বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হবে না এমন কোন নির্দেশনা ইসি থেকে পায়নি কুমিল্লা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। তবে এ বছরের ২০ ডিসেম্বর কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হওয়ার যে ঘোষণা ইসি থেকে দেয়া হয়েছিল সেই অনুযায়ী জেলা নির্বাচন অফিস কাজ করে যাচ্ছে। অন্যদিকে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন এলাকা সম্প্রসারণ করার প্রস্তাব স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর পর এটি বাস্তবায়নের বিষয়টি অনেকটা সময়নির্ভর বলে মন্তব্য করেছেন সিটি কর্পোরেশনের একজন নির্বাহী প্রকৌশলী। এদিকে আসন্ন নির্বাচনে সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের অনেকেই বলছেন সিটি নির্বাচন বন্ধ করতে একটি মহল ঘোলাপানিতে মাছ শিকার করতে চাইছে। তারা সেই ধনু মিয়াদের দিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহবুবুর রহমান ও নগরীর বাইরের এলাকা শুভপুরের একজন সাধারণ নাগরিক হাবিব মিয়া সম্প্রতি মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী সিটি কর্পোরেশনের পার্শ্ববর্তী ৯টি ইউনিয়ন পরিষদের ১৬টি ওয়ার্ডের প্রায় ৯০টি গ্রাম সিটি কর্পোরেশনে অন্তর্ভুক্তির জন্য হাইকোর্টে রীট আবেদন করেন। ওই রীটের প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী মো. এজহারুল হক আকন্দ আগামী তিন মাসের মধ্যে মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী সিটি কর্পোরেশন এলাকা সম্প্রসারণ করে নির্বাচন করার জন্য নির্দেশ দেন। একই সাথে মাস্টারপ্ল্যানে উল্লেখিত এলাকাসমূহ কেন সিটি কর্পোরেশনে অন্তর্ভুক্ত করা হবে না তার কারণ দর্শানোর জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, কুমিল্লার জেলা প্রশাসক, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, সহকারী পরিচালক স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও কুমিল্লা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রাসেদুল ইসলাম বলেন, ‘এ সংক্রান্ত কিছু হাতে পাইনি। আর নির্বাচন হচ্ছে না এমন বিষয়েও কোন নির্দেশনা হাতে আসেনি। বরং ইতোপূর্বে নির্বাচন কমিশন থেকে কুমিল্লা ও নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাব্য যে তারিখের কথা বলা হয়েছে, এ বছরের সেই ২০ ডিসেম্বরকে সামনে রেখে আমরা নির্বাচন সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ এগিয়ে নিচ্ছি।’
রীট প্রসঙ্গে কুমিল্লা জেলা পিপি অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান লিটন বলেন, ‘বিষয়টির ব্যাপারে মহামান্য হাইকোর্ট থেকে নির্দেশনা এসেছে। তাই এটি নিয়ে কোন মন্তব্য করা যাবে না। তবে রীটে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে দায়িত্বে নিয়োজিত যাদেরকে বিবাদী করা হয়েছে তারাই এ বিষয়ে যথাযথ যুক্তি উপস্থাপন করে মহামান্য হাইকোর্টেই বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে পারেন।’
এদিকে গত জুন মাসে নগর ভবনে পরিষদের মাসিক সভায় কুমিল্লা সিটির বাইরের প্রায় ৯০টি এলাকাকে সিটি কর্পোরেশনের আওতায় আনার জন্য প্রস্তাব করা হয়। গত সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নের জন্য এলাকা সম্প্রসারণের ওই প্রস্তাবটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এ প্রসঙ্গে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ নুরুল্লাহ বলেন, ‘মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী সিটি কর্পোরেশনের সীমানা বাড়ানোর প্রস্তাবটি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এটি যাচাই-বাছাই হবে। ওইসব ইউনিয়নের লোকজনের মতামত চাওয়া হবে- তারা সিটিতে আসতে চায় কিনা। আবার ইউপি চেয়ারম্যানদের রাজি থাকার বিষয়টিও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সবমিলে প্রক্রিয়াটি অনেক সময়নির্ভর।’
গত সপ্তাহে নির্বাচন কমিশন কুমিল্লা ও নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাব্য তারিখ আগামী ২০ ডিসেম্বর ঘোষণা করেন। তারপর মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টে রীট করে দুই ব্যক্তি। রীটের প্রেক্ষিতে আদেশ হয়, আগামী তিন মাসের মধ্যে মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী এলাকা সম্প্রসারণ করে নির্বাচন করতে হবে। হাইকোর্টের এমন আদেশ ঘিরে ইতোমধ্যে নগর জুড়ে যে নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে তাতে ভাটা পড়েনি ঠিকই, কিন্তু কুমিল্লা সিটি নির্বাচন আইনের জালে আটকা পড়ছে কিনা এ নিয়ে কিছুটা সংশয়ে রয়েছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
নির্বাচন নিয়ে সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, নগরবাসী নির্বাচন চায়। আসলে যারা নির্বাচনকে ভয় পায় তারাই নির্বাচন বন্ধের কৌশল আঁটছে। নগরবাসী নির্বাচনের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। নির্বাচন স্থগিতের চেষ্টা মানেই কুমিল্লার উন্নয়ন স্থগিতের অপচেষ্টা। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে সিটির এলাকা সম্প্রসারণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এটা নিয়মের গতিতেই হবে। নির্বাচনের পর এলাকা সম্প্রসারণের প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে কী ওইসব এলাকার মানুষ সিটির সুবিধা পাবে না? নাকি ভোটার বা সিটি নির্বাচনের প্রার্থী হওয়ার সুযোগ চাইছেন? মূলত আসন্ন সিটি নির্বাচন নিয়ে একটি মহল ঘোলাপানিতে মাছ শিকার করতে চাইছে। মামলা দিয়ে নির্বাচন বন্ধের পাঁয়তারা শুরু করেছে। অতীতেও ধনু মিয়াদের দিয়ে মামলা করা হয়েছিল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।