Inqilab Logo

সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

সত্যাগ্রহের ধাঁচে কর্মসূচি কংগ্রেসের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১১ নভেম্বর, ২০২১, ৫:৫২ পিএম

২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেস-মুক্ত ভারতের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দাবি করেছিলেন, খোদ মোহনদাস গান্ধীই স্বাধীনতার পরে কংগ্রেস দলটিকে ভেঙে দেয়ার কথা বলেছিলেন। গান্ধী আসলে কংগ্রেস-মুক্ত ভারতই চেয়েছিলেন। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে সেই মোহনদাস গান্ধীর নির্দেশিত অহিংস সত্যাগ্রহের পথেই ফিরতে চাইছে রাহুল গান্ধীর কংগ্রেস।

রান্নার গ্যাস, পেট্রল-ডিজ়েল থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে ১৪ নভেম্বর থেকে কংগ্রেসের ‘জন জাগরণ অভিযান’ শুরু হচ্ছে। ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত এই অভিযানে কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা সাত দিনের জন্য পদযাত্রা করবেন। সে সময়ে কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদের জন্য গান্ধী টুপি মাথায় দেয়া বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। গান্ধীর পদযাত্রার আদলেই কংগ্রেসের এই পদযাত্রায় বড় জনসভার বদলে ছোট ছোট বৈঠকের আয়োজন করা হবে। সেখানে মূল্যবৃদ্ধি ও আমজনতার জীবনে তার প্রভাব নিয়ে আলোচনা করা হবে।

জন জাগরণ অভিযানের ‘লোগো’ হিসেবে গান্ধীর ডান্ডি অভিযানের ছবিই বেছে নেয়া হয়েছে। দলিত, অনগ্রসর শ্রেণির মানুষ তো বটেই। এই অভিযানে মহিলাদের অংশগ্রহণে জোর দিতে চাইছে কংগ্রেস। ডান্ডি অভিযানের মতোই। মানুষের সমস্যা নিয়ে টানা আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করতে সনিয়া গান্ধী দিগ্বিজয় সিংহের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করেছিলেন। সেই দিগ্বিজয় বলেন, ‘লবণের উপরে কর চাপানোর প্রতিবাদে গান্ধী ডান্ডি অভিযান করেছিলেন। আমরা গ্যাস, জ্বালানিতে কর চাপানোর বিরুদ্ধে জন জাগরণ অভিযান করছি। যখন গান্ধীজি ডান্ডি অভিযানের পরিকল্পনা করেন, অনেকেই সংশয়ে ছিলেন। গান্ধীজি বলেছিলেন, মহিলারা ঠিক এতে যোগ দেবেন। সেটাই হয়েছিল। ডান্ডি অভিযানে অংশগ্রহণকারী ৩৯ হাজার মানুষের মধ্যে ১৯ হাজারই ছিলেন মহিলা।’

কংগ্রেসের পুরনো দিনের আন্দোলনের মতো জন জাগরণ অভিযানের দিন সকালে প্রভাত ফেরি ও তার পরে দলিত, অনগ্রসর শ্রেণির মানুষের এলাকায় সাফাই অভিযানের পরিকল্পনা করা হয়েছে। রাহুল গান্ধীর পরিকল্পনা মাফিক আগেই ঠিক হয়েছিল, ১২ থেকে ১৫ নভেম্বর মহারাষ্ট্রের ওয়ার্ধায় গান্ধীর সেবাগ্রামে কংগ্রেস নেতাদের মতাদর্শগত প্রশিক্ষণের বন্দোবস্ত হবে। ওই চার দিনের মধ্যে এক দিন মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে অভিযানের বিষয়েও রাজ্য স্তরের নেতাদের জন্য প্রশিক্ষণের বন্দোবস্ত করা হচ্ছে।

গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ এক এআইসিসি নেতার ব্যাখ্যা, ‘কংগ্রেস স্বাধীনতা আন্দোলনের জন্য তৈরি হয়েছিল। কিন্তু তার পরে সরকারি ক্ষমতার জন্য দলে পরিণত হয় দলটি। এখন কংগ্রেসকে আবার আন্দোলনের দলে পরিণত করতে হবে।’ তার ব্যাখ্যা— মোদি ভুল বলেছিলেন। গান্ধীজি আসলে কংগ্রেসের ভোল বদলের প্রয়োজনের কথা বলেছিলেন। রাহুল গান্ধী এখন সেটাই করতে চাইছেন।

কংগ্রেস সূত্রের খবর, প্রথমে মূল্যবৃদ্ধি, তার পরে কৃষকদের দাবি, শ্রমিকদের সমস্যা, সরকারি সম্পত্তি বিক্রির বিরুদ্ধে আন্দোলনে যেতে চাইছেন সোনিয়া-রাহুল-প্রিয়ঙ্কারা। দিগ্বিজয়ের নেতৃত্বাধীন কমিটির সঙ্গে গান্ধী পরিবারের আলোচনা অনুযায়ী, ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত টানা আন্দোলন হবে। রাহুল-প্রিয়ঙ্কাও এই আন্দোলনে অংশ নেবেন।

রাহুল নিজে বুধবার টুইট করে বলেছেন, বিজেপি সরকারের ‘জন উৎপীড়ন অভিযান’ চলছিল। এ বার কংগ্রেসের ‘জন জাগরণ অভিযান’ চলবে। অন্যায়ের জবাব আদায় করেই ছাড়ব। এখন কংগ্রেসের অন্দরমহলে প্রশ্ন একটাই। মরচে পড়ে যাওয়া কংগ্রেসের সংগঠনকে সত্যিই আবার পথে নামানো যাবে তো? দিগ্বিজয়ের জবাব, ‘সেটাই আসল চ্যালেঞ্জ।’ সূত্র: এবিপি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ