Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের চরম ভোগান্তি

দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট

রাজবাড়ী জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৬ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০৩ এএম

বিভিন্ন কারণে দেশের গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের ভোগান্তি পিছু ছাড়ছে না। একদিকে নদী পার হতে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় দীর্ঘ সময় সিরিয়ালে অপেক্ষা, অপরদিকে সড়কে শৃঙ্খলা না থাকায় পাটুরিয়া থেকে ফেরিতে নদী পার হয়ে এসেও দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় যানজটের কারণে গন্তব্যে পৌঁছাতে দীর্ঘ সময় বিলম্ব হচ্ছে। এর উপর বাড়তি যোগ হয়েছে বৈরি আবহাওয়া। সব মিলিয়ে ভোগান্তির অপর নাম দৌলতদিয়া পাটুরিয়া নৌরুট।

জানা যায়, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি সঙ্কট, ঘাট সঙ্কট, নাব্যতা সঙ্কট ও নদীতে তীব্র স্রোতের ফেরি চলাচল ব্যহত হচ্ছে। এছাড়াও বৈরি আবহাওয়ার কারণে ফেরিগুলো পরিচালনা করতে হচ্ছে সাবধানে। এতে করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সাধারণ মানুষের রাজধানীর সাথে যোগাযোগে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে সামনে আসছে কুয়াশার মৌসুম। বর্তমান নানা সঙ্কটের সাথে আগামীতে যুক্ত হবে ঘন কুয়াশায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেরি বন্ধ থাকা। এ পরিস্থিতিতে আগামীতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ আরো কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

বিআইডব্লিটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে বর্তমান ৬টি রোরো (বড়) ও ৮টি ইউনিটিলিটি (ছোট) ফেরি মিলে মোট ১৪টি ফেরি চলাচল করছে। দৌলতদিয়া প্রান্তে ৭টি ঘাটের মধ্যে ৪টি ঘাট সচল রয়েছে। ৩টি ঘাট দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। ঘাট বন্ধ, ফেরি সঙ্কট এবং পাটুরিয়া প্রান্তে নদীতে নাব্যতা সঙ্কট থাকায় ব্যস্ততম এ নৌরুটে যানবাহন পারাপার ব্যহত হচ্ছে। যে কারণে প্রতিনিয়ত দৌলতদিয়া ঘাট অভিমুখে নদী পারের অপেক্ষায় যানবাহনগুলোকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। অপরদিকে পাটুরিয়া ঘাট থেকে নদী পার হয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে নামার পরও যানবাহনগুলোকে চরম যানজটের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। দৌলতদিয়া ঘাটগামী যানবাহন গুলো দ্রুত ফেরির নাগাল পেতে সিরিয়াল ভেঙে এলেমেলো ভাবে অগ্রসর হওয়ায় অনেক সময় পুরো মহাসড়ক আটকে যাচ্ছে। এতে নদী পার হয়ে আসা যানবাহনগুলোও ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে।
এদিকে গতকাল সোমবার বিকেলে সরেজমিনে দৌলতদিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া জিরো পয়েন্ট থেকে গোয়ালন্দ ফিড মিল পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার এলাকায় এক সাড়িতে পারের অপেক্ষায় আটকে আছে অন্তত ৫০০ পণ্যবাহী ট্রাক ও ১০০ যাত্রীবাহী বাস।

গতকাল সোমবার বিকেলে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের বোয়ালমারী গামী জাকের পরিবহনের যাত্রী মো. আলমগীর হোসেন জানান, ঢাকা গাবতলী থেকে রওনা দিয়ে ফেরিতে নদী পার হয়ে এসে দৌলতদিয়া ঘাটে পৌঁছায় তাদের বাসটি। কিন্তু দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে নামার পর দীর্ঘ ২ ঘণ্টা লাগে তাদের বাসটির যানজট এড়াতে। ঘাট অভিমুখে আসা যানবাহনগুলো এলোমেলো ভাবে ঢুকে পড়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

ঢাকাগামী জেআর পরিবহনের যাত্রী সোহেল আহমেদ জানান, দৌলতদিয়া ঘাটে সারা বছরই দুর্ভোগ লেগেই থাকে। কখনও ফেরি সঙ্কট, কখনও নাব্যতা সঙ্কট আবার ঘন কুয়াশা। এভাবে সারা বছর একটার পর একটা সমস্যা থাকেই। এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দুর্ভোগ সহ্য করে করে চলাচল করতে হয়। তিনি আরো বলেন, যানজটের কারণে আমার মত হাজার হাজার মানুষের গুরত্বপূর্ণ সময় দৌলতদিয়া ঘাটে বসে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দক্ষিণ-পশ্চিঞ্চলের মানুষের কথা চিন্তা করে কর্তৃপক্ষের উচিত এ রুটে ফেরি বৃদ্ধি করা।

ট্রাকচালক আব্দুল হামিদ মিয়া জানান, ২ দিন গোয়ালন্দ মোড় এলাকায় সিরিয়ালে আটকে থেকে গত ৩ দিন আগে দৌলতদিয়া ঘাটে আসি। এখনও ফেরির নাগাল পাইনি। কখন পাব বলতে পারছি না। ভাড়ার টাকা দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটেই খরচ হয়ে যাচ্ছে। এভাবে চললে মালিক বাঁচবে কিভাবে। আমরা বাঁচবো কিভাবে।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. শিহাব উদ্দিন জানান, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি সঙ্কট এবং নদীতে নাব্যতা সঙ্কট রয়েছে। যে কারণে গত কয়েকদিন যাবৎ ফেরি চলাচল কিছুটা ব্যহত হচ্ছে। যে কারণে গত কয়েকদিন উভয় ঘাটে কিছু যানবাহন পারের অপেক্ষায় সিরিয়ালে আটকে থাকতে হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ছোট-বড় মিলিয়ে ১৪টি ফেরি চলাচল করছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ