বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সড়ক প্রশস্তকরণ ও সংস্কার কাজে ধীরগতির কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থেকে মুজিবনগর আঞ্চলিক মহাসড়কে যাতায়াতকারী মানুষের। যার ফলে এই মহাসড়কে চলাচলকারী জনসাধরণকে পোহাতে হচ্ছে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। যানবাহন চলাচলে দেখা দিচ্ছে নানা বিড়ম্বনা। প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এ ছাড়া মহাসড়কের বেহাল দশার কারণে কৃষি প্রধান এই এলাকার কৃষি-বাণিজ্যেও পড়েছে বিরূপ প্রভাব। তবে মহাসড়ক কর্তৃপক্ষ বলছেন, সংস্কারের কাজ মেয়াদের আগেই এই আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে বলে তারা জানিয়েছেন। মহাসড়কটির সংস্কার কাজ সম্পন্ন হলে অত্র এলাকা ও বাইরের এলাকার মানুষের যোগাযোগের ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হবে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থেকে মুজিবনগর আঞ্চলিক মহাসড়কটি যথাযথ উন্নতিকরণ প্রকল্পের অধীনে সড়কের দুই ধারে ৩ ফুট করে ৬ ফুট বর্ধিত করে দুই লেনের ১৮ ফুট চওড়া ২৩ কিলোমিটার পাকা সড়ক নির্মাণ কাজের জন্য প্রায় ১৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কাজটি পায় জহুরুল অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সড়কটির নির্মাণ কাজের সময়সীমা ধরা হয়েছে ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
সরেজমিন দেখা গেছে, এই মহাসড়কে চলাচলকারীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে আসছে। এখনও উন্নয়নের জন্য চলছে খোঁড়াখুঁড়ি ও কালভার্ট নির্মাণের কাজ। কিন্তু এসব সংস্কার কাজের গতি এতটাই মন্থর যে আগে যে সমস্যা ছিল উন্নয়ন কাজের জন্য আগের তুলনায় শতগুণ বেশি সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে। অনেকে বলেন, সড়কের সংস্কার কাজের নামে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। অথচ এই সড়কটি দিয়ে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতিবিজড়িত কার্পাসডাঙ্গা আটচালা ঘর, মুক্তিযুদ্ধের সম্মুখযুদ্ধে বীর আট শহীদের স্মৃতিসৌধ ও মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কমপ্লেক্স যেতে হয় এই সড়ক দিয়ে। স্থানীয়দের মতো দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত পর্যটকরা এই সড়কে দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। এ ছাড়া একই সাথে সড়কের রুদ্রনগর গলাইদড়ি ঘাটের সেতু ও ১১টি কালভার্টের কাজেও রয়েছে মন্থর গতি ও অব্যবস্থাপনা। যা জনসাধারণের দুর্ভোগকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। অপর দিকে সড়কের চুয়াডাঙ্গা জেলার শেষ সীমানা আটকবর থেকে কার্পাসডাঙ্গা পর্যন্ত সড়কের দুই ধারে মাটিভরাট ও বর্ধিতকরণ কাজের জন্য আরো বিপাকে পড়তে হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়কটি সংস্কারের ধীরগতির কারণে দুর্ভোগ বাড়ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের চরম গাফিলতি এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তাদের উদাসীনতার জন্যই এমনটি হচ্ছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী সুমন জানান, প্রশস্তকরণ ও সংস্কার কাজের নামে দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি বেহাল অবস্থা করে রাখা হয়েছে।
দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান ভুট্টু জানান, দর্শনা-মুজিবনগর সড়কের সংস্কার কাজ এতটাই মন্থরগতিতে চলছে যে জনসাধরণ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। সড়কের বেহাল দশার কারণে এলাকার কৃষিবাণিজ্যেও চরম প্রভাব পড়েছে। এই এলাকায় প্রচুর ধান, পাট ও সবজির আবাদ হয়, যার ৬০ ভাগই যায় এলাকার বাইরের বাজারে। কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কের সমস্যার কারণে বাইরের ফড়িয়া বা ব্যবসায়ীরা এই এলাকায় হাটেবাজারে আসতে পারেন না। ক্রেতা-বিক্রেতা আসতে না পারায় এলাকার ফসল বিক্রিতে দেখা দিয়েছে নানা সমস্যা। এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জহুরুল অ্যান্ড কনস্ট্রাকশনের সংস্কার কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমরান হোসেন বলেন, করোনা এবং মালামাল সঙ্কটের কারণে কাজের গতি কিছুটা কম ছিল। দ্রুত কাজ সম্পন্ন করতে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
এই বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, নিয়মানুযায়ী কাজ চলছে। সড়কটির নির্মাণ কাজের সময়সীমা আগামী ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। আমরা আশা করছি, কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে কাজটি যথাসময় সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।