পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিদেশে অর্থ পাচার অব্যাহত রয়েছে দাবি করে তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও বিএনপি’র সংসদ সদস্যরা। তারা ঋণ খেলাপীদের সঠিক তথ্য প্রকাশ ও পাচারকারীদের চিহ্নিত করতে দ্রুত একটি ব্যাংক কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন। জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল টাকা পাচারকারীদের তালিকা দেওয়ার জন্য বিরোধী দলের সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান।
গতকাল সংসদ অধিবেশনে ‘ব্যাংকার সাক্ষ্য বহি বিল-২০২১’ বিল পাসের আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এ সব কথা বলেন। দু’পক্ষের বক্তব্য চলাকালে অধিবেশনে কিছুটা উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে বিলের উপর জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব নিয়ে আলোচনাকালে বিরোধী দলীয় দস্যরা অভিযোগ করেন, বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। খেলাপি ঋণ ছাড়িয়েছে এক লাখ কোটি টাকার বেশি। এসব বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর সুনির্দ্দিষ্ট বক্তব্য তারা জানতে চান।
জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, অনেকভাবে বলেছেন দেশ থেকে টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। আমি আপনাদের বলছি, যারা পাচার করে তাদের তালিকা আমাকে দেন। আমি তো পাচার করি না। আমি বিশ্বাস করি আপনারাও পাচার করে না। সুতরাং পাচার কে করে, আমি জানবো কেমন করে, যদি আপনারা না দেন। এ সময় বিরোধী দলের সদস্যরা অর্থমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য কথা বললেও মাইক বন্ধ থাকায় সেই বক্তব্য শোনা যায়নি। তবে অর্থমন্ত্রী বলেন, আপনারা বলেন। আপনারা লিস্ট দেন, পাচারকারীদের। বারবার আমি বলেছি, আমি জানি না। আমাকে জানিয়ে দেন।
বিরোধী দলের বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, অর্থনীতি এখন একটি চ্যালেঞ্জিং সময় অতিক্রম করছে। সারাবিশ্বের অর্থনীতি ৩ শতাংশ কনট্র্যাকশন হয়েছে। কিন্তু দেশে এটি হয়নি। বলা হচ্ছে, ২০৩৫ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতির পরিমাণ হবে সারাবিশ্বে ২৫তম। অথচ আপনারা যেভাবে বলেন মনে হয়- দেশে কোন অর্থনীতি নেই, ব্যাংকিং খাত নেই, দেশে কিছুই নেই। কিন্তু কিছুই না থাকলে আমরা উন্নতি করছি কীভাবে? এগুলো বাদ দিয়ে আমাদের প্রবৃদ্ধি আসছে কীভাবে?
অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকের সংখ্যা বেড়েছে, গ্রাহক বেড়েছে, আমানতও বেড়েছে। খেলাপি ঋণের পরিমাণ দেশ সৃষ্টির পর থেকে সবচেয়ে কম এখন। তিনি আরো বলেন, একটি দেশের অর্থনীতির মূল চালক হলো সেদেশের ব্যাংকিং সেক্টর। সারাবিশ্বের অর্থনীতি যখন টালমাটাল অবস্থা সবাই কিন্তু বলছেন আমরা ভাল করছি। আপনার কাছে যদি কোনও প্রমাণ থাকে যে আমরা তাদের চাইতে অর্থনৈতিকভাবে পেছনে আছি, তাহলে ইন দ্যাট কেস ইউ কাম টু মি, আই উইল গেট ইউ টু দ্যা সল্যুশন।
এরআগে আলোচনায় অংশ নিয়ে ব্যাংক কমিশন গঠনের প্রস্তাব দেন জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি বলেন, খেলাপি ঋণের পরিমাণ একলাখ কোটি টাকার বেশি। কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে রাজনীতিবিদ, আমলাসহ অনেকে টাকা পাচার করেছেন বলে অভিযোগ আছে। এই অভিযোগে আমলা-রাজনীতিবিদদের বদনাম হয়। টাকা পাচার হয় কিনা, হলে কারা করে এটা বের করতে দ্রুত একটি ব্যাংক কমিশন গঠন করতে হবে।
একই আলোচনায় বিএনপির হারুনুর রশীদ বলেন, অর্থমন্ত্রীকে আমরা অনেক প্রশ্ন করি, তিনি উত্তর দেন না। ঠান্ডা মাথায় এড়িয়ে যান। ই-কমার্সের নামে লুটপাট হচ্ছে। হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। অথর্মন্ত্রী বলছেন, দায় তার না। বাণিজ্যমন্ত্রী বলছেন, দায় তার না। তাহলে কে দায় নেবে? এটা স্পষ্ট করার আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপির মোশাররফ হোসেন বলেন, রাঘব বোয়ালরা হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে মেরে দিয়ে আয়েশি জীবন যাপন করছে। অথচ গরীব মানুষ ঋণ পায় না। অল্প টাকার ঋণখেলাপির জন্য কৃষকদের জেলে যেতে হয়। কিন্তু হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে সরকার কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
জাতীয় পার্টির রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, ব্যাংকে অনিয়ম-দুর্নীতি, পাচার হলে কত টাকা পাচার হয়েছে এসব বিষয়ে জানানো উচিত। এজন্য তিনিও একটি ব্যাংক কমিশন গঠনের দাবি জানান।
বিএনপির রুমিন ফারহানা বলেন, তিনি (অর্থমন্ত্রী) কথা কম বলেন বললে ভুল হবে। ওনি কথা বলেনই না প্রায়। কাগজে কালমে মন্দ ঋণ এক লাক কোটি টাকার মতো। বিশেষজ্ঞরা বলেন, কার্পেটের নিচে লুকিয়ে রাখা ঋণ হিসাব করলে সেটা আসলে মোট সাড়ে চার লাখ কোটি টাকা। তিনি আরো বলেন, রাজনীতিবিদ, আমলারা টাকা পাচার করেন, এমন শোনা যায়। কারা কত পাচার করে অর্থমন্ত্রী যদি পরিষ্কার চিত্র দেন তাহলে রাজনীতিবিদ ও সৎ আমলারা মুক্ত থাকতে পারেন।
অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে জাতীয় পার্টির রওশন আরা মান্নান বলেন, কথা কম বলা ভালো। কিন্তু কিছুক্ষেত্রে কথা বলতে হয়। অর্থমন্ত্রী যদি মাঝেমধ্যে খুলে বলেন ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিচ্ছেন তা হলে মানুষ জানতে পারে। নাহলে মানুষের মধ্যে সন্দেহ তৈরি হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।