পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রামে স্বজনের হাতে খুনের ঘটনা বাড়ছে। প্রিয়জনের রক্তে রঞ্জিত হচ্ছে স্বজনের হাত। স্বার্থের দ্বদ্বে সৃষ্টি হিংসা-বিদ্বেষ রূপ নিচ্ছে ভয়ঙ্কর হিংস্রতায়। পরিবারের প্রিয় মানুষটি হয়ে উঠছে নিষ্ঠুর ঘাতক। দাম্পত্য জীবনের বিরোধে আত্মঘাতী হচ্ছেন স্বামী-স্ত্রী। কলহের জেরে প্রাণপ্রিয় সন্তানকে খুন করছেন মা-বাবা। চলতি মাসেই এ ধরনের অন্তত ১০টি ঘটনা ঘটেছে।
পারিবারিক বন্ধন শিথিল, মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং হতাশার কারণে কলহ-বিরোধ এবং সেইসাথে খুনোখুনি বাড়ছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তারা। পরকীয়া, মাদকাসক্তি, পারিবারিক বিরোধ এবং দারিদ্র্যতা থেকেও ঘটছে এমন নিষ্ঠুরতা। প্রয়োজনে প্রিয়জনের এমন ঘাতক হয়ে উঠার ঘটনায় উদ্বিগ্ন পুলিশ ও সমাজবিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, ধর্মীয় শিক্ষার অভাব এবং সেইসাথে তরুণদের সামনে কোন স্বপ্ন না থাকায় সমাজে অস্থিরতা বাড়ছে।
সর্বশেষ বুধবার রাতে সীতাকুন্ডের পৌর সদরে প্রেমতলায় স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যার পর অভি ধর নামের এক যুবক আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। নির্মম খুনের শিকার জ্যোতি সূত্রধর ওই এলাকার রামচন্দ্র সূত্রধরের মেয়ে। নিজের পেটে ছুরি মেরে আহত অভি ধরকে মুমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জ্যোতি সীতাকুন্ড ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন। অভি নগরীর একটি স্বর্ণের দোকানের ব্যবস্থাপক। পুলিশ জানিয়েছে, দুই বছর আগে জ্যোতি সূত্রধরকে ভালোবেসে বিয়ে করেন অভি। শুরুতে এ বিয়ে উভয় পরিবার মেনে নেয়নি। এখন অভির পরিবার বউ ঘরে তুলে নিতে রাজি হলেও যৌতুক দাবি করে বসে। এ নিয়ে বিরোধের জের ধরে স্ত্রীকে খুনের পর অভি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে জানায় পুলিশ।
দাম্পত্য কলহের জেরে সন্তান খুন করে আত্মহত্যা করার ঘটনাও ঘটছে। গত ১৯ অক্টোবর সাতকানিয়ায় বিষ খাইয়ে শিশু পুত্র মো. সানিকে হত্যার পর আত্মহত্যা করেছেন প্রবাস ফেরত নুরুল কবির। খবর পেয়ে বাড়ির পুকুর পাড় থেকে বাবা-ছেলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, নুরুল কবির বিদেশে থাকার সুযোগে স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। দেশে ফিরে এসে এ নিয়ে স্ত্রীর সাথে তার বিরোধ শুরু হয়। এর জের ধরে এ কান্ড ঘটান নুরুল কবির।
এর আগে ১৫ অক্টোবর নগরীর মুরাদপুরের মোহাম্মদপুর ইসমাইল কলোনির একটি ফ্ল্যাটে দুই সন্তান সাত বছরের জান্নাতুন আইনুন ও আড়াই বছরের চাঁদ বাবু ওরফে শানকে শ্বাসরোধে খুনের পর ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেন মা সুমিতা খাতুন। ঘটনার পর আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগে সুমিতা খাতুনের স্বামী সোহেল রানাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, স্বামী পরকীয়ায় লিপ্ত এমন সন্দেহ থেকে নিজের দুই সন্তানকে খুনের পর আত্মহত্যা করেন সুমিতা।
দাম্পত্য কলহের জেরে ছয় মাসের শিশু সন্তান বিক্রির ঘটনাও ঘটেছে। এ ঘটনায় শিশুর বাবা আব্বাস মিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, আব্বাস ও তার স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া চলছিল। এর জের ধরে স্ত্রীর অজান্তে শিশু সন্তানকে দোহাজারী এলাকার এক দম্পতির কাছে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন আব্বাস। শিশুটির মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে শিশুটি উদ্ধার করে।
স্ত্রীকে তালাবন্দি করে রেখে দুই মাসের শিশু সন্তানকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে গত ১১ অক্টোবর আদালতে মামলা করেন নুরজাহান আক্তার কলি নামে এক গৃহবধূ। গত ৬ অক্টোবর নবজাতক বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগে নানিসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। স্বামী পরিত্যক্ত কন্যার অজান্তেই তার নবজাতক শিশু পুত্রকে ৫৭ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন মনোয়ারা বেগম। পরে মেয়ের মামলায় পুলিশ মনোয়ারা বেগমসহ তিনজনকে গ্রেফতার এবং শিশুটিকে উদ্ধার করে।
সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে জন্মদাতা পিতা-মাতাকেও খুন করছে সন্তান। গত ১৪ অক্টোবর মীরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের মধ্যম সোনাপাহাড় এলাকায় পিতা-মাতা ও ভাইকে গলাকেটে খুন করেন পরিবারের বড় ছেলে ছাদেক হোসেন সাদ্দাম। আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে সাদ্দাম স্বীকার করেন ছোট ভাইয়ের নামে জমি লিখে দেয়ায় বাবা-মাকে খুনের সিদ্ধান্ত নেন। ১৫ দিন আগে নগরীর একটি দোকান থেকে ছুরি কিনে নিয়ে যান। গভীর রাতে মা-বাবার শয়নকক্ষে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থায় প্রথমে বাবা মো. মোস্তফা সওদাগর, এরপর মা জোছনা আরা বেগমকে গলা কেটে হত্যা করেন। তাদের গোঁগানিতে পাশের কক্ষ থেকে ছুটে আসা মেজো ভাই আহমদ হোসেনকে একই কায়দায় হত্যা করেন সাদ্দাম। একাই তিনজনকে খুনের দায় স্বীকার করেন আদালতে।
গত ২০ অক্টোবর বাঁশখালী উপজেলার দক্ষিণ জলদি মনছুরিয়া বাজার এলাকায় সীমানা বিরোধের জেরে আবদুল খালেক ও সুলতান মাহমুদ টিপু নামে দুইজনকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, খুনের শিকার দুইজন আসামিদের চাচাতো ভাই। রক্তের সম্পর্কের পরও সীমানা বিরোধে দুইজনকে খুন করেন স্বজনেরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।