বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়(কুবি) সহ সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে দেশের মোট ২০টি বিশ^বিদ্যালয় প্রথমবারের মত গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা শেষে শিক্ষার্থীদের ভর্তির জন্য গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় গুলো নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির নিয়মাবলী সম্বলিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করছে। মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব ও রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. আবু তাহের স্বাক্ষরিত ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এ ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর অটোপাশ অর্থাৎ মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বরের উপর রাখা ১০০ শতাংশ রেখে ভর্তি পরীক্ষার চেয়ে অটোপাশের রেজাল্টকে প্রধান্য দেওয়ায় নিয়ে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ভর্তির ক্ষেত্রে মোট ২০০ নম্বরের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে। যার ১০০ নম্বর গুচ্ছ পদ্ধতিতে হওয়া ভর্তি পরীক্ষা থেকে। আর বাকী ১০০ নম্বর বিবেচনা করা হবে এসএসসি ও এইচএসসির ফলাফলের উপর ভিত্তি করে। গুচ্ছ পদ্ধতির আগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় এ বিশ্ববিদ্যালয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফলের ওপর ৫০ শতাংশ নম্বর রাখা হলেও এবার তা বাড়িয়ে ১০০ করা হয়েছে যা গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার মূল নম্বরের সমান। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষার উপর এত নাম্বার রাখা নিয়েই বিপত্তির সৃষ্টি হয়েছে। এবার করোনা পরিস্থিতিতে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত না হওয়ায় মাধ্যমিকের ফলাফলের উপর ভিত্তি করে শিক্ষার্থীদের উচ্চমাধ্যমিকে অটোপাশ দেওয়া হয়েছে। এই পদ্ধতিতে মাধ্যমিকে যারা জিপিএ-৫ পেয়েছে তারাই অটোপাশের মাধ্যমে এবারের উচ্চমাধ্যমিকে এসে সমপরিমাণ ফলাফল অর্জন করেছে। যার ফলে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন মূলত হচ্ছে মাধ্যমিকের নম্বরের উপর ভিত্তি করেই।
ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত ‘সি’ ইউনিট থেকে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন মুশফিকুর রহমান। এই ইউনিটের প্রকাশিত ফলে ১০০ নম্বরের মধ্যে ৬৮ নম্বর পান এ শিক্ষার্থী। এছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় মুশফিকের জিপিএ ছিল যথাক্রমে ৩.৮৩ ও ৪.২৫। অন্যদিকে মাধ্যমিকে জিপিএ-৫ অনুযায়ী অটোপাশের মাধ্যমে উচ্চমাধ্যমিকে জিপিএ-৫ পেয়ে ভর্তি পরীক্ষায় মুশফিকের চেয়ে কম নাম্বার অর্জন করা শিক্ষার্থীও ভর্তি যুদ্ধে তার চেয়ে এগিয়ে থাকবে।
এবছর উচ্চমাধ্যমিকে অটোপাশ থাকায় ঢাকা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বিগত মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল থেকে ২০ শতাংশ করে রেখেছে। রাজশাহী ও গুচ্ছভুক্ত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের জন্য পৃথক কোনো নাম্বারই রাখেনি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় মাধ্যমিকে ৪০ শতাংশ এবং উচ্চমাধ্যমিকে ৬০ শতাংশ নাম্বার রাখলেও পরে সে সিদ্ধান্ত হতে সরে এসে ২০ শতাংশ করে। তবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার ভর্তির জন্য যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সেখানে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক হতে ৫০ শতাংশ করে সর্বমোট ১০০ শতাংশ নাম্বার রাখে।
বেশ কয়েকজন ভতিচ্ছু শিক্ষার্থীর অভিযোগ করেন, অনেক শিক্ষার্থীই মাধ্যমিকে খারাপ ফলাপল করলেও উচ্চমাধ্যমিকে ফল ভালো করার চেষ্টা চালায়। এবার অটোপাশের কারণে মাধ্যমিকের ফলাফলের উপরেই উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল হয়েছে। এজন্য অনেকেই ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু মাধ্যমিকে ও উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফলে এত নাম্বার রাখায় আমাদের মূল্যায়নটা এই দুই পাবলিক পরীক্ষার ফলের উপর ভিত্তি করে হবে। এতে ভর্তি পরীক্ষা ভালো দিয়েও আমরা পিছিয়ে পড়বো। ইয়াসিন আরাফাত নামের ভর্তিচ্ছু এক শিক্ষার্থী বলেন, অনেক সময় মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিকে ফলাফল আশানুরূপ না হলেও ভর্তি পরীক্ষা ভালো হয়। কিন্তু ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করেও জিপিএ এর এই ১০০ নাম্বারের জন্য আমরা ভর্তি প্রক্রিয়া পিছিয়ে পড়বো। আর জিপিএকেই যদি এত গুরুত্ব দেওয়া হলে ভর্তি পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা কি? ভর্তি পরীক্ষা ভালো করলেও জিপিএর জন্য অনেকের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন নষ্ট হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব ও রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. আবু তাহের বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা শিক্ষার্থীবান্ধব একটি পদ্ধতি। আমরা ভর্তিচ্ছুদের স্বপ্নভঙ্গ হোক সেটা চাই না। যদি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল মূল্যায়নের কারণে ভর্তিচ্ছুরা ক্ষতিগ্রস্থ হয় সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে একাডেমিক কাউন্সিলে বিষয়টি বিবেচনা করা যায় কিনা সে ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করবো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।