Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বামীর পায় পড়েও পায়নি নিশ্চিত জীবন অবশেষে এখন বিদ্যালয়মুখী

প্রকাশের সময় : ১৯ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নুরুল ইসলাম, বেতাগী (বরগুনা) থেকে

দফায় দফায় নির্যাতন সয়ে স্বামীর পায় হাত ধরেও কোন কিছুতেই মেলেনি বালিকা বধূ শারমিন আকতার নিপার নির্বিঘেœ পথ চলার নিশ্চয়তা। অবশেষে স্বামী জেল হাজতে ঢোকার পর সে এখন বিদ্যালয়মুখী হয়েছে। বর্তমানে সে নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। তিনি বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের ফুলতলা গ্রামের মো. আবুল হোসেন হাওলাদারের মেয়ে ও বেতাগী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভোকেশনাল শাখার ১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। ভালোবাসার কথা বলে যে যুবক বিয়েতে বাধ্য করেছিল সেই স্বামীই আজ জীবনের কাল হয়ে দাঁড়ায়। শারমিন আকতার নিপা জানান, সদর ইউনিয়নের ভোলানাথপুর গ্রামের আবদুস সোবাহানের ছেলে মো. সানোয়ার হোসেনের (৩৫) সাথে ২০১৬ সালে জানুয়ারি মাসে পরিবারের চাপে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন। বিয়ের ১০ দিনের মাথায় স্বামী সানোয়ার হোসেন নগদ অর্থ দাবি করে। নিপার পরিবার টাকা না দিতে পারায় শুরু হয় স্বামী ও তার পরিবারের অমানবিক নির্যাতন। নিপা অভিযোগ করেন, একাধিকবার নির্যাতনের পর নিকটবর্তী তার বাবার বাড়ি যেতে চাইলে যাতে কাউকে কিছু না বলতে পারি সে জন্য পা গুঁড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। স্কুল ছাড়তেও বাধ্য করেন স্বামী। ক্লাশে যেতে বাধা দিয়ে ভবিষ্যতে নিজের পায়ে যেন না দাঁড়াতে পারে বড় হওয়ার সে স্বপ্ন ভেঙে দেয়। ৮ মাসের বৈবাহিক জীবনে মাত্র ২ মাস কাটে শ্বশুরবাড়ি। নিপা জানান, স্বামীর আরো একাধিক বিয়ে ও প্রেমের ঘটনা রয়েছে এবং অপরাধে জড়িয়ে পড়ে যা তার পরিবার আগে জানতেন না। মেয়ের লেখাপড়ার প্রবল ইচ্ছার কারণে জামাইয়ের নির্যাতন এড়াতে নিজ বাড়িতে রেখেই নিপাকে লেখাপড়া করাচ্ছিলেন বাবা আবু হাওলাদার। কিšুÍ স্বামী সানোয়ার স্কুলে যেতে নিষেধ করলেও তা অমান্য করে এ বছরের গত ২৯ আগস্ট সকালে বাড়ি থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসার পথে কাঠ দিয়ে বেধড়ক আঘাত করে সানোয়ার। এতে নিপা মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হলে ভর্তি হয়ে দীর্ঘদিন বেতাগী হাসপাতালে কাটায়। নিপার মা চম্মা বেগম অভিযোগ করেন, এর পরেও সানোয়ার দু‘দফায় রামদা নিয়ে তাদের জীবন নাশের হুমকি দেয়। এ ব্যাপারে থানায় মামলা হওয়ায় গত ২১ সেপ্টেম্বর সানোয়ারকে পুলিশ গ্রেফতার করে বরগুনা জেল হাজতে প্রেরণ করে। শারমিন আকতার নিপার জিজ্ঞাসা, ‘মেয়ে হয়ে জন্মানো কি অপরাধ। একজন নারী হিসেবে লেখাপড়া করতে চাওয়া কি আমার অন্যায়? আমি নির্বিঘেœ পথচলা ও স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেতে চাই।’ মানবাধিকার উন্নয়নে কর্মরত সংগঠন উপজেলা সচেতন নাগরিক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম মন্টু বলেন, ‘মেয়েটি যাতে নিরাপদে লেখাপড়া করতে পারে আমিও সে প্রত্যাশা করি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্বামীর পায় পড়েও পায়নি নিশ্চিত জীবন অবশেষে এখন বিদ্যালয়মুখী
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ