নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
‘জবাবটা আমরা মাঠেই দেবো’
এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরুর ঠিক আগ মুহূর্তে নিরাপত্তার ঠুনকো অজুহাতে পাকিস্তান সফর বাতিল করে এসেছিল নিউজিল্যান্ড। এ নিয়ে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) প্রেসিডেন্ট রমিজ রাজা বলেছিলেন কথাটি। সেই কথা মাঠে প্রমাণ করে দেখালেন দেশটির ক্রিকেটাররা। পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ম্যাচে কিউইদের ৫ উইকেটে হারিয়েছে পাকিস্তান। টস হেরে নিউজিল্যান্ডের ৮ উইকেটে করা ১৩৪ রান ৮ বল আগেই পেরিয়ে যায় বাবর আজমের দল। টানা দুই জয়ে সেমির পথে এক পা দিয়ে রাখল ইমরান খানের দেশটি।
ম্যাচের ফল সহজ মনে হলেও সুপার টুয়েলভের ম্যাচটি কিন্তু হয়েছে উত্তেজনায় ঠাঁসা। ম্যাচের আগেই সাবেক পাকিস্তানি গতি তারকা শোয়েব আখতার শারজার গ্যালারিতে থাকা দর্শকদের উদ্দেশ্য করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখেন, ‘খুব বেশি চেঁচামেচি কিংবা উল্লাস করবেন না দয়া করে। কারণ নিরাপত্তা অজুহাতে ম্যাচ বাতিলের আবদার করতে না পারলে তখন নিউজিল্যান্ড ‘শব্দদূষণ’কে বাহানা বানাতে পারে!’ ম্যাচ চলাকালীনও থেমে ছিলেন না রাওয়ালপিন্ডি একপ্রেসখ্যাত শোয়েব। ফেসবুকে একের পর এক পোস্ট দিচ্ছিলেন কিউইদের কটাক্ষ করে। শোয়েবসহ পুরো পাকিস্তানকে হতাশ করেনি মালিক-হাফিজরা।
তবে ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলের ম্যাচটি এক মুহূর্তে অনেকটাই ঝুঁকে গিয়েছিল কিউইদের দিকে। ১৫ ওভারে ৫ উইকেট খুঁইয়ে বাবর আজমের দল করেছিল ৮৭ রান। তখন কাণ্ডারির ভূমিকায় অবতীর্ণ হন আসিফ আলি। তার সঙ্গে বুড়ে হাড়ে ভেল্কি দেখানো শোয়েব মালিকও ছিলেন ক্রিজে। আসিফের ১২ বলে ২৭ ও মালিকের ২০ বলে ২৬ রানের ইনিংসটি ছিটকে ফেলে কেন উইলিয়ামসনের দলকে। আগের ম্যাচেই বিশ্বকাপে প্রথম ভারতবধের পর নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে জয়ের ধারায় ২০০৯ আসরের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
যদিও আগের ম্যাচেই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে গুড়িয়ে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থাকা পাকিস্তানও ছিল না স্বস্তিতে। মামুলি ১৩৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে কিউই বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে শুরু থেকেই চাপে ছিল পাকিস্তান। ২৮ রানেই এদিন ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। বাবর আজম ফেরার পর তিনে আসা ফখর জামান জামান ১১ রানে আউট হওয়ার আগে ১৭ বল খেলে যেন আরও ক্ষতি করে দিয়ে গেলেন দলের। প্রথম বলে ছক্কা হাঁকানো হাফিজও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। পাকিস্তানের বড় ভরসা হয়ে থাকা মোহাম্মদ রিজওয়ান দলীয় ৬৯ রানে ফিরে গেলে চাপে পড়ে পাকিস্তান। ৮৭ রানে ইমাদ ওয়াসিম সুইচ হিট করতে গিয়ে বোল্টের বলে এলবিডিব্লু হলে ম্যাচের ভাগ্য হেলে পড়ে নিউজিল্যান্ডের দিকে। তখনই ত্রাতার ভূমিকায় হাজির আসিফ। টিম সাউদির ১৭ তম ওভারে পর পর দুই ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচের ছবি বদলে দিলেন এই ব্যাটার। শেষ দিকে রান রেট যখন বাড়ছিল তখনও পাকিস্তানকে পথ দেখান এই আসিফ। শেষ ১৮ বলে পাকিস্তানের জয়ের জন্য ১৮ বলে ২৪ রানে সমীকরণ নামিয়ে আনেন তিনিই। শেশদিকে মাথায় বলের আঘাত পেয়ে কনকাশনের শঙ্কা জাগলেও সেই ধাক্কা সামলে মালিককে সঙ্গে নিয়ে মাঠ ছাড়েন দলকে জিতিয়েই।
এর আগে টস জিতে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান। ভারতের বিপক্ষে আগুন ঝরানো শাহীন আফ্রিদি প্রথম ওভারে দেন মেডেন। তবে শুরুর ব্রেক থ্রু অবশ্য এনে দিয়েছেন হারিস রউফ। ভয়ংকর হয়ে ওঠার আগেই বোল্ড করেন মার্টিন গাপটিলকে (১৭)।
আরেক ওপেনার ড্যারিল মিচেলও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ইমাদ ওয়াসিমকে ছক্কা মেরে পরের বলেই ফখর জামানের হাতে মিড অনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মিচেল (২৭)। পরের ওভারে বোলিংয়ে এসেই জিমি নিশামকে ওই একই জায়গায় ফখরের হাতে ক্যাচ বানান মোহাম্মদ হাফিজ। ৫৬ রানের মধ্যে তিন টপ অর্ডারকে হারিয়ে কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়ে কিউইরা।
শেষ দিকে দ্রুত রান তুলতে গিয়ে ফিরে যান কনওয়ে (২৭) আর ফিলিপসও (১৩)। দুইজনই রউফকে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন। ৪ ওভারে ২১ রান দিয়ে ১ উইকেট নেওয়া শাহীনও কিউইদের অল্পের মধ্যে বেঁধে রাখতে বড় অবদান রেখেছেন। উইলিয়ামসনের দলকে অল্পে বাঁধতে ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ২২ রানে ৪ উইকেট নেওয়া রউফের হাতেই উঠেছে ম্যাচসেরার পুরস্কার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।