Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অর্ধ শতাব্দীর রহস্য

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০৫ এএম

প্রায় অর্ধ শতাব্দী পরে রহস্যের জট খুললো। সমাধান হলো একটি বড় সমস্যার। ১৯৭৩ সালে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুতে অবস্থিত মানু ন্যাশনাল পার্কে বিজ্ঞানী রবিন ফস্টার একটি গাছ আবিষ্কার করেন। তাতে ধরেছিল উজ্বল কমলা রঙের ফল। এটি দেখতে অনেকটা কাগজে তৈরি লণ্ঠনের মতো। কিন্তু কি নাম এই ফলের, গাছটিই বা কোন গোত্রের, কোন পরিবারভুক্ত- তা তিনি কোথাও পেলেন না। কেউ বলতে পারলো না এর নাম কি। ফলে ওই ফলটি অজ্ঞাত থেকে যায়।

এত বছর, প্রায় অর্ধ শতাব্দী পরে এসে বিজ্ঞানীরা তার নামকরণ করলেন। অ্যাইনিগমানু অ্যালভারেজি বা মানুর রহস্য হিসেবে একে শ্রেণিবিন্যাস করা হয়েছে। ট্যাক্সন জার্নালে লেখা এক প্রতিবেদনে এ কথা লিখেছেন বিজ্ঞানী রবিন ফস্টার। বিজ্ঞানী রবিন ফস্টার যখন ওই পার্ক সফরে গিয়েছিলেন, তখন তিনি রঙিন গাছটি থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছিলেন। তা পরে তিনি অন্য গবেষকদের দেখিয়েছেন। কিন্তু এটি কোন রকম নমুনা তা শনাক্ত করতে পারেননি কেউ। এই গাছটির যে বৈশিষ্ট্য তা বিভিন্ন পরিবারের গাছে দেখা যায়। রবিন ফস্টার হলেন শিকাগোর ফিল্ড মিউজিয়ামের অবসরপ্রাপ্ত একজন কিউরেটর এবং স্মিথসোনিয়ান ট্রাপিক্যাল রিসার্স ইনস্টিটিউটের গবেষক। তিনি এই গাছটিকে শ্রেণিবিভাগ করতে গিয়ে উপরের কথাগুলো বলেছেন। এক বিবৃতিতে বলেছেন, দ্রুততার সঙ্গে আমি এটার পরিবার সম্পর্কে বলে দিতে পারি। কিন্তু মনে হতে থাকে, আমি কি ঠিকটা বলতে পারছি।

শিকাগোর ফিল্ড মিউজিয়ামের গ্রীষ্মম-লীয় বৃক্ষ বিষয়ক বিজ্ঞানী, এই গবেষণার লেখক ন্যান্সি হেনসোল্ড। তিনি বলেন, গ্রীষ্মম-লীয় এই গাছটিকে শ্রেণিবিভাগ করতে কয়েক দশকের গবেষণা প্রয়োজন হয়ে পড়ে। কারণ, বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হতে পারছিলেন না যে, এই গাছটি বৃক্ষ সমাজের কোন পরিবারভুক্ত। ফিল্ড মিউজিয়ামের একদল গবেষক এই গাছটির ডিএনএ বিশ্লেষণের উদ্যোগ নেন। কিন্তু শুকনো নমুনার কারণে সেই পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি। ন্যান্সি হেনসোল্ড বলেন, কিছু শুষ্ক জিনিসের ডিএনএ পরীক্ষা করা যায় না। যদি এমন কোনো নমুনার ডিএনএ ভালভাবে সুরক্ষিত আছে কিনা অথবা দ্রুততার সঙ্গে ভেঙে গেছে কিনা, তা নির্ধারণ করতে হয় অদ্ভুত রাসায়নিক প্রক্রিয়ায়।

সৌভাগ্য এই যে, মানু ন্যাশনাল পার্কের একজন বিজ্ঞানী প্যাট্রিসিয়া আলভারেজ-লোয়জা ২০১৫ সালে টাটকা কিছু নমুনা সংক্রহ করেন। তা তিনি ফিল্ড মিউজিয়ামের গবেষকদের দেন। তা নিয়ে গবেষণা করে বিজ্ঞানীরা দেখতে পান ওই গাছটি পিক্রামনিয়াসেই পরিবারভুক্ত। এটি হলো পৃথিবীর পশ্চিম গোলার্ধের গ্রীষ্মম-লীয় অঞ্চলের একটিক্ষুদ্র পরিবার। লন্ডনের রয়েল বোটানিক গার্ডেন্সের ট্যাক্সোনমি বিভাগের সিনিয়র গবেষক মার্টিন চিক বলেন, এই গাছটিকে শনাক্ত করতে বা শ্রেণিভাগ করতে অস্বাভাবিক বেশি সময় নিয়েছে। তবে তিনি ওই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। একটি গাছকে শ্রেণিভাগ করতে সাধারণত ৫ থেকে ১৫ বছর সময় লাগে। সূত্র : সিএনএন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ