Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মুসলমানদের প্রতি ভারতের গুরুগ্রামে অনন্য উদ্যোগ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৮ নভেম্বর, ২০২১, ৭:২৭ পিএম

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় অনন্য নজির তৈরি করলেন ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের শিল্প ও বাণিজ্য নগরী গুরুগ্রামের হিন্দু ও শিখ ধর্মাবলম্বী মানুষ। দিল্লি লাগোয়া এই জনপদে প্রতি শুক্রবার মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের নামাজ আদায়ের প্রতিবাদ করে আসছে কট্টর কয়েকটি হিন্দু সংগঠন। জুমার নামাজ চলাকালে কখনও তারা ধর্মীয় স্লোগান দেয়, কখনও বা নামাজের জায়গায় গোবর ছিটিয়ে রাখে।
ধর্মকেন্দ্রিক এই অন্যায় আচরণ মেনে নিতে পারেননি গ্রামের বাসিন্দা বেশকিছু হিন্দু ও শিখ ধর্মাবলম্বী। তারা মুসলমানদের শুক্রবারের প্রার্থনার জন্য তাদের জায়গা দিচ্ছেন। শিখরা বলছেন, মুসলমানদের গুরুদ্বারে এসে নামাজ পড়া উচিত।
গুরুগ্রাম গুরুদ্বার প্রবন্ধক কমিটির প্রধান শেরদিল সিধু বুধবার মুসলমান ধর্মগুরু মুফতি সেলিমকে গুরুগ্রাম সদর বাজারের গুরুদুয়ারা ঘুরিয়ে দেখান। শুক্রবার এই গুরুদ্বারে আজান হবে এবং মুসলমানরা এখানে জুমার নামাজ আদায় করবে।
এনডিটিভি’কে সিধু বলেন, ‘এখন থেকে শুক্রবার যদি হিন্দু সংগঠনগুলো মুসলমানদের প্রকাশ্য প্রার্থনার প্রতিবাদ করে, তাহলে মুসলিম ভাইদের গুরুদ্বারে এসে প্রার্থনা করার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’
শেরদিল সিধু বলেন, ‘আমরা দেশকে বাঁচাচ্ছি। গুরুদ্বার সবার জন্য উন্মুক্ত। এক মুসলিম ভাইও গুরু নানকের সঙ্গে থাকতেন। মুসলিম ভাইরাও দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন।’
গুরুগ্রামের ১২ নম্বর সেক্টরের অক্ষয় যাদব তার ১০০ গজের দোকান মুসলিম সম্প্রদায়কে জুমার নামাজ পড়ার জন্য ছেড়ে দিয়েছেন। অক্ষয় বলেন, ‘কোনো অবস্থাতেই গুরুগ্রামের সম্প্রীতি নষ্ট হতে দেবো না। মুসলমানরা চাইলে আমাদের বাড়ির উঠানে এসেও নামাজ পড়তে পারেন।’
অক্ষয় বলেন, ‘আমি গুরুগাঁওয়ে জন্মেছি। এখানে ৪০ বছর ধরে আছি। কখনোই এখানকার সম্প্রীতি ধর্মের ভিত্তিতে ভাঙতে দেব না। আমার মতো অনেকেই আছেন যারা নামাজের জন্য তাদের জায়গা দিতে প্রস্তুত।’
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে শুক্রবার জুমার নামাজ আদায়ের জায়গা খুঁজতে থাকা মুফতি সেলিম এমন প্রস্তাবে সন্তুষ্ট। তিনি বলেন, গুরুগাঁওয়ে জুমার নামাজ আদায় নিয়ে এখন আর আমরা চিন্তিত নই। কারণ অনেক হিন্দু ও শিখ আমাদেরকে নামাজের জায়গা দিতে প্রস্তুত। আমি খুব খুশি যে সিধু সাহেবের মতো অনেকে এগিয়ে এসেছেন।’
দু’বছর ধরে গুরুগ্রাম প্রশাসন হিন্দু ও মুসলিম সংগঠনগুলোর সঙ্গে বসে প্রার্থনা করার জন্য ৩৭টি স্থান নির্ধারণ করেছিল। হিন্দু সংগঠনগুলোর চাপে পরে তা ২০টিতে নামিয়ে আনা হয়। হরিয়ানা প্রশাসনও হিন্দু সংগঠনগুলোকে থামাতে পারেনি। এ কারণেই গুরুগ্রামের শিখ ও হিন্দুরা এগিয়ে আসছেন এবং প্রশাসনকে কড়া বার্তা দিচ্ছেন- প্রশাসন অক্ষম, তাই তারাই দেশকে বাঁচানোর কাজ করছেন। সূত্র : এনডিটিভি



 

Show all comments
  • মোঃ মাসুকুর রহমান ১৮ নভেম্বর, ২০২১, ৭:৪০ পিএম says : 0
    আল্লাহ তায়ালা তাদের ইসলামের জন্য কবুল করুক।
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ মাসুকুর রহমান ১৮ নভেম্বর, ২০২১, ৭:৪০ পিএম says : 0
    আল্লাহ তায়ালা তাদের ইসলামের জন্য কবুল করুক।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ