পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চেক জালিয়াতি করে ৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযুক্ত যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান, সচিবসহ অন্যরা বহাল তবিয়বে রয়েছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা করলেও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। স্বপদে থেকে তারা মামলা ও তদন্ত প্রভাবিত করছেন বলে বোর্ডের অনেকে দাবি করেছেন। শুধু তাই নয়, অডিট ও হিসাব শাখাও পুরো বন্ধ করে দিয়েছেন।
যশোর শিক্ষাবোর্ডের অডিট অফিসার আবদুস সালাম জানান, ২০২০-২১ অর্থবছরের বিভিন্ন মালামাল ক্রয় বাবদ সরকারের ভ্যাটের ১০ হাজার ৩৬ টাকার ৯টি চেক ইস্যু করা হয়। কিন্তু পরবর্তিতে দেখা যায় যশোরের ভেনাস প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং ৭টি ও শাহীলাল স্টোর নামে দুটি চেকের মাধ্যমে বোর্ডের ২ কোটি ৫০ লাখ ৪৪ হাজার ১০ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। পরবর্তীতে ১৭ অক্টোবর আরো জালিয়াতি ধরা পড়ে। মোট ২৬টি চেক জালিয়াতি করে ৫ কোটি ৯ লাখ টাকা আত্মসাত করা হয়েছে। আমরা চেকের মুড়ি বইয়ের সাথে ব্যাংকের স্টেটমেন্ট মেলানোর সময় এই জালিয়াতি ধরা পড়ে। অথচ মুড়ি বাইয়ের চেকের অঙ্কের সাথে ইস্যুকৃত চেকের অঙ্কের মিল নেই। সোনালী ব্যাংক শিক্ষাবোর্ড শাখার ব্যবস্থাপক এসএম শাহিদুর রেজা জানান, ভেনার্স প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং ঢাকার ফকিরাপুল ঠিকানার চেক ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক যশোর শাখার ক্লিয়ারিং চেকের মাধ্যমে এসব টাকা তুলে নেয়া হয়েছে।
গত ১৮ অক্টোবর দুদক’র সমন্বিত যশোর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাহফুজ ইকবাল এ বিষয়ে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোল্লা আমীর হোসেন, সচিব অধ্যাপক এএম এইচ আলী আর রেজা, হিসাব সহকারী আবদুস সালাম, প্রতারক প্রতিষ্ঠান ভেনাস প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিংয়ের মালিক রাজারহাট এলাকার বাসিন্দা আবদুল মজিদ আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম বাবু ও শেখহাটী জামরুলতলা এলাকার শাহীলাল স্টোরের মালিক মৃত সিদ্দিক আলী বিশ্বাসের ছেলে আশরাফুল আলমের নামে মামলা করেন।
কিন্তু এতো বড় দুর্নীতির অভিযোগের পরও বহাল তবিয়বে রয়েছেন বোর্ড চেয়ারম্যান, সচিবসহ জালিয়াত চক্রের হোতারা। শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। দুর্নীতি নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটিও প্রতিবেদন দেয়নি।
অবশ্য তদন্ত কমিটির প্রধান যশোর শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক কেএম রব্বানী জানান, আমাদের তদন্ত শেষ। আমরা জালিয়াতির মাধ্যমে দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছি। চলতি সপ্তাহে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।
এর আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আইন অনুসারে মামলা হওয়ার পর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে ও গ্রেফতার হলে তারা সাময়িক বরখাস্ত হবেন। এছাড়া দুর্নীতি তদন্তে গঠিত কমিটির প্রতিবেদন পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্যদিকে, বোর্ডের চেয়ারম্যানের অপকর্ম উল্লেখ করে তাকে অপসারণে চলতি বছরের ২৫ আগস্ট যশোর-২ আসনের এমপি মেজর জেনারেল (অ.) নাসির উদ্দিন ও যশোর-৬ আসনের এমপি জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার শিক্ষামন্ত্রীর কাছে ডিও লেটার দেন। কিন্তু মন্ত্রণালয় তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
শিক্ষা বোর্ডের কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবলু অভিযোগ করেন, দুই সংসদ সদস্য ডিও লেটার দিলেও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এখন তিনি দুর্নীতির মামলার আসামি হয়েও স্বপদে রয়েছেন। ফলে সঠিক তদন্ত হবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। আর বোর্ডের অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও তার অনিয়মের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে ভয় পাচ্ছেন।
এদিকে দুদক মামলা করলেও এখনো তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ হয়নি। ফলে বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আশঙ্কা করছেন বোর্ড চেয়ারম্যান তদবির করে আটকে দিয়েছেন তদন্ত কার্যক্রম।
দুর্নীতি দমন কমিশন যশোর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত বলেন, বোর্ডের দুর্নীতির মামলার ফাইল দুদকের প্রধান কার্যালয়ে পৌঁছে গেছে। সেখান থেকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে। আশা করছি চলতি মাসের যে কোনো দিন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।