Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

অনিয়মের বিস্তর অভিযোগ বন কর্মকর্তা জানেন না রাজস্ব কত!

প্রকাশের সময় : ২০ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মনিরুল ইসলাম দুলু, মংলা থেকে

সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ঢাংমারী স্টেশনে জেলেদের পাস পারমিটে ও বিএলসি নবায়নে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলেও কোনো ব্যবস্থাগ্রহণ করেননি ঊর্ধŸতন কর্তৃপক্ষ। বিভাগীয় বন কর্মকর্তার সাথে ঢাংমারী স্টেশন কর্মকর্তা সখ্য থাকায় পার পাচ্ছেন এসব অনিয়মের বিষয়। সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ঢাংমারী স্টেশন কর্মকর্তা মো. আব্দুল মান্নান জানেনই না বিএসি ও জেলেদের পাস নিতে গেলে সরকারি রাজস্ব হিসেবে কত টাকা করে নিতে হয়। ভুক্তভোগী জেলে সূত্রে জানা যায়, ঢাংমারী স্টেশন অফিসে দীর্ঘদিন যাবত মাছ, কাঁকড়া ধরা জেলেদের পাস পারমিটে ও বিএলসি নবায়নে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি চলে আসছে। প্রতি বিএলসি নবায়নে সরকারি নিয়মানুযায়ী ৫ টাকা নেয়ার নিয়ম থাকলেও সেখানে নেয়া হচ্ছে ৬শ’ থেকে ৭শ’ টাকা। আর নতুন বিএলসিতে নেয়া হচ্ছে ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা। এছাড়া মাছ ও কাঁকড়ার পাস পারমিটে সপ্তাহে জনপ্রতি ৬০ থেকে ৯০ টাকার স্থলে নেয়া হচ্ছে ২ থেকে ৩শ’ টাকা। এসব অতিরিক্ত উৎকোচের টাকা জেলেরা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ বিভিন্ন মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা। সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ঢাংমারী স্টেশন কর্মকর্তা মো. আব্দুল মান্নানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১ জুলাই থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর ওই অফিস থেকে বিএলসি নবায়ন হয়েছে ৩১৫টি এবং ৬৮টি নতুন বিএলসি প্রদান করা হয়েছে। তাছাড়া এই সময় ৩৪৪টি মাছের ও ৪৭৪টি কাঁকড়ার পাস দেয়া হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জেলে জানান, পাস পারমিট ও বিএলসি নবায়নের অতিরিক্ত টাকা না দিলে পাস, বিএলসি নবায়ন বা নতুন বিএলসি দেয় না। উল্টো বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে হয়রানির ভয়ভীতি দিয়ে এসব ঘুষের টাকা আদায় করা হয়। যে কারণে তারা কোনো ঊর্ধŸতন মহলেও প্রকাশ্যে জানাতে পারে না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বনরক্ষী জানান, গেল গোলপাতার মৌসুমেও ঢাংমারী স্টেশন কর্মকর্তা মো. আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ ওঠে। কিন্তু বিভাগীয় বন কর্মকর্তার সাথে ঢাংমারী স্টেশন কর্মকর্তা সখ্য থাকায় পার পাচ্ছেন তিনি। ঢাংমারী স্টেশন কর্মকর্তা মো. আব্দুল মান্নান অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে করমজল পর্যটন স্পটের দায়িত্ব পালন করছেন। সেখানে পর্যটকদের কাছ থেকে ভ্রমণচার্জ আদায় করা হলেও সবাইকে রসিদ দেয়া হয় না । কাঁকড়ার পাস এবং বিএলসি বাবদ সরকারি রেট কত এ বিষয় ঢাংমারী স্টেশন কর্মকর্তা মো. আব্দুল মান্নানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানেন না বলে জানান। অপর এক প্রশ্নের জবাবে এই কর্মকর্তা বলেন, বিএলসি নবায়নে তার অফিস কত টাকা আদায় করছে তার জানা নেই এবং এখানে কোনো অনিয়ম দুর্নীতি হয়না বলে দাবি করেন। সবকিছু সঠিক নিয়মেই চলছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অনিয়মের বিস্তর অভিযোগ বন কর্মকর্তা জানেন না রাজস্ব কত!
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ