Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

খাগড়াছড়িতে হাতির মাথা ‘স্বর্গের সিঁড়ি’

মো. ইব্রাহিম শেখ খাগড়াছড়ি থেকে : | প্রকাশের সময় : ১১ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০৪ এএম

খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার পেরাছড়া ইউনিয়ন পরিষদের অন্তর্গত দুর্গম এলাকা মায়ুং কপাল পাড়া। এটি ত্রিপুরা অধ্যাসিত এলাকা। প্রাকৃতিকভাবে হাতির অবয়বে পাহাড়ের গঠন হওয়ায় স্থানীয়দের কাছে এই জায়গা ‘হাতির মাথা’ হিসেবে পরিচিত। অনেক উঁচুতে সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হয় বলে অনেকে এটিকে ‘স্বর্গের সিঁড়ি’ বলছেন। খাগড়াছড়িতে স্বর্গের সিঁড়ি হাতির মাথার চূড়া থেকে খাগড়াছড়ির স্বুউচ্চ পাহাড় সারির সৌন্দর্য বেশ সুন্দর লাগে। পাহাড়ের চূড়ায় উঠলে পাখির চোখে দেখা যায় খাগড়াছড়ি শহর। এখানে শীতল হাওয়া ও পাখির কলতান উপভোগ করেন পর্যটকরা। ফলে দিনে দিনে আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে এই এলাকা। প্রাকৃতিকভাবে আকর্ষণীয় হাতির মাথা ও চলাচলের জন্য বানানো স্বর্গের সিঁড়িকে খাগড়াছড়ির পর্যটন স্পটে নতুন সংযোজন হিসেবে দেখছে জেলা প্রশাসন।

খাগড়াছড়িতে হাতির মাথায় পায়ে হেঁটে যাওয়া ছাড়া আর কোন পথ নেই। পানছড়ি সড়কের পেরাছড়া থেকে চেঙ্গী নদী পেরিয়ে দেড় থেকে দু’ঘণ্টায় হেঁটে যাওয়ার পর উঁচু-উঁচু পাহাড় দেখা যায়। এগুলোর একটির ওপর নির্মাণ করা হয়েছে সিঁড়ি। স্থানীয়দের চলাচলের জন্য ২০১৫ সালে ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে সিঁড়ি স্থাপন করে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। খাঁড়া পাহাড় বেয়ে ওঠা নান্দনিক সিঁড়ি স্থানীয়দের প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। প্রায় ’দুইশ’ সিঁড়ির ধাপ পেরিয়ে পাহাড়ের চূড়ায় উঠতে হয়। খাগড়াছড়িতে ‘হাতির মাথা’ পাহাড়িদের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পর্যটকরা বেড়াতে আসেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জানতে পেরে এসেছেন ঢাকার বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, পাহাড়ের উঁচু নিচু পথ পেরিয়ে এখানে ঘুরতে এসে মুগ্ধ হয়েছি। দুর্গম হাতির মাথা বা স্বর্গের সিঁড়ি না দেখলে ভ্রমণটা অপূর্ণ থেকে যেতো।

খাগড়াছড়িতে ‘হাতির মাথা’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সাজেদা চৌধুরী দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, হাতির মাথা এলাকায় ঘুরতে এসে নদী, পাহাড়ি পথে সবুজের সমারোহ, বিভিন্ন বন্যফুল, আকাশ ও মেঘ আর ত্রিপুরা উপজাতিদের জীবন, সংস্কৃতি উপভোগ করা যায়। ‘হাতির মাথা’ ও ‘স্বর্গের সিঁড়ি’ সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে পরিকল্পনামাফিক স্থাপনা তৈরি করলে হাতির মাথা খাগড়াছড়ির আরেকটি অন্যতম পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হবে বলে মনে করেন ভ্রমণপ্রেমিরা। কুমিল্লার ইসমাইল হোসেন বলেন, হাতির মাথা যাওয়ার রাস্তায় চলাচলের যানবাহন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও গাইডসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা থাকলে পর্যটক সমাগম আরও বাড়বে। স্থানীয় পেরাছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তপন বিকাশ চাকমা দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, হাতির মাথা নতুন পর্যটন এলাকায় পরিণত হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে পর্যটকদের জন্য একটি যাত্রী ছাউনি, বসার জায়গা ও টি স্টলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এছাড়া গাইডও থাকবে।
হাতির মাথা ও স্বর্গের সিঁড়ি জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস হাতির মাথা এলাকার কথা শুনেছেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ খবর নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসার ইচ্ছের কখা বলেন। পর্যটন স্পট হিসেবে এলাকাটিকে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা থাকলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। তার কথায়, খাগড়াছড়িকে পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে আকর্ষণীয় স্থানগুলোকে সাজানোর পরিকল্পনা রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হাতির মাথা ‘স্বর্গের সিঁড়ি’
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ