প্রাক্তন প্রেমিকের নির্যাতনের শিকার অভিনেত্রী
মালায়ালাম সিনেমার অভিনেত্রী আনিকা বিক্রমন। প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাই তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ
মডেল তিনি হত্যার পর দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। সে সময় সবার দাবি ছিল দ্রুত সময়ের মধ্যে খুনিদের বিচারের। কিন্তু সেই বিচার ১৯ বছরেও শেষ হয়নি।
জানা যায়, নব্বই দশকের আলোচিত মডেল ও অভিনেত্রী সৈয়দা তানিয়া মাহবুব তিন্নি। ২০০২ সালের ১০ নভেম্বর রাতে কেরানীগঞ্জের বুড়িগঙ্গা নদীর ১ নম্বর চীন মৈত্রী সেতুর ১১ নম্বর পিলারের পাশে তার লাশ পড়েছিল। তিন্নি হত্যা মামলায় একমাত্র আসামি বরিশাল-২ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক অভি। ১৯ বছর পেরিয়ে গেলেও তিনি আজও ধরাছোঁয়ার বাইরে। অভির বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার জন্য সোমবার (১৫ নভেম্বর) দিন ধার্য ছিল। ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ কেশব রায়চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করার কথা থাকলেও সেটি হয়নি।
জানা যায়, এদিন মামলার বাদী নিহত তিন্নির বাবা সৈয়দ মাহবুবুল করিম ও চাচা সৈয়দ রেজাউল করিম তাদের জবানবন্দি গ্রহণের আবেদন করেন। এই আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর ভোলা নাথ দত্ত ও মো. সলিম উল্লাহ (খসরু) এ তথ্য জানান।
এই হত্যাকাণ্ড মডেল তিন্নির পুরো পরিবারকে লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে। সে সময় তিন্নি ছিলেন এক কন্যাসন্তানের জননী। তার মেয়ের বয়স ছিল দেড় বছর। সে হিসেবে বর্তমানে মেয়েটির বয়স ২০ বছর। মায়ের মৃত্যুর ১৯ বছর পর সেই মেয়ে এখন কোথায়? কার সঙ্গেই বা থাকছেন তিন্নির মা-বাবা?
জানা গেছে, মডেল তিন্নির একমাত্র মেয়ে এখন বাবার সঙ্গে বিদেশে থাকেন। তিন্নিরা ছিলেন দুই বোন, ছোট বোন এয়ার হোস্টেস। তিন্নির বাবা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান কর্মজীবন প্রবাসে কাটালেও এখন দেশে একা থাকেন। তিন্নির মা স্বামীকে ছেড়ে পাকিস্তান চলে গেছেন।
এদিকে কলাবাগানে ফুফুর যে বাড়িতে তিন্নিরা থাকতেন, অভির (তিন্নি হত্যার আসামি) ভয়ে বাড়িটি বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয় পরিবারটি। এভাবেই একটি খুনের কারণে তছনছ হয়ে যায় সাজানো পরিবার।
২০০২ সালের ১০ নভেম্বর রাতে মডেল তিন্নির লাশ পাওয়া গেলেও প্রথমে সেটি শনাক্ত করা যায়নি। পরদিন (১১ নভেম্বর) নাম না জানা আসামির বিরুদ্ধে মামলা করেন কেরানীগঞ্জ থানার তৎকালীন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. সফি উদ্দিন। এ মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন ওই থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মো. কাইয়ুম আলী সরদার।
পরবর্তীতে লাশটি তিন্নির শনাক্ত হলে মামলাটি চাঞ্চল্যকর উল্লেখ করে ২০০২ সালের ২৪ নভেম্বর তদন্তভার সিআইডিতে ন্যস্ত হয়। মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান সিআইডির পরিদর্শক সুজাউল হক, সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) গোলাম মোস্তফা, এএসপি আরমান আলী, এএসপি কমল কৃষ্ণ ভরদ্বাজ ও এএসপি মোজাম্মেল হক। সর্বশেষ তদন্ত কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক ২০০৮ সালের ৮ নভেম্বর সাবেক ছাত্রনেতা ও সংসদ গোলাম ফারুক অভিকে একমাত্র আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
তিন্নি হত্যা মামলায় জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক অভির বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার তারিখ পিছিয়ে আগামি ১৫ নভেম্বর ধার্য করেছেন আদালত। গত মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ কেশব রায়চৌধুরী এ তারিখ নির্ধারণ করেন।
এই মামলায় পুলিশি তদন্তে প্রাথমিকভাবে জাতীয় পার্টির সাবেক সাংসদ গোলাম ফারুক অভি অভিযুক্ত হলেও পুলিশ তাকে আটক করতে পারেনি। অভির অনুপস্থিতিতেই ২০১০ সালের ১৪ জুলাই ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তিন্নি হত্যা ও লাশ গুম-সংক্রান্ত মামলায় অভির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। তিন্নি হত্যা মামলার অভিযোগপত্রে ৪১ জনকে সাক্ষী করা হয়। এ ছাড়াও এই মামলায় ২২টি আলামত জব্দ করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।