Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিক্ষক ও জনবল নিয়োগ ছাড়াই ক্লাস শুরু

ঝালকাঠি নার্সিং কলেজ

মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ, ঝালকাঠি থেকে : | প্রকাশের সময় : ২১ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০৩ এএম

প্রয়োজনীয় শিক্ষক ও জনবল নিয়োগ ছাড়াই শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু করেছে ঝালকাঠি নার্সিং কলেজ। জনবল বলতে আছেন শুধু একজন প্রিন্সিপাল ও একজন হিসাবরক্ষক। শ্রেণি কক্ষ ও আবাসিক হলের আসবাবপত্রসহ পরীক্ষাগারের প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ এখনো এসে পৌঁছায়নি। এই সঙ্কটের মধ্যেই ৬ নভেম্বর থেকে ধাত্রী বিদ্যায় ২৫ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ক্লাস শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি।

জানা যায়, ঝালকাঠির ঐতিহ্যবাহী কীর্ত্তিপাশা জমিদার বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় ৩ একর ১৫ শতাংশ জমির ওপর ঝালকাঠি নাসিং কলেজ নির্মাণ করা হয়। প্রায় ৫৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪ তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন, লিফট সুবিধা সম্বলিত ৭ তলা বিশিষ্ট শিক্ষার্থীদের আবাসিক হোস্টেলসহ শিক্ষক-কর্মচারীদের ৩টি আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হয়। শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলে ১৫৫টি কক্ষে ৪০৬ জন শিক্ষার্থী থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। ২০১৮ সালের ২১ এপ্রিল প্রতিষ্ঠানটির উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু। গত ৬ নভেম্বর থেকে ৩ বছর মেয়াদী ধাত্রী বিদ্যায় (মিডওয়াইফ) দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ২৫ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ক্লাস শুরু হয় নার্সিং কলেজে। প্রতিষ্ঠানটি সদর হাসপাতাল থেকে সাড়ে নয় কিলেমিটার দূরে নির্মাণ করায় শিক্ষার্থীদের হাতে কলমে ব্যবহারিক শিক্ষা ব্যাহত হবার আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা।
ঝালকাঠি নার্সিং কলেজের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ২৫৮ জন শিক্ষক কর্মচারীর চাহিদা পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে শিক্ষক চাওয়া হয়েছে ১৯৮ জন। বর্তমানে একজন প্রিন্সিপাল ও একজন হিসাবরক্ষক দেয়া হয়েছে। অন্যপদগুলোতে শিক্ষক ও জনবল নিয়োগ না দেওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পড়ালেখা। নেই প্রিন্সিপালের জন্য থাকার ভবন। নিরাপত্তা প্রহরী, বাবুর্চি ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী না থাকায় শিক্ষার্থীরা পড়েছেন বিপাকে। শিক্ষক ও জনবল নিয়োগ হলে ৪ বছর মেয়াদী বিএসসি বেসিক ও পোস্ট বেসিক কোর্সে ১০০ জন শিক্ষার্থী ও বিএসসি স্নাতকোত্তর কোর্সে ১১২ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাবে এ প্রতিষ্ঠানে। সম্প্রতি সারা বাংলাদেশে নার্সিং কোর্সে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে মিডওয়াইফ (ধাত্রী বিদ্যা) কোর্সের ২৫ জন শিক্ষার্থীকে ঝালকাঠি নার্সিং ইনস্টিটিউটে ভর্তির অনুমোদন দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তারা গত ১৬ থেকে ১৮ অক্টোবরের মধ্যে ভর্তি হয়। আপাতত ধাত্রী বিদ্যায় প্রথম ব্যাচের ক্লাস শুরু হয়েছে ৬ নভেম্বর।
ঝালকাঠি স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী শৈলেন্দ্র নাথ মন্ডল বলেন, আমরা ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠানটি কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছি। শ্রেণি কক্ষ ও আবাসিক হলের আসবাবপত্রসহ পরীক্ষাগারের প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ দেয়ার দায়িত্ব স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের।
কলেজের ধাত্রী বিদ্যার শিক্ষার্থী রুশমিনা খানম বলেন, কলেজের পরিবেশ অনেক সুন্দর কিন্তু শিক্ষক ও জনবল সঙ্কট রয়েছে। শিক্ষক সঙ্কট থাকায় প্রিন্সিপাল ম্যাডাম একাই আমাদের ক্লাস নিচ্ছে। শিক্ষার্থী মোসাম্মৎ দিনা বলেন, আমাদের ব্যবহারিক শিক্ষার জন্য কলেজ থেকে আড়াই কিলোমিটার দূরে সদর হাসপাতালে গিয়ে শিখতে হবে। কলেজে একটি গাড়ি থাকলেও চালক নেই। আমাদের ব্যবহারিক শিক্ষা হুমকির মুখে পড়েছে। তাই আমরা এ কলেজের জন্য পর্যাপ্ত জনবল দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই।
ঝালকাঠি নার্সিং কলেজের প্রিন্সিপাল মোসাম্মৎ শাহিনুর বেগম বলেন, মন্ত্রণালয়ে প্রয়োজনীয় জনবল ও শিক্ষকের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। আসবাবপত্রসহ অন্যান্য মালামাল আসছে। আমরা প্রথম ব্যাচের ক্লাস শুরু করেছি। শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক শিক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় গাড়িতে করে প্রতিদিন ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। তবে এখনো গাড়ির চালক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। জনবল সঙ্কটের কারণে একটু সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে, হয়তো এটা থাকবে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঝালকাঠি নার্সিং কলেজ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ