নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বাংলাদেশ-পাকিস্তান তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটি আজ মাঠে গড়াচ্ছে। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে দুপুর ২টায়। এ ম্যাচকে সামনে রেখে এখন ক্রিকেটভক্তদের মাঝে টিকিটের জন্য হাহাকার পড়ে গেছে। টিকিট সংগ্রহ করতে গতকাল ভোর থেকেই মিরপুরস্থ শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়াম সংলগ্ন বুথে তাই হুমড়ি খেয়ে পড়েন সমর্থকরা। শুধু রাজধানী ঢাকারই নয়, সাতক্ষীরা, সিলেট, চট্টগ্রাম ও কুষ্টিয়ার ক্রিকেটপ্রেমীরা এদিন জড়ো হয়েছিলেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী স্টেডিয়াম সংলগ্ন বুথে। সকাল ১০টা থেকে টিকিট বিক্রয় শুরু হলেও ভোর ৬টায় লাইনে দাঁড়ান টিকিট প্রত্যাশীরা। তবে প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের কারণে আসন সংখ্যার ৫০ শতাংশ দর্শক স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখতে পারবেন বলে বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচের টিকিট হয়ে উঠেছে সোনার হরিণ! তাই তো কাল মিরপুরের আকাশে-বাতাসে ভেসে বেড়িয়েছে একটি শ্লোগান- টিকিট চাই, টিকিট চাই, টিকিট...। ক্রিকেটপ্রেমীদের শ্লোগানে মিরপুর স্টেডিয়াম এলাকা মুখরিত হলেও খুব কম সংখ্যক মানুষ টিকিট হাতে পেয়েছেন।
সময়ের হিসাবে ৬১৮ দিন পর মিরপুর স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখার সুযোগ পাচ্ছেন দর্শকরা। তাও আবার বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ। স্বাভাবিকভাবেই খেলা দেখার আগ্রহ থাকবে সবারই। সর্বশেষ ২০১৯ সালের মার্চে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে গ্যালোরিতে বসে বাংলাদেশের খেলা দেখেছিলেন দর্শকরা। দীর্ঘ দিন পর ফের সেই সুযোগ সামনে আসায় স্টেডিয়ামমুখী হয়েছেন তারা। সদ্য সমাপ্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বাজে পারফরম্যান্স একটুও প্রভাব ফেলেনি ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে। উল্টো ভোর থেকে বুথের লাইনে দাঁড়িয়ে কষ্ট করেছেন টাইগার সমর্থকরা। করোনাভাইরাস সার্টিফিকেট থাকার শর্তে স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখার সুযোগ মিলবে দর্শকদের। শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের দর্শক ধারণক্ষমতা ২৬ হাজার হলেও ৫০ শতাংশ দর্শক গ্যালারীতে প্রবেশের সুযোগ পাবেন। শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়াম সংলগ্ন বুথে ১২ হাজার টিকিট ছেড়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। একজন দর্শক সর্বোচ্চ দু’টি টিকিট কিনতে পারবেন-এই শর্তে প্রত্যাশীরা টিকিট সংগ্রহ শুরু করেন। পুরুষদের জন্য দুটি লাইন এবং নারীদের একটি লাইন করা হয়। বুথের আশেপাশে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থাকায় টিকিট কিনতে আসা দর্শকদের মাঝে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তবে বেশ কিছু নারীকে একাধিকবার লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কিনতে দেখা গেছে। লাইনে এমনও অনেকে দাঁড়িয়েছেন, যারা জানেনও না এটা কীসের লাইন!
সরেজমিনে দেখা গেছে জামিলা নামের একজন নারী এক শিশুকে নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। কখন ম্যাচ, কবে ম্যাচ, তিনি জানেন না। তার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘ম্যাচের টিকিট বেচে এহানে, তাই খাড়াইছি। আমাগো কী ম্যাচ দেখতে ইচ্ছা করে না!’
জামিলার মতো অনেকে কালোবাজারিতে থাকলেও ক্রিকেটকে ভালোবাসেন এমন অনেক দর্শকই একটি টিকিটের আশায় কাল লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। সকাল ৮টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে দুপুর ১টাতেও বুথের কাছাকাছি পৌঁছাতে পারেননি রফিকুল ইসলাম নামের এক কলেজ শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, ‘আমি সকাল ৮টায় লাইনে দাঁড়িয়েছি। কিছুটা এগোলেও এখনও অনেক দূরে আছি। জানি না টিকিট পাবো কিনা। সামনে থেকে হুটহাট লোকজন ঢুকে যাচ্ছে। দেখা যাক কী হয়।’
রাজধানীর একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী তানিয়া রহমান টিকিট কাটকে এসে পুলিশের সাহায্য নিয়ে নারীদের লাইন থেকে দু’টি টিকিট কিনে যেন বিশ্বজয় করে ফেলেছেন-এমন আনন্দেই মাতলেন। সিলেট থেকে বুধবার ঢাকায় আসেন রুবেল নামের এক ব্যবসায়ী। মগবাজার নয়াটোলায় বড় বোনের বাসায় উঠেছেন। তিনি বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ দেখার আশায় মিরপুরে এসে দীর্ঘ ছয় ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে দু’টি টিকিট পেয়েছেন। টিকিট হাতে পেয়ে তার যেন আনন্দের শেষ নেই,‘সকাল ৮টায় লাইনে দাঁড়িয়ে এখন (দুপুর ২টা) টিকিট পেয়েছি। কিযে খুশি লাগছে বলে বোঝানো যাবেনা।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।