Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

চাকরি হারালেন শিক্ষিকা

পাকিস্তানের জয়ে উচ্ছ্বাসে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা ভারতে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০৪ এএম

টি২০ বিশ্বকাপ ক্রিকেট ম্যাচে পাকিস্তানের জয়ে উল্লাস করে ভারতের রাজস্থানে একটি বেসরকারি স্কুলের এক শিক্ষিকা চাকরিচ্যুত হয়েছেন। ইন্ডিয়া টুডে’কে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডন। এতে বলা হয়, ওই শিক্ষিকা একজন মুসলিম। তার নাম নাফিসা আত্তারি। রাজস্থানের উদয়পুরে অবস্থিত নিরজা মোদি স্কুল থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। রোববার ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে পাকিস্তান বিজয়ী হওয়ায় তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন। এতে পাকিস্তানের বিস্ময়কর বিজয় নিয়ে তিনি আনন্দ প্রকাশ করেন। তিনি হোয়াটসঅ্যাপে লিখেছেন ‘জিত গেইইই...’ বা আমরা জিতেছি। এ জন্য স্কুল প্রশাসনের বাঁকা নজরে পড়ে যান তিনি। এদিকে, বিশ্বকাপে ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের একটি জয়ে বদলে গেছে অনেক কিছু। তবে এই জয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করায় মামলার আসামি হয়েছেন শত শত মানুষ। জানা যায়, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের জয় উদযাপন করায় ভারতশাসিত কাশ্মীরের দুটি মেডিক্যাল কলেজের শত শত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হয়েছে। ভারতের কঠোর সন্ত্রাসবিরোধী একটি আইনে কাশ্মীর পুলিশ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে এ মামলা করেছে বলে মঙ্গলবার খবর দিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা। এ ছাড়া এনডিটিভি জানিয়েছে, রাজস্থান প্রদেশের বেসরকারি একটি স্কুলের এক নারী শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে। রোববার ওই ম্যাচের পর সামাজিকমাধ্যমে পাকিস্তানের জয়ের সমর্থনে স্ট্যাটাস দেওয়ায় তাকে বরখাস্ত করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কাশ্মীরের একজন মানবাধিকার আইনজীবী আল জাজিরাকে বলেছেন, ক্রিকেট ম্যাচে জয়ের পর পাকিস্তান জিন্দাবাদ (পাকিস্তান দীর্ঘজীবী হোক) সেøাগান দেওয়া বেআইনি নয়। আদালত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে এ মামলা শেষ পর্যন্ত ছুড়ে ফেলবেন। কিন্তু ইউএপিএ আইনের অধীনে মামলায় জামিন পাওয়া কার্যত অসম্ভব। ম্যাচ হেরে যাওয়ায় দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় পাঞ্জাবে কাশ্মীরি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান ভারতীয় ক্ষুব্ধ সমর্থকরা। এমনকি ভারতীয় ক্রিকেট দলের মুসলিম খেলোয়াড় মোহাম্মদ শামিকে নিয়ে অনলাইনে নানা ধরনের বাজে মন্তব্য করা হয়। হিমালয় উপত্যকার কাশ্মীরে ভারতবিরোধী মনোভাব গভীরভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। যুগের পর যুগ ধরে ব্যাপক বিতর্কিত এই ভূখণ্ডকে প্রতিবেশী দুই দেশই নিজেদের বলে দাবি করে। যদিও ভারত ও পাকিস্তান পৃথক দুই কাশ্মীরকে শাসন করে আসছে। ভারত-অধিকৃত কাশ্মীরে ১৯৯০-এর দশকে ভারতীয় শাসনের বিরুদ্ধে জনপ্রিয় আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। সেই সময় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এই অঞ্চলের বাসিন্দারা পাকিস্তানের সাথে একীভূত অথবা স্বাধীন কাশ্মীরের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। এমন দৃশ্যপটে ভারত-পাকিস্তানের যে কোনো ধরনের ক্রিকেট ম্যাচ ঘিরে কাশ্মীর উপত্যকায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। সেখানকার বাসিন্দারা প্রকাশ্যে পাকিস্তানের প্রতি সমর্থন ঘোষণা করে রাজনৈতিক বিবৃতিও দেন। ডন, আল-জাজিরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ