পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্যার এ এফ রহমান হলে ফেইসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের মারধরের শিকার হয়েছেন প্রথম বর্ষের ৫ জন শিক্ষার্থী । গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত এ ঘটনা ঘটে। গত এক সপ্তাহে এ নিয়ে তৃতীয়বারের মত ঘটেছে এমন ঘটনা। এর আগে গত ১৬ নভেম্বর রাতে রোকেয়া হলে দুই ছাত্রী মানসিক নির্যাতনের শিকার হন এবং একইরাতে ক্রিকেট খেলা নিয়ে একটি ফেইসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে মারধরের শিকার হন বিজয় একাত্তর হলের দুই শিক্ষার্থী।
গত বৃহস্পতিবারের ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন ভূগোল বিভাগের লালন হোসেন, মার্কেটিং বিভাগের এসএম আসিফ হোসেন ও মো: আরিফুল ইসলাম আলিফ, ইনস্টিটিউট অব এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইইআর)বিভাগের বায়েজিদ, চারুকলা ইনস্টিটিউটের জাওয়াদ এবং সংগীত বিভাগের তৌসিফ। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী এবং স্যার এ এফ রহমান হলের ছাত্রলীগ পদপ্রার্থী সালেহ উদ্দিন আহমেদ সাজুর অনুসারী। সাজু বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী।
ভুক্তভোগীরা হলেন, ২০১৯-২০ সেশনের ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী ইমন, ম্যানেজম্যান্ট বিভাগের আল আমিন ও রুবেল এবং ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী বুলবুল ও রানা হামিদ।
সূত্র জানায় ১৬ তারিখ রাতে এফ রহমান হলে দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রের বিরুদ্ধে প্রথম বর্ষের এক ছাত্রকে মারধর করার অভিযোগ উঠলে সে হলের ছাত্রলীগ প্রার্থী সালেহ উদ্দিন আহমেদ সাজু প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের মারধর না করা ও গেস্টরুম কম নেওয়ার নির্দেশ দেয় দ্বিতীয় বর্ষকে। সে খুশিতে গত বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে প্রথম বর্ষের ৫ জন শিক্ষার্থী ফেসবুকে ‘ঈদ মোবারক’ পোস্ট দেয়। যা ঐ হলের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের নজরে আসলে এদিন রাত ১০টা হতে সাড়ে বারোটা পর্যন্ত তাদেরকে দুই দফা গেস্টরুম করানো হয় এবং তাদেরকে প্রচুর মারধর করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী ইনকিলাবকে বলেন, এর আগেও একাধিকবার আমাদের সাথে এ ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু উল্লেখযোগ্য কোনো শাস্তি না হওয়ায় তারা সাহস পেয়ে গেছে। তাদের মাঝে বায়েজিদ ও জাওয়াদ বেশ আক্রমনাত্মক। জাওয়াদ এর আগেও গেস্টরুমে জুনিয়রদের মারধর করতো।বায়েজিদও প্রায় গেস্টরুমে মারধর করে থাকে বলে জানান এই ভুক্তভোগী। তবে তাদের দু’জনকে ফোন দেওয়ার পর ইনকিলাবের পরিচয় পেয়ে তারা ফোন বন্ধ করে দেয়।
এদিকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত আসিফ বলেন, আমার পরীক্ষা চলতেছে। আমি তো গেস্টরুমে যাইনি। তাছাড়াও আমাদের গ্রæপে এখন গেস্টরুম নেওয়াও হয় না। আমার বিরুদ্ধে এটা একটা মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে। এদিকে আসিফের ব্যাপারে ভুক্তভোগীদের একজন বলেন, এই ভাইয়ের পরীক্ষা থাকলেও জীবনেও সে গেস্টরুম মিস দেয় না। এতটাই গেস্টরুমখোর সে!
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আরিফুল ইসলাম আলিফ বলেন, এমনটা কিছুই হয় নি, আমাদের ব্যাপারে গুজব ছড়ান হচ্ছে।
অপর অভিযুক্ত লালন বলেন, আমরা তাদের সাথে বসেছিলাম ঠিকই কিন্তু আমরা শুধু পড়াশোনার ব্যাপারে আলাপ আলোচনা করার জন্যই বসেছি। মারধরের কোনো ঘটনাই ঘটেনি আসলে। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ ছাড়া আর কিছু নয়।
অভিযুক্তদের নেতা সালেহ উদ্দিন আহমেদ সাজু বলেন, গত ১৬ তারিখ হলে একটি ঘটনা ঘটেছে আপনারা হয়তো জানেন। তার জন্য আমি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের গেস্টরুম নিতে নিষেধ করে দেই। যার ফলে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা আবেগের বশীভূত হয়ে ফেসবুকে আলহামদুলিল্লাহ আর ঈদ মোবারক লিখে পোস্ট দেয় এবং এই ঘটনা দ্বিতীয় বর্ষ দেখতে পেয়ে তাৎক্ষণিক তাদেরকে গেস্টরুমে নিয়ে বকাঝকা করেছে বলে তারা জানায়। কিন্তু মারধরের কথাটা প্রথম বর্ষের কেউ স্বীকার যায়নি, আর দ্বিতীয় বর্ষও মারধরের ব্যাপারটি অস্বীকার করে গিয়েছে।
বিষয়টি সম্পর্কে ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, বিষয়টি আমরা ক্ষতিয়ে দেখব যে আসলে এমনকিছু হয়েছে কিনা। আর যদি কেউ সংগঠনের গঠনতন্ত্র বিরোধী কাজ করে থাকে বা শিক্ষার্থীদের আত্মমর্যাদায় আঘাত করে থাকে তাহলে এর বিরুদ্ধে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. একেএম গোলাম রাব্বানী বলেন, এ বিষয়ে হল প্রশাসনের সাথে কথা বলেন। ওরাই ভালো বলতে পারবে। তবে উক্ত হলের প্রভোস্টকে একাধিকবার ফোন দিলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।