যেভাবে ৫০০
ক্লাব ফুটবলে গোলের প্রায় সব রেকর্ডই তার দখলে। এবার সেই লিওনেল মেসি উঠে গেলেন আরেক উচ্চতায়। বার্সেলোনার জার্সি গায়ে ৫০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন মেসি।
আবদুল ওয়াজেদ কচি
এ.কে.এম আনিছুর রহমান। ছোটবেলা থেকেই খেলা নিয়ে মেতে থাকতে পছন্দ করেন তিনি। বাল্যবন্ধুদের সাথে মাঠ কাপিয়ে বেড়াতেন এগ্রাম থেকে ওগ্রামে। সেই থেকেই চিন্তা জেলার ক্রীড়াঙ্গনকে এগিয়ে নেয়ার। যা স্বপ্ন দেখেন, তা বাস্তবে রূপ দিতে কখনও পিছপা হন না তিনি। তাইতো গত কয়েক বছর তারই উদ্যোগে সাতক্ষীরায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলের ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় ইভেন্ট চায়না-বাংলা ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। শুধুই কি ক্রিকেট? কাবাডি, ফুটবল, ভলিবল কিংবা অ্যাথলেটিক্সের প্রত্যেকটি ইভেন্টেই রয়েছে তার সক্রিয় পদচারণা। আর এবার ক্রীড়াঙ্গনে গতি ফেরাতে সাতক্ষীরা জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচন-২০১৬ এ সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে অংশ নিচ্ছেন তিনি।
সাতক্ষীরা পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের পারকুখরালী গ্রামের ব্যাংকার আজিজুর রহমানের বড় ছেলে আনিছুর জন্মগ্রহণ করেন ১৯৬৫ সালের ২ নভেম্বর। সাতক্ষীরা মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পারকুখরালী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা শেষে ১৯৮০ সালে পলাশপোল হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন তিনি। ১৯৮৬ সালে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি ও ১৯৮৮ সালে স্নাতক শেষ করেন আনিছুর রহমান।
এরপর ব্যবসায়ে মনোনিবেশ করেন তিনি। মৎস্য ঘের থেকে শুরু করে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে একে একে গড়ে তুলেছেন বরসা ট্যুরিজম, বরসা রিসোর্ট, চায়না-বাংলা শপিং কমপ্লেক্স, চায়না-বাংলা প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ ও চায়না-বাংলা ফুডস। এবার তিনি চায়না-বাংলা হাসপাতাল নামে সাতক্ষীরায় নির্মাণ করছেন অত্যাধুনিক হাসপাতাল। তাইতো ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে একের পর এক সফলতা পেয়েছেন তিনি। চায়না-বাংলা ক্রিকেট টুর্নামেন্টে দর্শকে পরিপূর্ণ হয়েছে দর্শক শূন্য মাঠ।
সাতক্ষীরা জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচন ২০১৬-এ জেলা সম্মিলিত ক্লাব ঐক্য পরিষদ মনোনীত সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী, কুখরালী আদর্শ যুব সংঘের কর্মকর্তা, বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক আনিছুর ব্যবসায়িক সূত্র ধরেই বঙ্গবন্ধু ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, জেলা প্রশাসক কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট, ইসু মিয়া অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতা, কাবাডি, ভলিবলসহ সাতক্ষীরায় অনুষ্ঠিত প্রায় সব ক্রীড়া ইভেন্টে নিয়মিত পৃষ্ঠপোষকতার পাশাপাশি স্থানীয় ক্রীড়া সংগঠন ও ক্লাবগুলোকেও নিয়মিত সহযোগিতা করেন।
সমালোচকদের বন্ধুভেবে ভুল থেকে শিক্ষা নেয়া এ.কে.এম আনিছুর রহমান ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য চায়না-বাংলা টুর্নামেন্টের পরবর্তী আসরকে করতে চান আরও জাঁকজমকপূর্ণ। এরপরই তার লক্ষ্য আন্তঃজেলা ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজন।
যুব সমাজের বর্তমান অবক্ষয় নিয়ে উদ্বিগ্ন এ.কে.এম আনিছুর রহমান পরিবর্তনে অঙ্গীকারাবদ্ধ। তিনি মনে করেন, প্রয়োজনীয় উদ্যোগের অভাবেই যুব সমাজ ক্রীড়াঙ্গন থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। তাদেরকে আবার মাঠে ফেরাতেই তার সকল উদ্যোগ। একান্ত আলাপচারিতায় এ.কে.এম আনিছুর রহমান জানান, তার স্বপ্ন জেলায় একটি পূর্ণাঙ্গ ক্রীড়া কমপ্লেক্স ও একটি মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণের পাশাপাশি উপজেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যায়েও ক্রীড়া উদ্যোগ ছড়িয়ে দেয়া। সন্ত্রাস ও মাদকাসক্তি থেকে যুব সমাজকে মাঠে ফেরানো।
২৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে জয়ী হতে পারলে সাজেক্রীসকে ডিজিটালাইজড করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটি ওয়েব পোর্টাল নির্মাণ করে সেখানে জেলার ক্রীড়া সংগঠক ও ক্রীড়াবিদদের যাবতীয় তথ্য সংযুক্ত করা হবে। খেলোয়াড়দের ফিটনেস রক্ষায় একটি জিমনেশিয়াম তৈরির উদ্যোগ নেয়া হবে। গ্রাম পর্যায়ে থাকা প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের বাছাই করে আনা হবে।
নিয়মিত ইভেন্টগুলো সচলে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, খেলোয়াড় তৈরিতে নিয়মিত ইভেন্টগুলোর সচল রাখার কোন বিকল্প নেই। চেষ্টা করা হবে আর্থিকভাবে দুর্বল ক্রীড়াবিদদের বিশেষভাবে সহযোগিতা করারও। তিনি বলেন, বাঙালির ঐতিহ্যবাহী ও লোকজ খেলাগুলো পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে বিলুপ্তির পথে। এগুলো টিকিয়ে রাখা দরকার।
এ.কে.এম আনিছুর রহমান মনে করেন, সরকার খেলাধুলার উপর বিশেষ নজর দিয়েছে। বাড়িয়েছে বরাদ্দও। একটু আন্তরিক হয়ে চেষ্টা করলেই যুব সমাজকে সন্ত্রাস ও মাদকাসক্তি থেকে মাঠে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এজন্য সকলের দোয়া প্রত্যাশী তিনি।
এদিকে, জমে উঠেছে সাতক্ষীরা জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচন। আগামী ২৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে কার্যনির্বাহী পরিষদের ২৭টি পদের বিপরীতে দুটি প্যানেলের ৫৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সকাল ১০টা থেকে ৩টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে সাতক্ষীরা অফিসার্স ক্লাবে নির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলবে। সর্বমোট ১০৩ জন ভোটারের এই নির্বাচনে সহ-সভাপতি পদে জেলা ক্লাব ঐক্য পরিষদ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন আশরাফুজ্জামান আশু, মেহেদী হাসান, মুজিবর রহমান, কবীর উদ্দীন আহমেদ এবং ক্রীড়া ও স্টেডিয়াম উন্নয়ন পরিষদ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন হাসনে জাহিদ জজ, বদরুল ইসলাম খান বদু, ফিরোজ আহম্মেদ, মিজানুর রহমান চৌধুরী। সাধারণ সম্পাদক পদে জেলা ক্লাব ঐক্য পরিষদ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন এ.কে.এম আনিছুর রহমান এবং ক্রীড়া ও স্টেডিয়াম উন্নয়ন পরিষদ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন শেখ নিজাম উদ্দিন।
অন্যান্য পদে জেলা ক্লাব ঐক্য পরিষদ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন আব্দুল মোমেন খান চৌধুরী সান্টু (অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক), আহম্মদ আলী সরদার (যুগ্ম সম্পাদক), শেখ আব্দুল কাদের (যুগ্ম সম্পাদক) ও শাহ আলম হাসান শানু (কোষাধ্যক্ষ) এবং ক্রীড়া ও স্টেডিয়াম উন্নয়ন পরিষদ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন মাহমুদ হাসান মুক্তি (অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক), তৈয়েব হাসান বাবু (যুগ্ম সম্পাদক), সাইদুর রহমান শাহীন (যুগ্ম সম্পাদক), কাজী শফিউল আজম (কোষাধ্যক্ষ)।
এছাড়া নির্বাচনে নির্বাহী সদস্য পদে জেলা ক্লাব ঐক্য পরিষদের প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন সৈয়দ হায়দার আলী তোতা, কাজী কামরুজ্জামান, রুহুল আমিন, আ.ম আক্তারুজ্জামান মুকুল, হাবিবুর রহমান হবি, মনিরুল ইসলাম, আব্দুল মান্নান, ইকবাল কবির খান বাপ্পী, মির্জা মনিরুজ্জামান কাকন, ইদ্রিস আলী, শেখ রফিকুর রহমান লাল্টু, হাফিজুর রহমান খান বিটু, মীর তাজুল ইসলাম রিপন, মো. কবিরুজ্জামান রুবেল, স ম সেলিম রেজা, সৈয়দ জয়নুল আবেদীন জসি, কাজী সেতারা জামান ও ফারহা দীবা খান সাথী এবং ক্রীড়া ও স্টেডিয়াম উন্নয়ন পরিষদের প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন শেখ তৌহিদুর রহমান ডাবলু, শেখ আশরাফ আলী, মোহাম্মাদ আবু সায়ীদ, রইস উদ্দীন সরদার, শেখ নাসেরুল হক, মোমীন উল্লাহ মোহন, শেখ মারুফুল হক, শেখ হেদায়েতুল ইসলাম, খন্দকার আরিফ হাসান প্রিন্স, খন্দকার বদরুল আলম, ওয়াসিউদ্দীন খান পিপুল, আলতাফ হোসেন, মিজানুর রহমান মিনুর, শেখ জাহিদ হাসান, জাহিদুর রহমান খান চৌধুরী, শেখ ইকবাল আলম বাবু ও মমতাজুন নাহার ঝর্ণা।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জেলা প্রশাসক পদাধিকার বলে সাতক্ষীরা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।