Inqilab Logo

বুধবার, ২৯ মে ২০২৪, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সমুদ্র রক্ষার প্রতিশ্রুতি দুর্বল

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০৩ এএম

জাতিসংঘ আবহাওয়া সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের এক ডজনের বেশি দেশ তাদের জলসীমার পরিবেশ সুরক্ষায় নেওয়া পদক্ষেপ আরো বাড়ানোর অঙ্গীকার করলেও তাদের এ প্রতিশ্রুতিতে সমুদ্রে চলমান ধ্বংসযজ্ঞ পাল্টে দেওয়ার আকাক্সক্ষা নেই বলে অভিযোগ পরিবেশকর্মীদের। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি প্রাক-শিল্পায়ন যুগের তাপমাত্রার চেয়ে সর্বোচ্চ দেড় ডিগ্রি উপরে রাখার লক্ষ্যকে ধরে রাখতে যুক্তরাজ্যের গ্লাসগোতে আবহাওয়া বিষয়ক সম্মেলনে (কপ২৬) মিলিত হওয়া বিশ্বনেতাদের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত যেসব প্রতিশ্রুতি এসেছে, সমুদ্র রক্ষার প্রতিশ্রুতি তার মধ্যে একটি। সম্মেলনে বিশ্বনেতারা যেসব সমঝোতায় পৌঁছেছেন তার মধ্যে ২০৩০ সালের মধ্যে বন বিনাশের অবসান এবং ২০৩০ সালের মধ্যে মিথেন গ্যাস নির্গমন ২০২০ সালের তুলনায় ৩০ শতাংশ কমানোর অঙ্গীকারও আছে। বিজ্ঞানী ও পরিবেশকর্মীরা আবহাওয়া পরিবর্তন ও সমুদ্রের মধ্যে সম্পর্কের বিষয়টিকে স্বীকৃতি দেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন কপ২৬ এ অংশ নেওয়া দেশগুলোর প্রতি। টেকসই সমুদ্র ব্যবস্থাপনা পৃথিবীর আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণে রাখার ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে বলে যুক্তি তাদের। মঙ্গলবার মার্কিন আবহাওয়া দূত জন কেরি ১৫তম দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ‘সমুদ্রসীমা রক্ষার অঙ্গীকারে’ স্বাক্ষরের ঘোষণা দেন। ইন্দোনেশিয়া, জাপান, কেনিয়া, চিলি ও নরওয়ের মতো সমুদ্রনির্ভর অর্থনীতির দেশগুলো আগেই এই অঙ্গীকারে স্বাক্ষর করেছিল। সমুদ্র রক্ষার এই প্রতিশ্রুতিতে সমুদ্রভিত্তিক নবায়নযোগ্য জ্বালানি, শিল্পকারখানার কার্বন নিঃসরণ হ্রাস ও গবেষণায় আরও বিনিয়োগের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এতে মাছ ধরা শিল্পের মতো সমুদ্রের সম্পদ শুষে নেওয়া বিভিন্ন খাতে সরকারগুলোর বার্ষিক বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি তুলে দেওয়ার উল্লেখ না থাকায় পরিবেশকর্মীদের উদ্বেগ কমছে না। পরিবেশ নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস্থা গ্রিনপিস এ প্রতিশ্রুতিকে ‘দুর্বল’ অ্যাখ্যা দিয়েছে। “আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে সামুদ্রিক অভয়ারণ্যের একটি নেটওয়ার্ক তৈরিতে পদক্ষেপ দেখতে চাই, যার মধ্যে আমাদের সমুদ্রের অন্তত ৩০ শতাংশ থাকবে। “আমরা চাই এমন এলাকা যেখান থেকে বাণিজ্যিকভাবে কিছু তোলা হবে না, যেখানে প্রকৃতি ও মাছের সংখ্যা পুনরুদ্ধার ও বাড়তে পারে,” বলেছেন গ্রিনপিস ইউকে’র লুইজা ক্যাসন। পৃথিবীর তিনভাগের মধ্যে দুইভাগই পানি; তাছাড়া সমুদ্র উষ্ণতা ও কার্বন ডাই অক্সাইড দুটোই শুষে নেয় এবং পরে তা গ্রহজুড়ে ছড়িয়ে দেয়। কিন্তু গ্রিনহাউস গ্যাসের ঘনত্ব সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছে যাওয়া এবং উদ্বেগজনক হারে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পরিস্থিতিকে যে জায়গায় নিয়ে গেছে সামুদ্রিক বাস্তুসংস্থান তার সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না। যুক্তরাষ্ট্রের ইএসআরআ ই-র প্রধান বিজ্ঞানী ও সমুদ্রবিজ্ঞানী ডন রাইট রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, টেকসই সমুদ্র ব্যবস্থাপনা নিয়ে পরিকল্পনা করার ক্ষেত্রে কপ-২৬ এ অংশ নেওয়া প্রতিনিধিদের জন্য আবহাওয়া পরিবর্তন ও সমুদ্রের মধ্যে সম্পর্ক বুঝতে পারা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। “সমুদ্রে মানুষের কর্মকাণ্ডের ফলে সৃষ্ট কার্বন নিঃসরণকে আমরা এখন একেবারেই গুরুত্ব দিচ্ছি না। যেগুলো সমুদ্রতলের শান্তি ভঙ্গ করছে সেই মাছ ধরার ট্রলার বহরের মতো কর্মকাণ্ডকে বিবেচনাতেই রাখছি না, । কার্বন নিঃসরণ ও দূষণের হিসাব করার সময় সমুদ্রকেও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে আমাদের। আমার আশা, কপ২৬ এই সমস্যাকে স্বীকার করে নেবে,” বলেছেন তিনি। রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ