় শনাক্তের সংখ্যা ৬ হাজার ২৩৩। মারা গেছেন ১০৯ জন। দ্বীপ জেলা ভোলাতে ৩৪ হাজার ৮০৯ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৬ হাজার ৮৬৫ জনের দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৯১ জনের। পিরোজপুরে ২৩ হাজার ১৩৭ জনের নমুনা পরিক্ষায় শনাক্তের সংখ্যা ৫ হাজার ২৯২। মারা গেছেন ৮৩ জন।
দক্ষিণাঞ্চলে সর্বাধীক মৃত্যুহারের বরগুনাতে এপর্যন্ত ২৬ হাজার ৪৫১ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৩ হাজার ৯৫৭ জনের দেহে করেনা পজিটিভ শনাক্ত হলেও মারা গেছেন ৯৭ জন। গড় মৃত্যুহার ২.৪৫%। আর এ অঞ্চলের সবচেয়ে ছোট জেলা ঝালকাঠী করোনা শনাক্তে এখনো শীর্ষে। জেলাটিতে এপর্যন্ত ১৯ হাজার ৩৫১ জনের নমুনা পরিক্ষায় শনাক্তের সংখ্যা ৪ হাজার ৬৫৫। জেলাটিতে এখনো গড় শনাক্তের হার দক্ষিণাঞ্চলের সর্বোচ্চ ২৪.০৬%। এ জেলায় মৃত্যু হয়েছে ৬৯ জনের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।