বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
২০১১ সালে প্রকাশিত জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার তালিকায় থাকা ভোটারদের তথ্য হালনাগাদ হচ্ছে প্রতি বছর নির্ধারিত সময়সীমায়। আর ভোটারদের ভুল সংশোধন প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকে সারা বছর। তবে ভুল সংশোধন প্রক্রিয়ায় নানা জটিলতার পড়ে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের সাধারণ ভোটাররা। তারা আঞ্চলিক কার্যালয়ে সেবা বঞ্চিত হয়ে দৌড়ঝাঁপ করছেন সরাসরি নির্বাচন কমিশনে। এতেও মিলছে না কাক্সিক্ষত সেবা। এমন অভিযোগ স্থানীয় সেবা প্রত্যাশী ভোটারদের।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভায় ভোটার রয়েছে ২ লাখ ৭৪ হাজার ৭০৭ জন। এদের মাঝে ২০১১ এর জরিপে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির কাজ করেন স্থানীয় এনজিও কর্মী ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। সে সময় ভোটার তালিকায় নাম লিপি করতে যেয়ে ভোটারদের তথ্যে নানা রকম ভুল ছাপা হয়। এমনকি পিতার নাম, মাতার নাম ছাড়াও নিজ নামেও ভিন্নতা প্রকাশ পায়। ফলে তারা সংশোধনের জন্য এ কার্যালয়ে সহযোগিতা নিতে আসেন।
সূত্র জানায়, এ উপজেলায় ভুল সংশোধন করতে আসা ভোটাররা পড়েন চরম বিপাকে। আবার ভোটার তালিকায় থাকা লোকজন ঠিকানা পরিবর্তন করলে নানা কারণে সংশোধনের প্রয়োজন পড়ে। তাছাড়া প্রবাসীদের ক্ষেত্রে ভোটার তালিকায় সামান্য ত্রুটির জন্য হয়রানির শিকার হতে হয় সংশ্লিষ্ট দফতরে। এসব সংশোধনের জন্য সঠিক নিয়মে অনলাইনে আবেদন করে নির্ধারিক ফি ২৩০ টাকা প্রদান করার নিয়ম রয়েছে। এর বাইরে কোন লেনদেন অবৈধ। তবে ভোটার তালিকায় থাকা ভোটারদের নাম সংশোধনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে হলফনামা, সংশ্লিষ্ট প্রমাণাদি দাখিলের নিয়ম রয়েছে।
এদিকে সাধারণ ভোটাররা অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া না জেনে বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এদের মাঝে গুতিয়াবো এলাকায় বাসিন্দা মৃত ছাদেক মিয়ার ছেলে সিরাজ মিয়া বলেন, তার ভোটার আইডি কার্ডে সব ঠিক থাকলেও অনলাইনে তাকে খুঁজে পাওয়া যায় না। এতে বিদেশ যাত্রায় তার সমস্যা হয়েছে। মুড়াপাড়া এলাকার আকলিমা খাতুন একটি এনজিওতে কাজ করছেন। ব্যাংক থেকে ঋণ তুলতে ভোটার কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের প্রয়োজন পড়ে। তিনি উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে যোগাযোগ করলে ওই অফিসের কর্তব্যরত সহকারী তাকে অতিরিক্ত টাকার প্রস্তাব দেয়। পরে সংশোধন করতে না পেরে ঋণ পাননি তিনি। মধূখালী এলাকার বাসিন্দা গৃহবধূ তাহছিনা আক্তার নিশাতের জাতীয় পরিচয়পত্রে বাংলা বানান ঠিক থাকলেও ইংরেজি বানানে ভুল ছাপা হয়েছে। এ বিষয়ে তিনি সংশোধন করতে গেলে তাকে পাঠানো হয় জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে। পরে জেলা নির্বাচন কার্যালয় একটি হলফনামা করাতে বলে আবার উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে ফেরত পাঠায়। এভাবে ওই গৃহবধূ হয়রানির শিকার হয়েও তার নাম সংশোধন করতে পারেননি। রূপগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড মেম্বার মোরশেদ আলম বলেন, ভোটার আইডি কার্ডে বা তালিকায় নাম ওঠাতে যেয়ে ভুল লিখেছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এ ভুলের দায় নির্বাচন কমিশনকে নিতে হবে। এর দায় কোনমতেই নাগরিকের নয়।
পিতলগঞ্জের বাসিন্দা একটি বেসরকারি হজ এজেন্সির পরিচালক হারুন উর রশিদ বলেন, যারা বিদেশে যাচ্ছেন বিভিন্ন কারণে। তাদের জন্য অল্প সময়ে কোন ত্রুটি থাকলে সংশোধনের প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে সব সেবা দিতে পারে না। ফলে অধিক অর্থ খরচ করেও সময়মতো সংশোধন পাই না আমরা।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল পরিলক্ষিত হলে ভোটাররা অনলাইনে সঠিক নিয়মে আবেদন করলে অবশ্যই সেবা পাবেন। তবে সম্প্রতি নির্বাচন সংক্রান্ত কাজে ব্যস্ত থাকায় কিছুদিন ভোগান্তি হয়েছে। তাছাড়া সব সেবা উপজেলা নির্বাচন অফিসের আওতায় নেই। ফলে আঞ্চলিক, জেলা ও কমিশন এ ৩ ক্যাটাগরিতে সেবা দেয়া হচ্ছে। এ সময় তিনি জরিপকালে তালিকা প্রস্তুতে যারা কাজ করেছেন তাদের দায়ী করে বলেন, ভোটাররা তো এতো কিছু বুঝে না। যারা তালিকা প্রণয়ন করেছেন, তারা যদি সতর্ক হয়ে সব যাচাই করে নাম লিখতো এখন এমন সমস্যা হতো না। অতিরিক্ত টাকা লেনদেন বিষয়ে তিনি বলেন, সরকার নির্ধারিত ফি এর অতিরিক্ত কেউ নিয়ে থাকলে প্রমাণ পেলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।