বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা : মাত্র কয়েকশ’ টাকা খরচ করে দেশীয় প্রযুক্তি দিয়ে মশা তাড়ানোর একটি ইলেকট্রিক যন্ত্র উদ্ভাবন করেছেন নওগাঁর যুবক এসএম ইব্রাহীম হোসেন রাজু। দীর্ঘ ৪ মাসের প্রচেষ্টায় তিনি সফলভাবে এই যন্ত্রটি উদ্ভাবন করেন। যন্ত্রটি থেকে একটা আল্টা-সাউন্ড উৎপন্ন হয়। যা মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর কোন প্রভাব থাকবে না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা চালানো সম্ভব। যন্ত্রটির নাম ‘রাজু মসকিউটো আল্ট্রা-রিপেলার মেশিন’। নওগাঁ শহরের দুবলহাটী রোডে হাট-নওগাঁ আলহাজ ইদ্রীস আলী ইলেকট্রিক এন্ড ওয়ার্কস নামে একটি প্রতিষ্ঠানে নিজস্ব তৈরি প্রযুক্তিতে ফেলনা জিনিসপত্র ব্যবহার করে যন্ত্রটি বানিয়েছেন। মশা তাড়ানোর যন্ত্রটি বাজারজাতের জন্য ঢাকা ডিপার্টমেন্ট অফ প্যাটেন্ট, ডিজাইন এন্ড ট্রেড মার্কস থেকে গত বছর ১৭ ডিসেম্বর রেজিস্ট্রেশন করেছেন।
মশা নিধনে প্রযুক্তিতে কতো কিছ ুনা তৈরি করা হচ্ছে তার ইয়োত্তা নেই। মশা নিধনে রাসায়নিক উপাদান দিয়ে তৈরি কয়েল, গুড নাইট, ইলেকট্রিক কয়েল ব্যবহার করা হচ্ছে। যে কয়েলই হোক না কেন সবই পরিবেশ এবং স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বলে মনে করেন তিনি। তবে পরিবেশ এবং স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয় এমন একটি যন্ত্র গত ৪ মাসের গবেষণায় তৈরি করেন এসএম ইব্রাহীম হোসেন রাজু। যন্ত্রটিতে বাজারে পাওয়া যায় এমন কয়েকটি ছোট স্বল্প মূল্যের প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়েছে। এছাড়া অন্য কোন ম্যাকানিজম উপাদান নেই। যন্ত্রটিতে মোবাইল ফোনের ব্যাটারি, পেন্সিল ও ঘড়ির রিচার্জেবল ব্যাটারি, একটি ছোট সার্কিট, শব্দ নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যান্ড পাইপ, ব্যাটারি চার্জের জন্য একটি চার্জার ব্যবহৃত হয়েছে। ঘরের মধ্যে ব্যবহারের জন্য যন্ত্রটিতে একটি সাড়ে ৯ ভোল্টের মটর এবং সাড়ে ৩ ভোল্টের ব্যাটারি ব্যবহৃত হয়েছে। আর বাইরের পরিবেশের জন্য সাড়ে ৯ ভোল্টের মটর এবং সাড়ে ৬ ভোল্টের ব্যাটারি ব্যবহৃত হয়েছে। বিদ্যুৎ ছাড়াই ব্যাটারির সাহায্যে প্রায় ৬/৮ ঘণ্টা চালানো সম্ভব।
একটি ঘরে যন্ত্রটি চালু করার পর ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর কাজ শুরু হয়। ঘর যত বড় হবে সময় তত বেশি লাগবেই। তবে একটা যন্ত্র দিয়েই মশা তাড়ানো সম্ভব। যন্ত্রটি ঘরের দরজা-জানালা খোলা বা বন্ধ সব অবস্থাতেই সমানভাবে কার্যকর। ‘রাজু মসকিউটো আল্ট্রা-রিপেলার মেশিন’টি ব্যবহার করে সুবিধা পাওয়া নওগাঁ শহরের একটি জয় টেলিকম অ্যান্ড সার্ভিস সেন্টারের মালিক ফারুক হোসেন জুয়েল, হাট-নওগাঁ মহল্লার প্রাক্তন ফুটবল খেলোয়ার আব্দুস ছাত্তার, একটি মোবাইল ফোন কোম্পানির সেলস্ ম্যানেজার হুমায়ন কবিরসহ অনেকে। ফারুক হোসেন জুয়েল জানান, চারজনের পরিবারের আগে প্রতিদিন বাড়িতে গড়ে ৭ থেকে ১০ টাকার কয়েল পুড়িয়ে খরচ হতো। ‘রাজু মসকিউটো রিপেলার মেশিন’ আবিষ্কারের পর রাজু তাকে দু’দিনের জন্য ব্যবহার করতে দেন। ঘরের মধ্যে ব্যবহার করে ওই দু’দিন তার কোন কয়েল জ্বালাতে হয়নি। কোন মশার কামড়ও খেতে হয়নি।
প্রাক্তন ফুটবল খেলোয়াড় আব্দুস ছাত্তার জানান, ঘরের মধ্যে মেশিনটি চালু করার ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর থেকে একটি মশাও দেখা যায়নি। মশারিও টাঙ্গাতে হয়নি। আব্দুস ছাত্তার, সেলস্ ম্যানেজার হুমায়ন কবিরসহ যন্ত্রটি ব্যবহারকারিরা মনে করেন, যন্ত্রটি শতভাগ মশা তাড়ানোর কাজ করছে।
প্রস্তুতকারী এসএম ইব্রাহীম হোসেন রাজু জানান, মশার শরীর পানি দিয়ে তৈরি। এই চিন্তা থেকেই এই যন্ত্রটি আবিষ্কার করা হয়েছে। এই যন্ত্রের মাধ্যমে আল্টা-সাউন্ড নামে শব্দ বা কম্পন (শোনা যাবে না) উৎপন্ন হবে। যন্ত্রটা ঘণ্টার পর ঘণ্টা চালু থাকলেও এর শব্দে মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর কোন প্রভাব থাকবে না। আর এই আল্টা-সাউন্ড নামে শব্দ বা কম্পনের মশার শরীরেও কম্পন তৈরি হবে। একটি নির্দিষ্ট জায়গা/এলাকা জুড়ে মশা না মরে পালিয়ে যাবে বা মশা থাকবে না। মশা তাড়ানোর জন্য যন্ত্রটিতে কোন প্রকার রাসায়নিক উপাদান বা ক্যামিকেল ব্যবহার করা হয়নি। যন্ত্রটি পরিবেশ দূষিত হওয়ার মতো কোন প্রকার দুর্গন্ধ ছড়ায় না।
তিনি আরো জানান, যন্ত্রটি কার্যকরী, বিভিন্ন আকারের, স্থানান্তরযোগ্য ও নিরাপদ। ঘরের বাইরে, গরুর গোয়ালে, বাগানে, খোলা জায়গায় ব্যবহার উপযোগী। স্বাভাবিকভাবে যন্ত্রটি বছরের পর বছর চলবে। তবে ব্যাটারির কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে গেলে এবং মটরের ত্রুটি হলে পরিবর্তন করতে হবে। প্রতিমাসে যন্ত্রটি একটি সাধারণ বৈদ্যুতিক বাল্বের চেয়েও কম বিদ্যুৎ খরচ হবে। বাজার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১শ’ টাকা থেকে ৫শ’ টাকা। এটি বাণিজ্যিকভাবে চালু করা সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বল্পমূল্যে বাজারজাত করা সম্ভব হবে। শহরের ময়লা আবর্জনা পরিষ্কারের জন্য এর আগে “বাড়ীর বুড়ি” নামে একটি যন্ত্র তৈরি করেন রাজু।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।