Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খানাখন্দে চলাচলে ভোগান্তি

কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়কের ১০ কিলোমিটার

কামাল আতাতুর্ক মিসেল : | প্রকাশের সময় : ১১ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০৪ এএম

 ব্যস্ত ও জনগুরুত্বপূর্ণ একটি মহাসড়কের নাম ‘কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়ক’। দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের ৩২ জেলার প্রবেশদ্বার গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়কটির বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। কুষ্টিয়া শহর থেকে বারোমাইল পর্যন্ত সড়কের দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার। এর মধ্যে প্রায় ১০ কিলোমিটার সড়কে ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় ওই সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা তীব্র যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যা পড়তে হচ্ছে পণ্যবাহী যান চলাচলে। মাঝেমধ্যে ট্রাক উল্টে যাওয়ারও ঘটনা ঘটছে। ভাঙা সড়ক নিয়ে ভোগান্তি যেন চরমে পৌঁছেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কটি দিয়ে চলাচল অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। ব্যাপক গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এ নিয়ে যাত্রী সাধারণ ও যানবাহন চালক-হেলপারদের মধ্যে ক্ষোভের শেষ নেই। বিগত দিনে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সৃষ্ট গর্তগুলোতে ইট-বালি দিয়ে ভরাট করে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে। তবে দিন শেষে আবারও ‘যে লাউ সেই কদু’ অবস্থা। রাস্তার দু’পাশে শত শত বাস-ট্রাক ঘণ্টার পর ঘণ্টা মহাসড়কে দাঁড়িয়ে থাকছে রাস্তা পারাপারের অপেক্ষায়। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। দেবে যাওয়া অংশের দুইপ্রান্তের সামান্য এই চারশ’ মিটার সড়ক অতিক্রম করতেই তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লেগে যাচ্ছে। জনভোগান্তির পাশাপাশি এ অংশটুকুতে মাঝেমধ্যেই ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি খারাপ হয়েছে তালবাড়িয়া, রানাখড়িয়া ও বহলবাড়িয়া এলাকায়। এই এলাকায় বালুর ঘাট রয়েছে।
রানাখড়িয়া এলাকায় প্রায় দেড় কিলোমিটার অংশ পিচ ও পাথর উঠে সেখানে কাঁদা হয়ে আছে। তালবাড়িয়া বালুমহাল থেকে প্রতিদিন কয়েক শত ড্রাম ট্রাক ও অন্যান্য ট্রাক ভেজা বালু নিয়ে যাতায়াত করে। এতে সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। বালুবাহী ভারি ট্রাক চলায় সড়কটি দিন দিন আরও বেহাল হচ্ছে। সেখানে প্রায়ই প্রতিদিনই ভারি যানবাহন বিকল হয়ে পড়ে। তখন যান চলাচল স্বাভাবিক হতে ২ থেকে ৩ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। প্রতিদিন বালুবোঝাই ভারি ট্রাক এখান দিয়ে মহাসড়কে উঠছে। ড্রাম ট্রাকে অতিরিক্ত লোডের কারণে খুবই অল্প সময়ের মধ্যে এই সড়কটির বারবার বেহাল দশা হচ্ছে। এতে খেসারত দিতে হচ্ছে জনসাধারণকে। ওই অঞ্চলের ব্যস্ততম এ মহাসড়কটি যেন এখন মহাদুর্ভোগেরই নামান্তর।
স্থানীয় সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২৬ মাস আগে গুরুত্বপূর্ণ এ মহাসড়কটি নির্মাণ করা হয়। সে সময় পণ্যবোঝাই ভারি যানবাহন চলাচলের মত সক্ষমতার বিষয়টি মাথায় না রেখেই সড়কটি নির্মাণ করা হয়েছিলো। ফলে এখন দিনরাত ভারি যানবাহন চলাচল করায় কদিন পর পরই সড়কের বিভিন্ন অংশে খানাখন্দ তৈরি হচ্ছে। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই খানাখন্দে সড়কটির অবস্থা বেহাল হয়ে পড়ে। স্থানীয়রা জানান, যে স্থানে সড়ক দেবে গেছে তার পাশেই রানাখড়িয়া বালুর ঘাট। প্রতিদিন ভেজা বালুবোঝাই শত শত ট্রাক এ মহাসড়কে যাতায়াত করছে। ভারি যানবাহন চলাচলের উপযোগী করে তৈরি না করায় সড়কটি দ্রæত নষ্ট হচ্ছে।
এ সড়কে নিয়মিত যানবাহনে যাতায়াত করেন স্থানীয় মীর আবদুল করিম কলেজের শিক্ষক গোলাম আনোয়ার। সড়কের অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি নিয়মিত এই সড়কে যাতায়াত করি। সড়কে ব্যাপক গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় মানুষের অনেক শ্রম ঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে, পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি। দেশে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের কারণে বিভিন্ন মহলে বাংলাদেশ সরকারের উন্নয়ন প্রশংসনীয় হলেও এ সড়কটির দুরাবস্থার কারণে ভাবমর্যাদা ক্ষুণœ হচ্ছে।
দূরপাল্লার বাসের চালক দিদার হোসেন বলেন, দশমাইল এলাকা থেকে ১৫ কিলোমিটার সড়ক পার হয়ে কুষ্টিয়া শহরে আসতে কমপক্ষে আড়াই ঘন্টা সময় লাগছে। আগে যেখানে আধা ঘণ্টায় আসা যেত। মাঝে মাঝে এসব স্থানে ভারি যানবাহন চলতে গিয়ে বিকল হয়ে সড়কের মাঝে পড়ে থাকে।
তালবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা মামশাদ কবির বলেন, গত কয়েক মাস আগে ধুলা দুর্ভোগের কারণে সড়ক সংস্কারের দাবিতে উপজেলার মীর আবদুল করিম কলেজের ২ শতাধিক শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা একসঙ্গে মিলে ওই মহাসড়ক আড়াই ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে। এই সড়ক বেহাল অনেক দিন ধরেই। এক বছরের অধিক সময় যাবৎ এই সড়কে বেহাল দশা। বর্তমানে গর্তের কারণে একেবারেই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিরুল ইসলাম জানান, জেলার ত্রিমোহনী থেকে ভেড়ামারা উপজেলার বারোমাইল পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার সড়কটি পুননির্মাণের জন্য স¤প্রতি দরপত্র আহŸান করা হয়েছে। শিগগিরই সড়কটির নির্মাণ কাজ শুরু হবে। পুননির্মাণ শেষ হলে জনদুর্ভোগ লাঘব হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খানাখন্দ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ