বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
নির্বাচন কমিশন কর্তৃক দ্বিতীয় ধাপে আসন্ন ১১ ই নভেম্বর সখিপুরের ৪টি ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সখিপুরে চারটি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ইতিমধ্যেই দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগ। এ দিকে নির্বাচনে আসেনি বিএনপি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ। জাতীয় পার্টি ৪র্টি ইউনিয়নের মধ্যে একমাত্র বহেড়াতৈল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী দিয়েছে। এ কারণে অনেকটা ফাঁকা মাঠ ছিল আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীদের জন্য। কিন্তু প্রতিটি ইউনিয়নেই শক্তিশালী স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিদ্রোহীদের আনাগোনা আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের শঙ্কায় ফেলে দিয়েছে।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন যাদবপুর ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান স্থানীয় এমপির ছোট ভাই এ কে এম আতিকুর রহমান আতোয়ার, কাঁকড়াজানে ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক তারিকুল ইসলাম বিদ্যুৎ, বহুরিয়া ইউপিতে উপজেলা আওয়ামীলগের সভাপতির ছেলে বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া সেলিম ও বহেড়াতৈল ইউপিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ওয়াদুদ হোসেন।
অপরদিকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে কাঁকড়াজান, যাদবপুর ও বহুরিয়া ইউপিতে আরও চারজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বহেড়াতৈল ইউপিতে দলীয় মনোনয়ন না চাইলেও বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম ফেরদৌস স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই তাঁরা বিদ্রোহী হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছেন।
এদিকে বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মধ্যেও ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় বিদ্রোহী প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা। তাঁরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন কি না, তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত।
এদিকে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। চারটি ইউপিতে বইছে নির্বাচনী উৎসবের আমেজ। চেয়ারম্যান প্রার্থীদের পাশাপাশি চলছে সংরক্ষিত নারী ও ইউপি সদস্য পদপ্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা। সাধারণ ভোটার থেকে শুরু করে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে চলছে প্রার্থীদের নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কুতুব উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘চার ইউপি নির্বাচনে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, উপজেলা ও জেলা আওয়ামী লীগের সমন্বয়ে একাধিক প্রার্থীর নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছিল। এঁদের মধ্যে ১০ অক্টোবর দলের মনোনয়নপ্রাপ্তদের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। বর্তমানে আমরা দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্তদের নিয়েই কাজ করছি।’
স্থানীয় একটি বিশ্বস্ত সূত্রমতে, চারটি ইউপিতে বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে অস্বস্তিতে রয়েছেন দলটির ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা। অনেক দফায় বৈঠক করেও বিদ্রোহী প্রার্থী ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা। কোনোভাবেই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করাতে পারছেন না।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত শিকদার বলেন, ‘দলীয় মনোনয়ন বোর্ড যাদের যোগ্য মনে করেছেন তাঁরাই মনোনয়ন পেয়েছেন। বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে অনেকে মনোনয়নপত্র কিনলেও শেষ পর্যন্ত তাঁরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেবেন বলে আশা করছি। দল থেকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে অবশ্যই ইউনিয়নবাসীর বহুমুখী উন্নয়ন হবে। ইতিমধ্যে দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করতে কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে যাদবপুর ইউপিতে সাবেক চেয়ারম্যান খন্দকার বজলুর রহমান বাবুল ও কাঁকড়াজান ইউপিতে মো. দুলাল হোসেন, বহুরিয়া ইউপিতে ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি নূরে আলম মুক্তা, নিরঞ্জন সরকার নিরঞ্জন সরকার ও বহেড়াতৈল ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান স্থানীয় সাবেক এমপির ফুফাতো ভাই গোলাম ফেরদৌস।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চিত্রা শিকারী বলেন, এবার উপজেলার চারটি ইউপিতে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হবে। সাধারণ ভোটাররা যাতে তাঁদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন এ জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।