রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
পঞ্চগড় জেলা সংবাদদাতা
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় চলমান প্রক্রিয়া চলছে সারা দেশে। তবে এতে স্বচ্ছতা নিয়ে নানা বির্তক চলছে। পঞ্চগড়ে হতদরিদ্র ও দুস্থদের ১০ টাকা কেজি দরের চাল প্রদানের তালিকা তৈরি ও বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তালিকা বাছাই কমিটির সদস্যদের স্বজনপ্রীতির কারণে দুস্থদের চাল চলে যাচ্ছে সচ্ছল পরিবার ও বিত্তবানদের ঘরে। এনিয়ে বিভিন্ন এলাকার দুস্থদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। দুস্থদের জন্য বরাদ্দকৃত ১০ টাকা কেজি দরের চাল বিতরণে সরকারের খাদ্যবান্ধব আলোচিত এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে। পঞ্চগড় সদর ইউনিয়নের ডুডুমারী আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৫০ ভূমিহীন পরিবারের মধ্যে ১০ টাকা কেজি দরে চালের কার্ড পেয়েছেন মাত্র পাঁচজন। বাদ দেওয়া হয়েছে ওই এলাকার আফজাল হোসেন নামে এক দুস্থ মুক্তিযোদ্ধাকেও। দুস্থদের জন্য বরাদ্দকৃত এই চাল পেয়েছেন পাশের গ্রামের করিম, আতাউরসহ পাকা বাড়ির মালিক আর প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীরা। পাশের গ্রামের মাহানপাড়ার পাকা বাড়ির মালিক তহিদুল ইসলাম বিশেষ কারণে এই চালের কার্ড পেলেও প্রতিবেশী সত্তরোর্ধ্ব জঙ্গলু মোহাম্মদের ভাগ্যে জোটেনি ১০ টাকা কেজি দরের চাল। শুধু বিত্তবান তহিদুল নয়, ওই এলাকার সচ্ছল ব্যবসায়ী আনারুল ইসলাম, সহিদুল ইসলাম, আজুল প্রধান, আবুল প্রধান নামে কয়েকজন এই চাল উত্তোলন করেছেন। সদর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে আতাউর রহমান নামে এক নেতা তার পরিবারের ১১ জনের নামে কার্ড করিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। সঙ্গত কারণেই বঞ্চিত হয়েছেন স্থানীয় প্রকৃত দুস্থ ও হতদরিদ্র পরিবারের সদস্যরা। ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ’ সেøাগানে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় সম্প্রতি সারাদেশের মতো পঞ্চগড়েও হতদরিদ্র ও দুস্থদের জন্য ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিতরণ শুরু হয়। এই কর্মসূচির আওতায় চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর এবং আগামী বছরের মার্চ ও এপ্রিল এই পাঁচ মাস জেলার প্রায় ৪৭ হাজার পরিবার ১০ টাকা কেজি দরে মাসে ৩০ কেজি করে চাল পাবে। এজন্য জেলার পাঁচ উপজেলা ও দুই পৌরসভায় ৯২ জন ডিলার নিয়োগ করা হয়েছে। পঞ্চগড় সদর উপজেলার ৩ নম্বর সদর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি গছির উদ্দিন বলেন, আমার এখানে প্রকৃতভাবে যারা এই কার্ড পাওয়ার যোগ্য, তাদের বঞ্চিত করে উল্টোটা করা হয়েছে। দুস্থদের এই চালের কার্ড পেয়েছেন সচ্ছল ব্যবসায়ী ও বিত্তবানরা। একই ইউনিয়নের ডুডুমারী এলাকার জসিউল ইসলাম বলেন, দেওয়ানহাটের বড় দোকানদার করিম, একই এলাকার আতাউর রহমান, তহিদুল ইসলামসহ অনেক সচ্ছল পরিবারের সদস্য ১০ টাকা কেজি দরে চালের কার্ড পেয়েছেন। কিন্তু দুস্থ মুক্তিযোদ্ধা আফজাল হোসেন ওরফে টেডি মুন্সিসহ প্রকৃত গরিব মানুষগুলো এই চালের কার্ড পাননি। পঞ্চগড় সদর উপজেলার ৩ নম্বর সদর ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম নিজেকে তালিকা প্রণয়ন ও বাছাই কমিটির একজন সামান্য সদস্য উল্লেখ করে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তালিকা নিয়ে ওঠা অভিযোগের কথা স্বীকার করে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার লায়লা মুনতাজেরী দীনা বলেন, ইউনিয়ন কমিটি কর্তৃক যে তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে, তা পুনঃনিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানসহ কমিটির আহ্বায়কদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে তালিকা সংশোধনের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। হতদরিদ্রদের জন্য সরকারের খাদ্যবান্ধব এই কর্মসূচির আসল উদ্দেশ্য যাতে ব্যাহত না হয়, এজন্য সবরকম চেষ্টা করা হচ্ছে।সম্প্রতি চাকলা হাটে ও এনিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। সদর কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়নের রাজু (৫৫) ও সাবুল (৪৫) জানান, চছপাড়া গ্রামের নছিম উদ্দীন কিভাবে ১০ টাকা দরের কার্ড পায়। তার এক ছেলে একজন চাকরিজীবী এবং তাদের পাকা বাড়ি রয়েছে। আরো একজনের নাম তারা বলেন, তার গ্রাম হচ্ছে ওই একই গ্রামের মো. সাহেব আলীর এক ছেলে সেনা সদস্য অপর এক ছেলেও চাকরিজীবী। তারপরেও তিনি কার্ড পেয়েছেন। তারা দুজনেই জানান, আমরা গরিব কিন্তু মেম্বার আমাদের নামের তালিকা দেননি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।