মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের জন্য ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ-এর দুর্নীতি ও বিচারহীনতা দায়ী বলে মনে করেন ভারতের মানবাধিকারকর্মী কিরিটি রায়। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের সরকার থেকে প্রতিবাদ না জানানোরও কড়া সমালোচনা করেছেন তিনি।
সীমান্তে হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনতে ২০১১ সালে বিজিবি-বিএসএফ চুক্তি করে। বিভিন্ন সময় দুই দেশের সরকারি পর্যায়ের বৈঠক থেকেও প্রতিশ্রুতি আসে। তারপরও কেন একের পর এক সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের ঘটে চলছে?
এই নিয়ে ‘ডয়চে ভেলে খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়’ ইউটিউব টকশোতে আলোচনায় অংশ নেন বাংলার মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের (মাসুম) সচিব কিরিটি রায়। সীমান্তে হত্যার বিভিন্ন পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি জানান, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফ এর গুলিতে যত মানুষ মারা যায় তার আশি শতাংশই ভারতীয়, বিশ শতাংশ বাংলাদেশি। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০০১ থেকে ২০১০ পর্যন্ত এক হাজার মানুষকে বিএসএফ হত্যা করেছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর ২০১৪ থেকে বছরে গড়ে দেড়শো জন মারা যাচ্ছেন এই সীমান্তে। তিনি বলেন, ‘‘ভারতীয় আইনে গরু পাচারকারী, চোরা চালানকারী কাউকে মারার এখতিয়ার নেই, চড় মারার এখতিয়ারও বিএসএফ এর নেই। বিএসএফ অ্যাক্ট ১৯৬৮ এ নেই। ’’
আলোচনায় অংশ নেওয়া আরেক অতিথি পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির জেনারেল সেক্রেটারি সায়ন্তন বসুর দাবি, ‘‘ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ছয়মাস, একবছর পরপর এই ধরনের ঘটনা ঘটে। তখন খবরের কাগজে, পত্রপত্রিকায় আসে এটা আর হবে না। কিন্তু কেন হয় তার কারণ এমন নয় ভারত সরকারের কথা বিএসএফ শোনে না বা বিএসএফ নিজের ইচ্ছেয় করে। অনেক সময় পরিস্থিতির কারণে হয়।... কারণ ভারত বাংলাদেশের সীমানা অনেক কারণে খুব উত্তেজনাপূর্ণ থাকে।’’
তার দাবি, যারা মারা যাচ্ছেন তারা চোরাচালানের জন্যই মারা যাচ্ছেন। বিএসএফ সেখানেই গুলি করছে যেখানে তারা আক্রান্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘বিএসএফ এবং বিডিআর (বিজিবি) উভয় সংস্থায়ই চোরাচালানকে কেন্দ্র করে টাকা পয়সার লেনদেন হয়। বিএসএফও সেখান থেকে মুক্ত নয়, বিজিবিও মুক্ত নয়। তবে সেটাই একমাত্র সীমান্তে গুলি চালানোর কারণ নয়।’’
তার এই যুক্তি মানতে নারাজ কিরিটি রায়। পাল্টা যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘একটা গরু রাজস্থান থেকে যেটা আসে, হরিয়ানা থেকে যেটা আসে সেটা আকাশ দিয়ে উড়ে আসে না। বনগাঁ বর্ডার বলছি, হিঙ্গল বর্ডার বলছি আর একদম কুচবিহার লালমনিরহাটের উল্টোদিকে, কুড়িগ্রামের উল্টোদিকে দিনহাটা, মেখলিগঞ্জ দিয়ে গরুগুলো যায় কী করে? কতগুলো জেলা, কতগুলো প্রদেশ, কতগুলো থানার উপর দিয়ে গরুগুলো আসে? এবং তারা প্রত্যেকে টাকা পায়। জেনে রাখুন প্রত্যেকে টাকা পায়। এটা একটা বিশাল ....। বাংলাদেশ থেকে একটি ১৬ বছরের মেয়ে সে দিল্লিতে বা মুম্বাইতে রেড লাইট এরিয়ায় এমনি এমনি যায় না। অনেক টাকা পয়সা এখানে লেনদেন হয়। সেসব ভাগবাটোয়ারা সবার মধ্যেই আছে এবং পতাকাহীনভাবেই আছে।’’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘‘বিএসএফের অধিকাংশ মানুষ একটি করাপ্ট ফোর্স। বিএসএফ যেখানে পয়সা পায় না যেখানে বিএসএফ দৃঢ়, সেখানে কোনো চোরাচালান হয় না। চোরাচালান হয় সেখানেই যেখানে বিএসএফ পয়সা পায়।’’
সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের পেছনে ভারত সরকারের পাশাপাশি বাংলাদেশের সরকারের দায় রয়েছে বলেও মনে করেন কিরিটি রায়। ‘‘বাংলাদেশ ও ভারত সরকার যতই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বলুক প্রকৃতপক্ষে ভারতের এই প্রবলেমটা সীমান্তে সেটা নিয়ে বাংলাদেশের মানুষ সোচ্চার, মিডিয়া সোচ্চার। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার প্রতিবাদ এক ফোঁটাও করছে না,’’ বলেন তিনি।
পশ্চিমবঙ্গে সীমান্তে বিএসএফ-এর বিভিন্ন অন্যায় কর্মকাণ্ড নিয়ে দুই হাজার ২০০ এর মতো অভিযোগ রয়েছে উল্লেখ করে এই মানবাধিকারকর্মী বলেন, সেগুলোর তদন্ত হয় না, এফআইআর হয় না। আবার তদন্ত হলেও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। সীমান্তের এই সমস্যা সমাধানে সরকারের সদিচ্ছা ও জবাবদিহিতা গুরুত্বপূর্ণ বলে অভিমত তার। অন্যদিকে সায়ন্তন বসু মনে করেন, ‘‘বিএসএফ এরপাঁচজন অফিসার খারাপ করছে বলে সবাই খারাপ নয়।’ তার মতে, ‘ভারত দেশের সরকার ভারতের নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে বাধ্য। .. একশো বছরেও এই সমস্যার সমাধান হবে না, যদি চোরাচালান বন্ধ না হয়’। যদিও একে ভারতের জন্য লজ্জার বলে সবশেষে উল্লেখ করেন কিরিটি রায়। সূত্র : ডয়চে ভেলে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।