Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ৩০ মে ২০২৪, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ষাট গম্বুজ মসজিদে ভার্চুয়াল ভ্রমণের সুযোগ

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ নভেম্বর, ২০২১, ২:৩৮ পিএম

দূরের কোনো ঐতিহাসিক নিদর্শন অথবা হারিয়ে যাওয়া অতীতের কোনো স্থাপনা কি জীবন্ত করে তোলা যায়? বাংলাদেশের এক ভার্চুয়াল মিউজিয়াম আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগ করে ঠিক সেই উদ্যোগ নিচ্ছে। বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলার ষাট গম্বুজ মসজিদ তুঘলকি নির্মাণশৈলির অপূর্ব নিদর্শন। সেই মসজিদের অন্ধকার অলিগলি ঘুরে দেখতে এখন আর সশরীরে হাজির থাকার প্রয়োজন নেই। ভার্চুয়াল রিয়ালিটি প্রযুক্তির কল্যাণে যে কেউ সেখানে ঢুঁ মারতে পারে।

ভার্চুয়াল মিউজিয়াম বাংলাদেশ উদ্যোগের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশেক এ ইলাহী অনি সেই ওয়েবসাইটের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ‘‘ল্যান্ডিং পেজেই আমরা দেখতে পাবো যে বেশ কয়েকটা জায়গা নির্দিষ্ট করা আছে, যেখানে আমি টেলিপোর্ট করে যেতে পারবো। ধরা যাক ষাট গম্বুজ মসজিদে যেতে চাই, সেখানে টেলিপোর্ট করে যাবো। ওখানে সিলেক্ট করবো। নির্দিষ্ট জায়গায় টেলিপোর্ট করে গেলেই সাথে সাথে ষাট গম্বুজ মসজিদে ঢুকে যাবো এবং পুরো জায়গা ঘুরে ঘুরে দেখতে পারবো। সেখানেও হ্যান্ড কনট্রোলারের সাহায্যে টেলিপোর্ট করে করে বাইরে, ভিতরে সবকিছুই দেখতে পারবো। এমনকি ষাট গম্বুজের ছাদে উঠেও দেখতে পারবো পুরো ব্যাপারটা কেমন।''

বাংলাদেশের প্রথম ভারচুয়াল মিউজিয়াম হিসেবে সম্প্রতি এই উদ্যোগ যথেষ্ট মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। দেশের ঐতিহ্যের নিদর্শনগুলির বেহাল অবস্থা দেখে ডেভেলপারদের মনে এই আইডিয়া আসে। ভার্চুয়াল মিউজিয়াম বাংলাদেশ উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী ও ডেভেলপার আহমেদ জামান সঞ্জীব বলেন, “ভার্চুয়াল মিউজিয়াম বাংলাদেশের আইডিয়াটা আসে ২০১৭ সালে, পানাম সিটিতে বেড়াতে গিয়ে। পানাম সিটিটার অবস্থা আসলে তখন অনেকটাই খারাপ ছিল। সেখানে ঘুরতে গিয়ে মনে হলো যে এইটা তো আর খুব বেশিদিন ধরে রাখা যাবে না। এটার জন্য কোনোভাবে আমরা কি কিছু করতে পারি? তখন মনে হলো যে হ্যাঁ, হয়তো একটা উপায় আছে। এটা ভিআর-এ ডিজিটাল রেস্টোরেশন করা যায়। তখন ভিআর টেকনোলজিটা একদম নতুন ছিল।''

একদল সফটওয়্যার ডেভেলপারর সেই যাত্রা মোটেই সহজ ছিল না। তারা বিশাল পরিমাণ তথ্য সংগ্রহ করে, বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে শলাপরামর্শ করে অবশেষে একটি সিমুলেশন সৃষ্টি করতে সক্ষম হন। আহমেদ জামান সঞ্জীব বলেন, ‘‘ছয়শ বছর আগে যখন ষাট গম্বুজ মসজিদটি তৈরি হয়েছিল, তখন সেটা আসলে কী রকম ছিল? আমাদের মূল লক্ষ্য থাকে সেটাকে বের করে আনা। এই জায়গায় আসলে প্রথম আমাদের চ্যালেঞ্জ যেটা হয়, সেটা হলো ডাটা বা তথ্য। আমরা প্রথমে যত বেশি সম্ভব ডাটা কালেকশন করি। তারপর সেই ডাটা সাজানো হয়, বাদ দেওয়া হয় এবং একেবারে আসল ডাটা আমরা রাখি। সেই ডাটা থেকে আমরা একটা সিমুলেশন করি। সিমুলেশনটা করার পর আমরা একটা লুক বা চেহারা পেয়ে যাই, যে জিনিসটা এ রকম।

সেখানে থ্রিডি মডেলিং ও ডাটা স্ক্যানিংয়ের বিষয় জড়িত থাকে। তারপর আমরা দেশের ইতিহাসবিদ, স্থপতি ও বিশেষজ্ঞদের দেখাই। জিনিসটা দেখার পর তারা মতামত দেন। আমরা সেটিকে আরো একটি ফাইন টিউনিং করার পর একটা চেহারা স্পষ্ট হয়ে যায়। এই প্রক্রিয়ায় আমরা এখন কাজটা করছি। এই ভারচুয়াল মিউজিয়ামের বিটা ভার্সন বা প্রাথমিক খসড়া এরই মধ্যে প্রস্তুত হয়ে গেছে। ২০২২ সালে সেটির উদ্বোধন হওয়ার কথা। আশেক এ ইলাহী অনি বলেন, ‘‘এটা একটা অসাধারণ অভিজ্ঞতা এবং আমরা মনে করি যে আমরা ভারচুয়াল রিয়ালিটির মাধ্যমে আমরা অনেকটা কাছাকাছি নিয়ে যেতে পেরেছি, এখনো হয়ত পুরোপুরি শতভাগ সফল হইনি, কিন্তু আমরা সেই মান অর্জন করার আশা রাখি। বাংলাদেশের ভার্চুয়াল মিউজিয়ামে ইতিহাস জীবন্ত করে তোলা হচ্ছে। ফলে মানুষ কয়েক'শো বছর আগে ফিরে গিয়ে অতীতের স্বাদ নিতে পারেন। সূত্র: ডয়চে ভেলে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ষাট গম্বুজ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ