মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ছেলে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে মৃত্যুর দিকে। এই অবস্থায় হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারছেন না বাবা। মাত্র ২ বছর বয়স হাওয়াংয়ের। বেঁচে থাকার সম্ভাবনা আর মাত্র কয়েক মাস। বিরল জেনেটিক রোগে আক্রান্ত চীনা শিশু। ছেলে বাঁচিয়ে রাখতে যে ওষুধের প্রয়োজন সেগুলি কোনওটাই পাওয়া যাচ্ছে না চীনে। কোভিড ১৯ মহামারির কারণে চীনা সীমান্ত পুরোপুরি বন্ধ। সেই কারণে ছেলের চিকিৎসার জন্য কোথাও দুধের শিশুকে নিয়ে যেতে পারছেন না বাবা। এই অবস্থায় বাবা জুওয়েই ছেলেকে বাঁচাতে বাড়িতেই তৈরি করেছেন একটি ল্যাবরেটরি। যেখানে তিনি ছেলেকে বাঁচানোর জন্য ওষুধ তৈরি করছেন।
চীনের কুনমিং-এর বাসিন্দা জুওয়েই। বহুতলের একটি অ্যাপাটমেন্টে তার বাস। ৩০ বছরের জুওয়েই জানিয়েছেন ছেলেকে বাঁচাতে হবে। এটাই ছিল তার কাছে সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ। তাই অন্যকিছু আর ভাবার সময় ছিল না। তাই বাড়িতেই একটি পরীক্ষাগার তৈরি করেছেন তিনি। হাওয়াং মেনকেস সিনড্রোমে ভুগছে। এটি একটি জেনেটিক ব্যাধি। এটি স্নায়ুর রোগ। এই রোগে আক্রান্তদের মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশ বাধা পায়। এ রোগে আক্রান্তরা খুব কম সময়ই তিন বছরের বেশি বাঁচে।
জুওয়েই কিন্তু খুব বেশি পড়াশুনা করেনি। হাইস্কুলের ডিগ্রি রয়েছে তার হাতে। ছেলে অসুস্থ হওয়ার আগে একটি অনলাইন ব্যবসা চালাত সে। কিন্তু ছেলে অসুস্থ হওয়ার পর সেই ব্যবসাও প্রায় লাটে উঠেছে। কারণ তার ছেলে নড়াচড়া করতে পারে না। কথাও বলতে পারে না। তাই ছেলের সবকাজই নিতে হাতে করেন বাবা।
ছেলে অসুস্থ হওয়ার পরই রোগ নিয়ে পড়াশুনা করেছিলেন জুওয়েই। তারপর থেকেই ওষুধ তৈরির পরিকল্পনা করেন তিনি। একাধিক সাইট ঘেঁটে জানতে পারেন কী কী প্রয়োজন ছেলের ওষুধের জন্য। কিন্তু সব উপকরণ চীনে পাওয়া যায়নি। সেগুলি তিনি ইতিমধ্যেই অবশ্য আনিয়েছেন বিদেশ থেকে। কিন্তু তার এই উদ্যোগ একদনই সমর্থন করেনি তার পরিবার। নির্দিধায় জানিয়েছিল পরিবার ও বন্ধুরা তাঁকে সাহায্য করেনি। কিন্তু হতোদম্যো হননি জু। তিনি আরও জানিয়েছেন রোগসংক্রান্ত সাইটগুলির অধিকাংশই ছিল ইংরাজিতে। সেগুলি অনুবাদ করার জন্য সফ্টওয্যার ব্যবহার করেছিলেন তিনি। তা পড়েই জু নিজের পরীক্ষাগারেই তৈরি করেন ওষুধ।
জু এখন হাওয়াংকে প্রতিদিনই ঘরের তৈরি ওষুধ দেন। এই ওষুধের মাধ্যমেই ছেলের শরীরে প্রবেশ করে তামা। যা শিশুটির স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। বর্তমানে জু দাবি করেছেন ওষুধ দেওয়ার দু সপ্তাহ পরেই তিনি ছেলের রক্ত পরীক্ষা করেছেন। সেখানে দেখা গেছে ছেলের রক্ত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে। শিশুটি এখনও কথা বলতে পারে না। কিন্তু সে বাবার স্পর্শ অনুভব করে আর সাড়াও দেয়। স্ত্রী বর্তমানে তাঁদের পাঁচ বছরের মেয়েকে নিয়ে শহরের অন্যদিকে রয়েছেন।
জু জানিয়েছেন, ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলো ইতিমধ্যেই তার তৈরি ঔষুধের প্রতি আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছে। যদিও এই রোগের ওষুধের তেমন চাহিদা নেই। কারণ খুব অল্প মানুষই এই রোগে আক্রান্ত হয়। জু’র বাবা জানিয়েছেন, ছেলের এই উদ্যোগকে প্রথমে তিনি পাগলামির ভেবেছিলেন। কিন্তু তিনি দেখেন ৬ সপ্তাহের মধ্যেই জু তার প্রথম একশিসি কপার হিস্টিডিন তৈরি করেছে। প্রথমে খরগোশ, তারপর নিজের শরীরে ওষুধ প্রয়োগ করে। সবদিক থেকে আশ্বস্ত হলে ওষুধ দিতে শুরু করে ছেলেকে। ধীরে ধীরে ডোজ বাড়াতে থাকে। তবে জু স্বীকার করেছেন, তার তৈরি ওষুধ রোগকে কমিয়ে রাখতে পারবে, রোগ নিরাময় করতে পারবে না। তার জন্য প্রয়োজন জিন থেরাপি। সূত্র : এশিয়ানেট নিউজ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।