Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এ ধরনের যৌথ প্রযোজনার সিনেমার কি প্রয়োজন?

প্রকাশের সময় : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : যৌথ প্রযোজনার নামে যেসব সিনেমা নির্মিত হচ্ছে, সেগুলো আদতে যৌথ প্রযোজনার কিনা এ নিয়ে এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে যখন দেখা যায়, কলকাতার প্রযোজকরা যৌথ প্রযোজনার নিয়ম-নীতি তোয়াক্কা করেন না, তখন যৌথ প্রযোজনার বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। এ প্রবণতা শুরু হয় গত বছর মুক্তিপ্রাপ্ত ব্ল্যাক সিনেমাটিকে কেন্দ্র করে। বাংলাদেশের প্রযোজক কামাল মোহাম্মদ কিবরিয়া লিপু ও পশ্চিমবঙ্গের দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়ার প্রযোজক রানা সরকারের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত হয় ব্ল্যাক। কথা ছিল দুই দেশে একই দিনে সিনেমাটি মুক্তি। তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল গত বছরের ২৭ নভেম্বর। সেই অনুয়ায়ী দুই দেশেই মুক্তির প্রস্তুতি চলছিল। হঠাৎ করেই বাংলাদেশের সেন্সরবোর্ড সিনেমাটি যথাযথ যৌথ-প্রযোজনার কিনা তা খতিয়ে দেখতে গিয়ে আটকে দেয়। এর ফলে বাংলাদেশি প্রযোজক লিপু কলকাতার রানা সরকারের কাছে অনুরোধ করেন সিনেমাটির মুক্তির তারিখ পিছিয়ে দিতে। কিন্তু লিপুর অনুরোধ রাখেননি রানা সরকার। লিপুকে না জানিয়েই গত ২৭ নভেম্বর শুক্রবার কলকাতায় সিনেমাটি মুক্তি দেয়া হয়। তড়িঘড়ি করে লিপু কলকাতায় গিয়ে সিনেমাটির প্রদর্শনে স্থগিতাদেশ চেয়ে কলকাতার হাইকোর্টে মামলা করেন। বিচারপতি সৌমেন সেনের বেঞ্চ বিচার বিশ্লেষণ করে আমলে নেয়নি লিপুর আরজি। কারণ কলকাতার প্রায় ১০০টি হলে সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ায় লিপুর আরজি গ্রহণ করা সম্ভব ছিল না। তবে যৌথ-নীতিমালা চুক্তিভঙ্গের দায়ে ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে বলে জানায় লিপুকে। এ কারণে কলকাতার হাইকোর্ট রানা সরকারের সংস্থাকে টিকেট বিক্রির টাকা ব্যাংকে রাখার নির্দেশ দিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত টিকিট বিক্রির টাকা লিপু পেয়েছেন কিনা তা আর জানা যায়নি। এ সিনেমার ঘটনার পর জাজ মাল্টিমিডিয়া প্রযোজিত শুটিং চলতি হিরো ৪২০ সিনেমাটিকে নিয়ে যৌথ প্রযোজনার নীতিমালা উপেক্ষা করার অভিযোগ উঠেছে। গত বছরের ২০ নভেম্বর থেকে কলকাতায় শুরু হয় সিনেমাটির শুটিং। যৌথভাবে পরিচালনা করছেন সৈকত নাসির ও সুজিত ম-ল। এতে অভিনয় করছেন নুসরাত ফারিয়া, ওম, রিয়া সেনসহ আরও অনেকে। দেখা যাচ্ছে, সিনেমাটির কলকাতার প্রচার-প্রচারণায় কোথাও বাংলাদেশি প্রযোজক-পরিচালকদের নাম দেয়া হচ্ছে না। সেখানে সিনেমাটি কলকাতার হিসেবেই পরিচিতি লাভ করছে। এমনকি বাংলাদেশি শিল্পী নুসরাত ফারিয়ার নামও ব্যবহার করা হচ্ছে না। এ বিষয়ে সৈকত নাসির বলেন, জাজ ও এসকে মুভিজ সমান সমান টাকা খরচ করেই ছবিটি নির্মাণ করছে। বাংলাদেশে প্রচার-প্রচারণায় দুই দেশের নাম থাকলেও কলকাতা আমাদের বঞ্চিত করছে। এখানে কোথাও আমাদের স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে না। জাজ মাল্টিমিডিয়ার সঙ্গে এ ধরনের ঘটনা এবারই প্রথম নয়, এসকে মুভিজের সঙ্গে জাজের রোমিও বনাম জুলিয়েট, আশিকী সিনেমার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। প্রচার-প্রচারণায় কলকাতায় বাংলাদেশি প্রযোজক-পরিচালকের নাম ব্যবহার করা হয়নি। এ ব্যাপারে জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আব্দুল আজিজ বলেন, আমরা বাংলাদেশি সিনেমা এবং শিল্পীদের কলকাতার বাজারে পরিচিত করে তুলতে চাই। কলকাতার বাজারে আমরা প্রবেশ করতে চাই। এখন তারা যদি আমাদের নাম প্রচার না করে তাহলে আমরাও তাদের নাম প্রচার করবো না। এরপর থেকে আমরাও তাই করবো। প্রশ্ন হচ্ছে, এ ধরনের পাল্টাপাল্টি ব্যবস্থা গ্রহণের মধ্য দিয়ে কি কোনো সুস্থ সংস্কৃতি গড়ে তোলা সম্ভব? এমনকি সুসম্পর্ক গড়া সম্ভব? তার চেয়ে কি এ ধরনের যৌথ প্রযোজনা বন্ধ করে দেয়া উচিত নয়? বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের প্রযোজকদের চিন্তা-ভাবনা করা প্রয়োজন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: এ ধরনের যৌথ প্রযোজনার সিনেমার কি প্রয়োজন?
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ