যেভাবে ৫০০
ক্লাব ফুটবলে গোলের প্রায় সব রেকর্ডই তার দখলে। এবার সেই লিওনেল মেসি উঠে গেলেন আরেক উচ্চতায়। বার্সেলোনার জার্সি গায়ে ৫০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন মেসি।
ইমামুল হাবীব বাপ্পি : ২০০৭ সালের জুন। পেপ গার্দিওলাকে দেওয়া হলো ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা ‘বি’ দলের দায়িত্ব। ক্লাবটির প্রধান কোচ টিটো ভিলানোভার ডেপুটি হিসাবে। প্রথম পরশেই যুব দলকে সফলতায় মুড়ে দেন গার্দিওলা। পুরস্কারও মিলল নগদে। তৎকালীন বার্সা প্রেসিডেন্ট জন ল্যাপোর্তা ২০০৭-০৮ মৌসুম শেষে গার্দিওলাকে এগিয়ে দেন বার্সেলোনা মূল দলের কোচের আসনটি। এসময় তিনি স্থলাভিষিক্ত হন ডাচ কোচ ফ্রাঙ্ক রয়কর্ডের (২০০৩-২০০৮) স্থলে। যদিও সেসময় গার্দিওলা ক্লাব প্রেসিডেন্ট ল্যাপোর্তার প্রথম পছন্দ ছিলেন না বলেই শোনা যায়। এরপর কাতালান ক্লাবে কাটান সফলতায় মোড়ানো চারটি বছর। যে সময়টা গার্দিওলা পার করেছেন স্বপ্নের মতো। চার বছরে তার অর্জনের তালিকায় ২টি উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা, ৩টি লিগ শিরোপাসহ মোট শিরোপা সংখ্যা ১৪টি। এরপর আর্জেন্টাইন কোচ জেরার্ডো মার্টিনোর অধীনে ব্যার্থ একটা মৌসুম কাটায় বার্সেলোনা। তারপর কাতালান দলের দায়ীত্বে আসেন লুইস এনরিকে। মাঝে মার্টিনোর সময়টা বাদ দিলে, গার্দিওলা যেখানে শেষ করেন সেখান থেকেই যেন শুরু করেন এনরিকে।
বার্সার হয়ে ৪ বছরে ঈর্ষণীয় সাফল্যের পাশাপাশি কোন স্প্যানিশ দল হিসেবে বার্সাকে ২৮ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড উপহার দিয়েছিলেন গার্দিওলা। গল্পটা ২০১০-১১ মৌসুমের। ৫ বছর পর নিজের শততম ম্যাচে লেভান্তেকে ২-০ গোলে হারিয়ে গার্দিওলার সেই রেকর্ডে এবার ভাগ বসান এনরিকে। পরের ম্যাচেই ভালেন্সিয়ার মাঠে কোপা দেল রে’র সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হওয়ায় রেকর্ডেটি একার করে নেন বার্সার বর্তমান কোচ। কিন্তু তা স্বত্ত্বেও মৌসুমের ঠিক এই সময়ে এসে ২০১০-১১ মৌসুমের গার্দিওলার বার্সার সাথে বর্তমান বার্সার কি অদ্ভুদ মিল! ভ্যালেন্সিয়ার মাঠে শেষ ম্যাচটি বাদ দিয়ে দু’জনার ওই ২৮ ম্যাচে দেখা য়ায়, দু’জনেরই ২৩ জয়ের পাশাপাশি ড্র ৫টি ম্যাচে। গোল ব্যবধানেও প্রায় সমতা। এনরিকের ৮৬টি গোলের বিপরীতে গার্দিওলার ৮৫টি। ১০ ম্যাচে টানা জয়েও রয়েছে দু’জনের মধ্যে সমতা। আরো কত মিল।
এসব রেকর্ড নিয়ে অবশ্য একদম মাথা ঘামাচ্ছেন না এনরিকে। তাঁর লক্ষ্য যে আরো অনেক দূর! সেটা তার কথাতেই স্পষ্টÑ ‘এটা পরিসংখ্যানের চেয়েও বেশি কিছু। আমি লক্ষ্য পুরণে আগ্রহী যেখানে মৌসুম শেষেই পৌঁছানো যাবে।’ লক্ষ্যটা আরো স্পষ্ট করে ৪৫ বছর বয়সি জানান দেনÑ ‘সকল প্রতিযোগিতায় আমরা খুব ভালো অবস্থানে আছি, কিন্তু এখনো অনেক পথ বাকি।’ সেটাই তো স্বাভাবিক। গেল বার ট্রেবল জয়ের যে স্বাদ তিনি দলকে দিয়েছেন এবারো তার লক্ষ যে একই এ আর আলাদাভাবে বলার অপেক্ষা রাখে না। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলয় তাদের প্রতিপক্ষ আর্সেনাল। পা রেখেছে কোপা দেল রে’র ফাইনালে। স্পেনে তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদ কোপা দেল রে থেকে আগেই বিদায় নিয়েছে নিষিদ্ধ খেলোয়াড় খেলানোর দায়ে। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদও ছিটকে পড়েছে আসর থেকে। লা লিগায় নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যটলেটিকো মাদ্রিদের চেয়ে পরিষ্কার তিন পয়েন্টে এগিয়ে তার দল, হাতে এক ম্যাচ। লিগের এই দৌড়ে বেশ পিছিয়ে বার্সার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদ। এক ম্যাচ বেশি খেলেও পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থাকা বার্সেলোনার চেয়ে চার পয়েন্ট পিছিয়ে জিনেদিন জিদানের দল।
বার্সায় এনরিকের গল্পটাও রুপকথারই মত। এটি তার দ্বিতীয় মৌসুম। ফেলে আসা মৌসুমটা এতটায় সফলতায় মোড়ানো যে সেখানে হাতড়ালে মাত্র একটি হতাশাই খুঁজে পাওয়া যায়। ট্রেবলসহ জেতেন ৫টি শিরোপা। হতাশা হল এই যে, একটুর জন্য ক্লাবের হয়ে সম্ভ্যব্য সব ক’টি (৬টি) শিরোপা জিততে না পারা। যে রেকর্ড শুধুই গার্দিওলার। এবার কি সেই রেকর্ডের পথেই এগুচ্ছেন এনরিকে?
২৮ জয়ের অন্তমিল
লুইস এনরিকে পরিসংখ্যান পেপ গার্দিওলা
২৩ জয় ২৩
৫ ড্র ৫
৮৬ গোল ৮৫
১৪ হজম ১৪
সুয়ারেজ (৩০), মেসি (১৮) শীর্ষ গোলদাতা মেসি (২৩)
নেইমার (১৭) ভিয়া (১৫), পেদ্রো (১৩)
৭-০ (ভ্যালেন্সিয়া, কোপা দেল রে) বড় জয় ৮-০ (আলমেরিয়া, লা লিগা)
১০ টানা জয় ১০
সেভিয়া (২-১), লা লিগা সর্বশেষ হার হারকুলেস (২-০), লা লিগা
লা লীগা শীর্ষে, দলের অবস্থান লা লীগা শীর্ষে
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শেষ ষোল চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শেষ ষোল এবং
এবং কোপা দেল রে সেমিফাইনাল কোপা দেল রে সেমিফাইনাল
১৬ জয়, ১ ড্র ন্যু ক্যাম্পে ১৩ জয়, ২ ড্র
৭ জয়, ৪ ড্র সফরে ১০ জয়, ৩ ড্র
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।