গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
করোনাভাইরাসের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ দ্রুত বিতরণ নিশ্চিত করতে ব্যাংকার-উদ্যোক্তা দূরত্ব কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মোঃ মফিজুর রহমান। ১৭ নভেম্বর ২০২১ রংপুরে এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত এসএমই উদ্যোক্তা-ব্যাংকার ঋণ ম্যাচমেকিং অনুষ্ঠানে তিনি এ পরামর্শ দেন। তিনি আরো বলেন, প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় সহজে ঋণ পাওয়ার জন্য উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ব্যাংকে সরবরাহ করা প্রয়োজন। ফাউন্ডেশনের উপ-মহাব্যবস্থাপক সুমন চন্দ্র সাহা’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মোঃ মফিজুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মোঃ বাবর আলী। অনুষ্ঠানে এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মোঃ মফিজুর রহমান বলেন, ঋণ পাওয়ার শর্ত ও তথ্যসমূহ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন শাখায় প্রদর্শন করা হলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য তা সহায়ক হয়। এছাড়া প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ বিতরণে এসএমই ফাউন্ডেশনের নীতিমালা সম্পর্কেও উদ্যোক্তা-ব্যাংকারদের আরো সচেতন কওে তোলার আহবান জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, করোনাভাইরাসের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সিএমএসএমই খাতের জন্য সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ২০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ঋণ পাওয়া নারী-উদ্যোক্তার হার শতকরা ৬ ভাগের নিচে হলেও এসএমই ফাউন্ডেশনের বিতরণকৃত ঋণের ৩০ ভাগের বেশি পাচ্ছেন নারী-উদ্যোক্তারা।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারের দ্বিতীয় দফা প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় চলতি অর্থবছরে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ২০০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণের সেপ্টেম্বর ২০২১-এ ১৯টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি সই করে ফাউন্ডেশন। ঋণের সুদের হার মাত্র ৪%। একজন উদ্যোক্তা সর্বনিম্ন ১ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন। ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জামানতবিহীন ঋণ পাবেন।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো হলো, ব্র্যাংক ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, বেসিক ব্যাংক, দ্যা সিটি ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, আইডিএলসি ফাইন্যান্স ও লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী এসব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সারাদেশের প্রায় ১০০টি এসএমই ক্লাস্টার, চেম্বার, অ্যাসোসিয়েশন-এর সদস্য উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি সারাদেশের নারী-উদ্যোক্তা এবং এসএমই ফাউন্ডেশন, বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি সংগঠন ও অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সুপারিশকৃত এসএমই উপখাত, ট্রেডবডি এবং গ্রুপের তালিকাভুক্ত উদ্যোক্তা এবং সিএমএসএমই খাতের জন্য সরকার ঘোষিত প্রথম দফার প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ঋণ না পাওয়া পল্লী ও প্রান্তিক পর্যায়ের উদ্যোক্তাগণকে ঋণ প্রদান করবে। মোট ঋণের ৩০% নারী-উদ্যোক্তাদের মাঝে বিতরণের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।
করোনাভাইরাস (কোাভিড-১৯) পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রম ত্বরান্বিত করা এবং পল্লী এলাকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে সরকারের দ্বিতীয় দফার প্রণোদনার আওতায় মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই) উদ্যোক্তাদের মাঝে ২০২০-২১ অর্থবছরে ১০০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করে এসএমই ফাউন্ডেশন। চলতি অর্থবছরে আরো ২০০ কোটি টাকা এসএমই ফাউন্ডেশনের অনুকূলে বরাদ্দ দেয় অর্থ বিভাগ।
এসএমই ফাউন্ডেশনের ঋণ কর্মসূচি বিতরণ বিষয়ক নীতিমালা ও নির্দেশিকার কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, করোনা মহামারীর কারণে গ্রামীণ ও প্রান্তিক পর্যায়ের ক্ষতিগ্রস্ত অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের মধ্যে নিম্নবর্ণিত ক্যাটাগরির উদ্যোক্তাদের প্রাধান্য দেয়া হবে:
১. যারা সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ঋণপ্রাপ্ত হননি;
২. অগ্রাধিকারভূক্ত এসএমই সাব-সেক্টর এবং ক্লাস্টারের উদ্যোক্তা;
৩. নারী-উদ্যোক্তা;
৪. নতুন উদ্যোক্তা অর্থাৎ যারা এখনো ব্যাংক ঋণ পাননি;
৫. পশ্চাদপদ ও উপজাতীয় অঞ্চল, শারীরিকভাবে অক্ষম এবং তৃতীয় লিঙ্গের উদ্যোক্তাগণ।
প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় উদ্যোক্তাগণ ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ ২৪টি সমান মাসিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করা যাবে। ব্যাংকের চাহিদাকৃত ডকুমেন্টসহ ‘সম্পূর্ণ/পরিপূর্ণ ঋণ আবেদনপত্র’ ব্যাংকের নিকট দাখিলের দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঋণ মঞ্জুর করে গ্রাহকের অনুকূলে বিতরণের উদ্যোগ গ্রহণ করবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক। সাধারণভাবে একক ও যৌথ মালিকানাধীন উদ্যোগের অনুকূলে ঋণ বিতরণ করা হবে। তবে প্রান্তিক ক্ষুদ্র, বিশেষ করে নারী-উদ্যোক্তাদের ঋণের আওতায় আনার লক্ষ্যে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্ক ও ঐক্যমতের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ ৫জন উদ্যোক্তার অনুকূলে গ্রুপভিত্তিক ঋণ বিতরণ করা যাবে। গত অর্থবছরের অভিজ্ঞতার আলোকে এসএমই ফাউন্ডেশন অংশীদার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে আলোচনা করে উদ্যোক্তাদের জন্য সুবিধাজনক এক/একাধিক শাখায় ফোকাল কর্মকর্তা নির্ধারণ করবে। উদ্যোক্তারা ফোকাল কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করবেন। ফোকাল কর্মকর্তা এসএমই ফাউন্ডেশন, ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ও শাখা এবং উদ্যোক্তাদের সাথে সমন্বয় করবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।